করোনা মহামারির মধ্যে গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত মোট সাত কোটি মানুষকে মানবিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস এবং ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) ৫০ বছর পদার্পণ উদযাপনের জন্য এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, করোনাকালে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে আজ পর্যন্ত সাত কোটি লোককে তালিকা করে মানবিক সহায়তা দিয়েছে। সারাদেশে একটি মানুষও খাদ্য কষ্ট পায়নি।
তিনি বলেন, এমনকি যারা চাইতে পারে না তাদের জন্যও ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা ৩৩৩ নম্বর চালু করি। এই নম্বরে ফোন করলেই খাদ্য সহায়তা তাদের বাড়িতে পৌঁছে গেছে। এমনকি ছোট্ট শিশুদের জন্য দুধ পৌঁছে গেছে। আমরা ১৮ লাখেরও বেশি সেবা দিয়েছি এই ৩৩৩-এর মাধ্যমে। এখন পর্যন্ত ৩৩৩ এ ফোন করে খাদ্য সহায়তার বিষয়টি আমরা চালু রেখেছি।
ইতোমধ্যে দুই লাখ পাকা ঘর ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ৫০ হাজার ঘর তুলে দেবেন। প্রধানমন্ত্রী তার কার্যালয়ের সহযোগিতায় ৮ লাখ ৮৮ হাজার ৩৩টি পরিবারের তালিকা করেছেন। এদের সবাইকে দুর্যোগ সহনীয় পাকা ঘর দেওয়া হবে ক্রমান্বয়ে।
তিনি আরও বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সঠিক নিয়ন্ত্রণ ও দুর্যোগে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার জন্য আমরা ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (এনইওসি) করার উদ্যোগ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রধানমন্ত্রী শি জিনপিংয়ের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের তেজগাঁওয়ে এক একর জায়গা বরাদ্দ দিয়েছেন। সেখানে আমরা এনইওসিটি প্রতিষ্ঠা করব।
এনামুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবিলায় রোল মডেল হয়েছে, কারণ হলো আমরা একসঙ্গে সরকার, সব রাষ্ট্রযন্ত্র, সাধারণ মানুষ ও প্রায় ৪২ লাখ স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেছি। পৃথিবীর অনেক দেশ আছে যাদের ৪২ লাখ জনসংখ্যা নেই।
২ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জে নৌবাহিনী পরিচালিত ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড থেকে আটটি উদ্ধারকারী মাল্টিপারপাস রেসকিউ বোট গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ৩০টি বোট হস্তান্তর হবে, আর জুন মাসের মধ্যে ২২টি।তিনি বলেন, ইতোমধ্যে যেগুলো (উদ্ধারকারী নৌযান) আমরা পেয়েছি বন্যা উপদ্রুত এলাকায় পাঠিয়ে দিয়েছি। এবারের বন্যায় সেগুলো কাজ করেছে। পরবর্তী সময়ে আমরা বন্যা উপদ্রুত প্রত্যেকটি জেলায় একটি করে মাল্টিপারপাস রেসকিউ বোট দেব। উদ্ধারকারী জাহাজগুলো প্রতিবন্ধীবান্ধব।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব।