চট্টগ্রামের দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া,পটিয়া, বোয়ালখালী ও চন্দনাইশের বিভিন্ন পাহাড়ে তান্ডব চালানো ৩ সন্ত্রাসি গ্রুপের খোঁজে অভিযান চালিয়েছে র্যাব ও পুলিশ। চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার(পদোন্নতি প্রাপ্ত অতিরিক্ত মহা পুলিশ পরিদর্শক এসএম রশিদুল হক,পিপিএম সেবা স্যারের নির্দেশনায় এ অভিযান চালানো হয়।গত শুক্রবার (২৪ জুন) সকালে র্যাব ও পুলিশ উপজেলার সরফভাটা, শিলক,কোদালা হয়ে গহীন পাহাড়ে এ অভিযান চালান। কিন্তু সন্ত্রাসি গ্রুপগুলোকে খুঁজে পায়নি।অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম এন্ড অপস) কবির আহমদ,চট্টগ্রাম রাঙ্গুনিয়া সার্কেরের সিনিয়ার সহকারী পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন,চট্টগ্রাম ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানী-০৩,ব্যাব-০৭ এর সহকারী পরিচালক জিন্নাতুল ইসলাম ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওবায়দুল ইসলাম।
এ সময় তারা সন্ত্রাসীদের খোঁজে গহীন পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালালেও তাদের আস্তানা খুঁজে পায়নি।উল্লেখ্য, রাঙ্গুনিয়া,পটিয়া, বোয়ালখালী, চন্দনাইশের পাহাড়গুলো নিয়ন্ত্রণে রাখতে দীর্ঘদিন ৩ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রুপ সক্রিয় রয়েছে। তারা প্রতিনিয়ত বাগান মালিক ও শ্রমিকদের জিম্মি করে চাঁদাবাজি করছে। এর কোনো কোনো ঘটনা প্রকাশ পেলেও অধিকাংশ ঘটনাই থেকে যায় অগোচরে। এসব সন্ত্রাসির ভয়ে পাহাড়ে বাগান মালিকরা তাদের ফসল ঘরে তুলতে পারছে না। তারা প্রতিনিয়ত পাহাড়ের বাগান মালিক ও কাজে যাওয়া শ্রমিকদের জিম্মি করে মোটা অংকের টাকা আদায় করে। এর মধ্যে রয়েছে দুটি চাকমা গ্রুপ ও একটি বিভিন্ন সন্ত্রাসীদের সমন্বয়ে গঠিত গ্রুপ।স্থানীয়রা জানান, রাঙ্গুনিয়া, পটিয়া, বোয়ালখালী ও চন্দনাইশ পাহাড়ের নিয়ন্ত্রণ করছে পাহাড়ি ৩ সন্ত্রাসি গ্রুপ। তিনটি গ্রুপের মধ্যে দুটি গ্রুপের নির্দিষ্ট পোষাক থাকলেও একটি গ্রুপের নির্দিষ্ট কোনো পোষাক নেই। তবে তিনটি গ্রুপের কাছেই রয়েছে ভারী অস্ত্র। গত দুই বছর ধরে একটি চাকমা সন্ত্রাসি গ্রুপ পাহাড়ের নিয়ন্ত্রণ করলেও এখন দুটি চাকমা গ্রুপ ও একটি সরফফভাটা এলাকার বিভিন্ন সন্ত্রাসিদের সমন্বয়ে গঠিত সন্ত্রাসি গ্রুপ পাহাড় চষে বেড়াচ্ছে। এদের মধ্যে চাকমা দুটি গ্রুপের মধ্যে একটি গ্রুপ জলপাই কালারের পোষাক ও অন্যটি দেশীয় একটি বাহিনীর সাথে মিল রেখে পোষাক ও ওয়াকিটকি ব্যবহার করে বলে জানা গেছে।স্থানীয়রা জানান, পাহাড়ে শত শত কৃষক চাষাবাদ করলেও অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের ভয়ে তারা আতংকে থাকেন। এসব সন্ত্রাসীদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু লোকের যোগাযোগ রয়েছে। প্রচার আছে পটিয়াসহ দক্ষিণ চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যরা ছদ্মবেশে অবস্থান নেয়। তাদের সাথে স্থানীয় কিছু ব্যক্তির সখ্যতা রয়েছে। ফলে সুযোগ বুঝে তারা অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়সহ নানা অপরাধ করে।দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি ওবায়দুল ইসলাম জানিয়েছেন, পাহাড়ি সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো এলাকার কৃষক ও সাধারণ লোকজনকে অপহরণ এবং মুক্তিপণ আদায়ের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া গেছে। যার কারণে র্যাব ও পুলিশের টিম একই সময়ে যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করেছে। তবে সন্ত্রাসীদের আস্তানা খুঁজে পায়নি। অভিযান চলমান রাখা হবে বলে জানান তিনি।