করোনা সংক্রমণ রোধে অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রথম ভ্যাকসিন দেওয়ার চার সপ্তাহ পর ৪১ শতাংশ গ্রহীতার শরীরে ও দ্বিতীয় ভ্যাকসিন দেওয়ার দুই সপ্তাহ পর ৯৩ শতাংশ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
আজ রোববার (২৭ জুন) ঢাকা মেডিকেলের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ থেকে করা এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি ঢাকা মেডিকেল কলেজে অক্সফোর্ড- অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ১ম ও ২য় ডােজের পর অ্যান্টিবডি রেসপন্সের ওপর একটি গবেষণা করা হয়। গবেষণাটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়ােলজি বিভাগে সম্পন্ন হয় এবং একদল গবেষক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এসএম সামসুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে গবেষণাটি শেষ করেন। গবেষণার সময়কাল ছিল ৫ মাস।
গবেষণায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের ডাক্তার ও কর্মচারী থেকে ৩০৮টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ১ম ভ্যাকসিন দেওয়ার ৪ সপ্তাহ পর নমুনা (রক্ত) সংগ্রহ করা হয় এবং ৪১ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়। ২য় ভ্যাকসিন দেওয়ার ২ সপ্তাহ পর নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং ৯৩ শতাংশ অংশগ্রহণকারীর শরীরে অ্যান্টিবডি উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়।
মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. এস এম শামসুজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেয়া ৩০৮ জন চিকিৎসক ও কর্মচারীদের ওপর গবেষণা করি। এই গবেষণা পাঁচ মাস ধরে করা হয়েছিল। তাদের প্রত্যেকের শরীরে প্রথম ডোজ নেয়ার চার সপ্তাহ পরে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ৪১ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। আর দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার দুই সপ্তাহ পর নমুনা সংগ্রহ করে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৯৩ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। এই গবেষণা চালানো হয়েছে যাদের বয়স ৪২-৫০ বছরের মধ্যে।’
তিনি আরও বলেন, ‘করোনার ভ্যাকসিন নিলে করো না হবে না এ কথাটি ঠিক নয়।’ যাদের ভ্যাকসিন নেয়া থাকবে তাদের করোনা হলেও সিভিয়ার পর্যায়ে যাবে না বলে জানান তিনি।
ঢামেকের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মো. টিটু মিঞা বলেন, ‘টিকা নেয়ার ছয় মাস থেকে ১ বছর পর্যন্ত শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের গবেষণা চলবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাজেটে গবেষণার জন্য আলাদা বরাদ্দ রেখেছেন যা আমাদের নতুন নতুন গবেষণা করতে সহায়তা করবে।’ এই গবেষণাটি অনেক ব্যয়বহুল বলে জানান তিনি।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘সঠিক সময় সঠিক গবেষণা করেছেন আমাদের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের গবেষকরা। গবেষণাটি যারা করেছেন তাদের আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। এই ভ্যাকসিন নিলে আমরা ভালো একটা রেজাল্ট পাব পাশাপাশি আমরা ভালো একটা প্রোটেকশন পেতে পারি সেই বিষয়টি আপনাদের মাধ্যমে আমরা সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই।’
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অর্থায়নে গবেষণায় সার্বিক সহযোগিতা করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাে. টিটো মিঞা এবং উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মাে. শফিকুল আলম চৌধুরী।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]