রেজিঃ নং ডিএ ৬০০৯ | বর্ষ ১৪ | ৪ পৃষ্ঠা ৩ টাকা || শনিবার | ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
অজগর ভেবে পুষছিলেন ভয়ঙ্কর বিষধর রাসেলস ভাইপার
জেমস আব্দুর রহিম রানা যশোর জেলা প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ যশোরের বেনাপোল সীমান্তের একটি বাড়ি থেকে ভয়ঙ্কর বিষধর রাসেলস ভাইপার উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা। সোমবার বিকেলে বেনাপোল পোর্ট থানার বারোপুতা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত নুর ইসলাম সর্দারের বাড়ি থেকে রাসেলস ভাইপারটি উদ্ধার করা হয়।স্থানীয়রা জানান, মুক্তিযোদ্ধা মৃত নুর ইসলাম সর্দারের ছেলে ইনামুল সর্দার গত শুক্রবার গাতিপাড়া সীমান্তের ১৩ ঘর নামক স্থানের পাশে গাছ কাটার কাজে যান।সেখানে গাছ কাটার সময় তিনি সাপটিকে দেখতে পান এবং অজগর মনে করে সেটিকে পোষার জন্য বাড়িতে নিয়ে যান। পরবর্তীতে জানাজানি হলে ২১ ব্যাটালিয়নের বিজিবি সদস্যরা সোমবার বিকালে সাপটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।ইনামুল সরদার জানান, গত তিন দিন ধরে তিনি সাপটিকে অনেক যত্নে ইঁদুর ও ব্যাঙ খাইয়ে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। অনেকে তাকে টাকার লোভ দেখিয়ে সাপটি কিনতে চেয়েছিল। কিন্তু তিনি সেটি বিক্রি করেননি। তবে সোমবার বিকেলে বিজিবি সদস্যরা সাপটি নিয়ে যান।২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পুটখালি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লাভলু বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গোপন খবর পেয়ে সাপটি উদ্ধার করা হয়েছে। এটি রাসেলস ভাইপার সাপ। এটি খুব বিষধর। সাপটিকে দ্রুত বন বিভাগের কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।রাসেল ভাইপার সম্পর্কে বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা জানান, রাসেলস ভাইপার (Russell’s Viper)সাপটি ‘চন্দ্রবোড়া’ বা ‘উলুবোড়া’ নামেও পরিচিত।এটি ইঁদুর ও টিকিটিকি খায়। সতবাড়ির আশেপাশে এদের প্রাচুর্যতা বেশি থাকায় খাবারের খোঁজে রাসেলস ভাইপার অনেক সময় লোকালয়ে চলে আসে এবং মানুষকে দেখে আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে কখনও কখনও আক্রমণও করে বসে।তিনি বলেন, সাধারণত পদ্মার চরাঞ্চল, নদী অববাহিকা ও বরেন্দ্র এলাকায় উঁচু-নিচু জমিতে এই সাপটি বেশি দেখা যায়। সাধারণত জুন-জুলাই মাসে এর প্রজননকাল। এটি ডিম দেওয়ার বদলে সরাসরি ৬-৬৩টি বাচ্চা প্রসব করে। দেখতে মোটা, লম্বায় ২ থেকে ৩ ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট এই সাপের গায়ে ছোপ-ছোপ গোলাকার কালা দাগ থাকে। ঘন ঘন জিহ্বা বের করে হিসহিস শব্দ করে। সাপটি সম্পর্কে যার ধারণা নেই তিনি এটিকে অজগর ভেবেই ভুল করবেন।জোহরা মিলা বলেন, আইইউসিএনের ২০১৫ সালের লাল তালিকা অনুযায়ী রাসেলস ভাইপার বাংলাদেশে সংকটাপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে।এই সাপের বিষ ‘হেমোটক্সিন’ হওয়ায় মাংস পঁচেই আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তাই সাপটির কবল থেকে বাঁচতে সচেতনতাই কার্যকর পথ। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী সাপটি সংরক্ষিত।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]
Copyright © 2024 দৈনিক শিরোমনি | shiromoni.com. All rights reserved.