1. [email protected] : admin :
  2. [email protected] : বরিশাল ব্যুরো প্রধান : বরিশাল ব্যুরো প্রধান
  3. [email protected] : cmlbru :
  4. [email protected] : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান : চট্রগ্রাম ব্যুরো প্রধান
  5. [email protected] : ঢাকা ব্যুরো প্রধান : ঢাকা ব্যুরো প্রধান
  6. [email protected] : স্টাফ রিপোর্টারঃ : স্টাফ রিপোর্টারঃ
  7. [email protected] : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান : ফরিদপুর ব্যুরো প্রধান
  8. [email protected] : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান : সম্রাট শাহ খুলনা ব্যুরো প্রধান
  9. [email protected] : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান : ময়মনসিংহ ব্যুরো প্রধান
  10. [email protected] : আমজাদ হোসেন রাজশাহী ব্যুরো প্রধান : রাজশাহী ব্যুরো প্রধান
  11. [email protected] : রংপুর ব্যুরো প্রধান : রংপুর ব্যুরো প্রধান
  12. [email protected] : রুবেল আহমেদ : রুবেল আহমেদ
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:২৫ অপরাহ্ন

বিদেশে অর্থ পাচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা আসছে না

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ১৮ জুন, ২০২২

প্রতি বছর বিভিন্ন মাধ্যমে বিদেশে দেশের অর্থ পাচার হচ্ছে। মূলত তিনটি প্রক্রিয়ায় এ অর্থ পাচার হয়। এর মধ্যে রয়েছে- বেপরোয়া দুর্নীতি, অনিশ্চিত বিনিয়োগের পরিবেশ এবং রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে অর্থ পাচার হচ্ছে। বিশেষ করে নির্বাচনের আগে টাকা পাচার বেশি বৃদ্ধি পায়। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর দুর্বল নজরদারি, সুশাসনের ঘাটতি, বৈদেশিক বাণিজ্যে মিথ্যা ঘোষণা এবং হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ পাচার বাড়ে। এর সঙ্গে অনেক প্রভাবশালী জড়িত থাকায় টাকা পাচার বেড়েছে। দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে আলাপকালে তারা টাকা পাচারের ক্ষেত্রে মোটা দাগে এসব কারণ উল্লেখ করেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থ রাখার ক্ষেত্রে বিত্তবানরা দেশকে নিরাপদ মনে করছেন না। তাই বিভিন্ন উপায়ে অর্থ পাচার হচ্ছে। পাচার রোধে বিভিন্ন কথা বলা হলেও বাস্তবে তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই।পাচারের সঙ্গে অনেক প্রভাবশালী জড়িত। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। এক্ষেত্রে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা আর সুশাসন জরুরি।বাংলাদেশ থেকে ভয়াবহ আকারে টাকা পাচারের তথ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটি (জিএফআই), সুইস ব্যাংক এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের সংগঠন আইসিআইজের পানামা ও প্যারাডাইস পেপারেও উঠে এসেছে। বড় ধরনের টাকা পাচার হলেও তা বন্ধে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই বলে মনে করেন অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুসারে প্রতি বছর দেশে গড়ে ১৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসে। কিন্তু দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার হিসাবে দেশ থেকে গড়ে ৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি পাচার হয়ে যায়।বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, এখন পর্যন্ত কাউকে বিদেশে টাকা জমা রাখার বিশেষ অনুমোদনও দেয়া হয়নি। এ ছাড়া কোনো প্রবাসীও সরকারকে জানাননি যে তিনি সুইস ব্যাংকে টাকা জমা রেখেছেন। অর্থাৎ সুইস ব্যাংকে জমা পুরো টাকাটাই দেশ থেকে পাচার করা হয়েছে। সূত্র জানায়, টাকা পাচার রোধে বাংলাদেশ ব্যাংক সব সময় কাজ করছে। মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে যেসব আন্তর্জাতিক নিয়মকানুন রয়েছে, তা পুরোপুরি মেনে চলছে। পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া আছে।
এদিকে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে অর্থ পাচারকারীদের বিশেষ সুযোগ দিয়েছে বাংলাদেশ। কেউ ৭ শতাংশ কর দিয়ে বিদেশে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে এনে বৈধ করতে পারবে। তবে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করছে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা (টিআইবি) এবং দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদরা। গত বৃহস্পতিবারও সংসদে এ নিয়ে কথা হয়েছে। বর্তমানে দেশে একজন নিয়মিত করদাতা ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কর দেন। সে হিসাবে অর্থ পাচারকারীদের প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমরা পাচার হয়ে যাওয়া টাকা দেশে ফেরত আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবো। আশা করছি, টাকা ফেরত আসবে।তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, কয়েক বছর ধরে টাকা পাচার বাড়ছে। অর্থ পাচারের বিষয়টি গভীর উদ্বেগজনক। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে সুইস ব্যাংকে অর্থ পাচারের মূলত তিনটি কারণ। এর মধ্যে প্রধান হচ্ছে দুর্নীতি। দেশে দুর্নীতি বৃদ্ধি হওয়ায় অর্থ পাচারও বেড়েছে। এ ছাড়া দেশে অনিশ্চিত বিনিয়োগের পরিবেশ, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তাহীনতার কারণেও অর্থ পাচার বেড়েছে। তার মতে, পাচার রোধ করতে হলে দুর্নীতি কমিয়ে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্টে সুনির্দিষ্টভাবে তথ্য উঠে আসছে। আর অর্থ পাচারের এ বিষয়টি সরকারও স্বীকার করেছে। কিন্তু পাচার রোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা সামনে আসছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, টাকা পাচারের প্রথম কারণ হলো- দুর্নীতি। নানা অবৈধ উপায়ে খুব দ্রুতই সম্পদ বানানো যায়। যারা এভাবে অর্থ উপার্জন করে, তারা বড় অংশই বাইরে নিয়ে যায়। দ্বিতীয়ত, দেশে নানা ধরনের শঙ্কা রয়েছে। তৃতীয়ত, কোনো অ্যাকশন নেয়া হচ্ছে না। এক্ষেত্রে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর তেমন কোনো তৎপরতা নেই। চতুর্থ, আমদানি-রপ্তানিতে কার্যকর নজরদারি নেই। পঞ্চমত, কারও বিরুদ্ধে শাস্তি দেয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, শুধু কথার কথা নয়, বাস্তবেই সরকারের পক্ষ থেকে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগমন্ট গ্রুপের (বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফিন্যানশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের সমন্বয়ে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক ফোরাম) সদস্য। এমএলএর মাধ্যমে সুইজারল্যান্ডে যোগাযোগ করে অর্থ ফেরত আনার চেষ্টা করা যেতে পারে।

গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, দুর্নীতির কারণে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর অর্থ পাচার হয়। সুইস ব্যাংকগুলো গ্রাহকের অর্থের বিষয়ে যথেষ্ট গোপনীয়তা রক্ষা করে। সরকার ইচ্ছা করলে আনুষ্ঠানিকভাবে সে দেশের কাছে তথ্য চাইতে পারে। তিনি বলেন, অনেক উন্নত দেশ এখন সম্পদের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন না করেই বিদেশিদের বিনিয়োগের সুযোগ দিচ্ছে। বাংলাদেশের বাজেটে বিদেশে থাকা সম্পদ থেকে কর আদায় করতে এবং নগদ অর্থ ফেরত আনতে যে সুযোগ দেয়া হয়েছে, তাতে সাড়া মিলবে বলে তিনি মনে করেন না।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতে পি কে হালদার ধরা পড়ার পর পাচারের বিষয়টি আবারো সামনে এসেছে। নাটোরের এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের কানাডায় অর্থ পাচারের তথ্য মিলেছে। বাংলাদেশি আরেকজন এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর মালয়েশিয়ায় অর্থ পাচারের তথ্য মিলেছে। এ ছাড়াও আরও অনেকের টাকা পাচারের তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।

সূত্র জানায়, দেশ-বিদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন বন্ধ ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে সহায়তায় তথ্যের আদান-প্রদান করতে ২০১৩ সালের জুলাইয়ে এগমন্ট গ্রুপের সদস্য হয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমানে দেড়শোর অধিক দেশ ওই গ্রুপের সদস্য। বাংলাদেশ এই গ্রুপের সদস্য হওয়ায় এখন সবক’টি দেশ থেকে মানিলন্ডারিং, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন বা টাকা পাচার বিষয়ক যে কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই।

গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বাংলাদেশি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে সেখানকার ব্যাংকে থাকা অর্থে বড় উল্লম্ফন হয়ে মোট ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক হয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ৩৯০ কোটি। প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশিদের নামে সেখানে রাখা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে আগের বছরের চেয়ে ৩০ কোটি ৮১ লাখ ফ্রাঙ্ক (৫৪.৭৫ শতাংশ); টাকার হিসাবে যা প্রায় ২,৯৭০ কোটি টাকা। এক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতের পরেই বাংলাদেশের অবস্থান। ২০২০ সালে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের নামে থাকা গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি ২৯ লাখ ফ্রাঙ্ক। গত এক বছরে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের নামে জমা টাকার পরিমাণ ৫৫ শতাংশ বেড়েছে; যা ১৯৯৬ সালের পর সর্বোচ্চ।

Facebook Comments
৪ views

Please Share This Post in Your Social Media

এই বিভাগের আরো সংবাদ
© ২০২২ দৈনিক শিরোমনি