রেজিঃ নং ডিএ ৬০০৯ | বর্ষ ১৪ | ৪ পৃষ্ঠা ৩ টাকা || বৃহস্পতিবার | ২৮ নভেম্বর ২০২৪ | ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
আলীশান বাড়ি থাকতে ও পেলেন ভূমিহীন হিসেবে খাস জমি
জেমস আব্দুর রহিম রানা যশোর জেলা প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ ফারুক হোসেন ২০১৭ সালে কর্মরত ছিলেন যশোর বাঘারপাড়া ভূমি অফিসের নায়েব পদে। বর্তমান তিনি অভয়নগর ভূমি অফিসে কর্মরত। স্ত্রী ছবুরুন নেছা দলিল লেখক হিসেবে কর্মরত বাঘারপাড়া সাবরেজিস্ট্রি অফিসে। এ দম্পতির বাঘারপাড়া খলসি গ্রামে রয়েছে দু’তলা বিশিষ্ট আলিশান বাড়ি। তারপরও সরকারি রেকর্ডপত্রে তারা ভূমিহীন। উপজেলার দরাজহাট ইউনিয়নের পারকুল গ্রামের পাকা সড়কের পাশে পেয়েছেন ভূমিহীনদের জন্য বরাদ্ধকৃত পাঁচ শতক জমি। সূত্র জানায়, ওই জমি পারকুল গ্রামের শহিদুল ইসলাম ২৫ বছর ধরে বন্দোবস্ত নিয়ে চাষাবাদ করে আসছিলেন। ২০১৭ সালে বন্দোবস্তের মেয়াদ শেষ হয়। তারপর তিনি আবারও ওই জমি বন্দোবস্ত নিতে বাঘারপাড়া ভূমি অফিসে যোগাযোগ করেন। কিন্তু সেখানে কর্মরত তৎকালীন নায়েব ফারুক হোসেন তাকে জানান, ওই জমি নতুন করে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। কারণ সরকার জমিটি ভূমিহীন দরিদ্রদের ঘর নির্মাণের জন্যে নির্ধারণ করেছে। অথচ নায়েব ফারুক কৌশলে স্ত্রী ছবুরুন নেছাকে ভূমিহীন দেখিয়ে জমিটি স্ত্রীর নামে বন্দোবস্ত করে দিয়েছেন। যার দলিল নং-২০৩৫/২০১৭।স্থানীয়রা জানান, ফারুক হোসেন ও ছবুরুন নেছা দম্পতি কোনোভাবেই দরিদ্র বা ভূমিহীন নয়। কেননা তারা দু’জন চাকরিজীবী। তাদের দু’তলা বিশিষ্ট আলিশান বাড়ি রয়েছে। ছবুরুন নেছা তার বাপের কমপক্ষে ২৫ শতক জমি পেয়েছেন। ওই জমিতে বাড়িও নির্মাণ করেছেন। বাড়ির সাথে একাধিক দোকান ঘর রয়েছে। দোকান ঘর থেকেও তিনি প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা ভাড়া পান। নায়েব ফারুক হোসেন গ্রামের দরিদ্রদের সাথে প্রতারণা করে নিজ স্ত্রীকে জমিটি পাইয়ে দিয়েছেন বলে জানান তারা।পারকুল গ্রামের শহিদুল ইসলাম জানান, ওই জমিটি তারা দীর্ঘদিন ভোগ দখল করে আসছিলেন। বন্দোবস্ত শেষ হলে তিনি একাধিকবার ভূমি অফিসে যান আবারও বন্দোবস্ত নেয়ার জন্যে। কিন্তু নায়েব ফারুক জমিটি স্ত্রীকে ভূমিহীন দেখিয়ে তার নামে করিয়ে নিয়েছেন। শহিদুল ওই জমিতে তিনি বিভিন্ন ধরনের গাছ লাগিয়েছিলেন। গাছ কেটে নিয়ে জমির দখল না ছাড়লে পুলিশ দিয়ে হয়রানির ভয় দেখান ফারুক তাকে। পরে তিনি জমি থেকে গাছ কেটে নিয়েছেন। এরপর থেকে ওই জমিটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।ওই জমির পাশের বাসিন্দা ভূমিহীন ভ্যানচালক মিজানুর রহমান জানান, তার নিজের কোনো জমি নেই। তিনি জানতে পারেন জমিটি সরকারি সম্পত্তি। এতদিন শহিদুল ইসলাম সরকারের কাছ থেকে বন্দোবস্ত নিয়ে জমিটি ভোগ দখল করে আসছিলেন। এখন সময় শেষ হয়ে গেছে। জমিটি সরকার ভূমিহীনদের জন্যে বরাদ্ধ দেবেন।তারপরও ভূমিহীন হিসেবে খাস জমি নিয়েছেন ছবুরুন ! জমির বর্তমান মালিক ছবুরুন নেছা জানান, সবাই নিচ্ছে তাই তিনিও নিয়েছেন। যখন জমিটি পেয়েছিলেন, তখন তিনি গরিব ছিলেন। বহরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু মোতলেব তরফদার তাকে জমিটি পাইয়ে দিয়েছিলেন।এ বিষয়ে নায়েব ফারুক হোসেন বলেন, ছবুরুন নেছা যখন জমিটি পেয়েছিলেন তখন তারা স্বামী-স্ত্রী ছিলেন না। পরবর্তীতে তাদের বিয়ে হয়। এ জমি পাওয়ার ব্যপারে তার কোনো হাত নেই। এছাড়াও ওই জমিটি পাওয়ার পর তারা কোনোদিন দখলে যাননি।বহরামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু মোতলেব তরফদার জানান, জমিটি দরাজহাট ইউনিয়নের ভিতরে। এ জমি ছবুরুন নেছাকে পাইয়ে দেয়ার তার কোনো সুযোগ নেই। কেননা, এটি তার ইউনিয়নের ভিতরে নয়। এছাড়া, ছবুরুন নেছা কোনোভাবেই দরিদ্র বা ভূমিহীন নয়। তিনি তাকে নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]
Copyright © 2024 দৈনিক শিরোমনি | shiromoni.com. All rights reserved.