ওয়ানডে সিরিজে দ্বিতীয় সারির ইংল্যান্ড দলের কাছে পাত্তাই পায়নি পাকিস্তান ক্রিকেট দল। তিন ম্যাচেই হেরেছিল বড় ব্যবধানে। কিন্তু এখন টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হতেই যেন বদলে গেল পাকিস্তানের চেহারা। পূর্ণশক্তির ইংল্যান্ডকেই রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে বাবর আজমের দল।
শুক্রবার রাতে নটিংহ্যামের ট্রেন্ট ব্রিজে হওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচটি ছিল রেকর্ডে ভরপুর। সেই ম্যাচে ইংলিশদের ৩১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজে লিড নিয়েছে পাকিস্তান। বাকি দুই ম্যাচের একটি জিতলেই সিরিজের শিরোপা উঠবে তাদের হাতে।
ম্যাচে আগে ব্যাট করে বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ঝড়ো পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংসে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৩২ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় পাকিস্তান। জবাবে লিয়াম লিভিংস্টোনের রেকর্ড সেঞ্চুরির পরেও ২০১ রানে অলআউট হয়ে গেছে ইংল্যান্ড।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটিই পাকিস্তানের দলীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহের রেকর্ড। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করা ১ উইকেটে ২০৫ রান ছিল তাদের সর্বোচ্চ। সেটি ভাঙতে মাত্র তিন মাস সময় নিলেন বাবর-রিজওয়ানরা।
উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ১৪.৪ ওভারে ১৫০ রান যোগ করেন অধিনায়ক বাবর ও সহ-অধিনায়ক রিজওয়ান। মনে হচ্ছিল, দুজনই হয়তো পেয়ে যাবে সেঞ্চুরি। কিন্তু ১৫তম ওভারে ব্যক্তিগত ৬৩ রানে ফেরেন রিজওয়ান। ৪১ বলের ইনিংসটি সাজান ৮ চার ও ১ ছয়ের মারে।
রিজওয়ান ফিরলেও সেঞ্চুরির আশা বেঁচে ছিল বাবরের। তিনিও হতাশ করেন ১৭তম ওভারে। দলীয় ১৭৫ রানের মাথায় কট বিহাইন্ড হন বাবর। আউট হওয়ার আগে ৪৯ বলে ৮ চার ও ৩ ছয়ের মারে ৮৫ রানের ইনিংস খেলেন পাকিস্তানি অধিনায়ক।
শেষের ২২ বল থেকে আরও ৫৭ রান যোগ করে পাকিস্তান। যার মূল কৃতিত্ব ফাখর জামান (৮ বলে ২৬) ও মোহাম্মদ হাফিজের (১০ বলে ২৪)। এছাড়া শোয়েব মাকসুদের ব্যাট থেকে আসে ৭ বলে ১৯ রান। পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ২৩২ রান।
২৩৩ রানের বিশাল লক্ষ্যের জবাবে হতাশ করেন ডেভিড মালান (১), জনি বেয়ারস্টো (১১) ও মঈন আলি (১)। তবে ঝড় তোলেন জেসন রয় ও লিয়াম লিভিংস্টোন। ইনিংসের সপ্তম ওভারে সাজঘরে ফেরার আগে মাত্র ১৩ বলে ২ চার ও ৩ ছয়ের মারে ৩৪ রান করেন জেসন। তার বিদায়ের সময় ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ৬.৪ ওভারে ৪ উইকেটে ৮২ রান।
এরপরের গল্পটা পুরোপুরি লিভিংস্টোনের। পাঁচ নম্বরে নামা এ ব্যাটসম্যান পঞ্চাশ করেন মাত্র ১৭ বলে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে যা ইংল্যান্ডের পক্ষে দ্রুততম। এরপর সেঞ্চুরি করতে তিনি খেলেন সবমিলিয়ে ৪২ বল। এটিও ইংল্যান্ডের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড।
ছক্কা মেরে সেঞ্চুরি করার পর অবশ্য আর টিকতে পারেননি লিভিংস্টোন। রেকর্ডগড়া সেঞ্চুরি পূরণের ঠিক পরের বলেই লং অন বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন তিনি। আউট হওয়ার সময় তার নামের পাশে জ্বলজ্বল করছিল ৪৩ বলে ৬ চার ও ৯ ছয়ের মারে ১০৩ রান।
মূলত লিভিংস্টোন আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নিভে যায় ইংল্যান্ডের সকল আশা। শেষ পর্যন্ত ৪ বল বাকি থাকতেই ২০১ রানে অলআউট হয় তারা। বল হাতে ৩০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।