ক্ষমতা থেকে বিদায় নেয়ার পর পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাগ্য পরীক্ষা আজ। প্রাদেশিক পরিষদ পাঞ্জাবের ২০টি আসনে উপনির্বাচন। এই প্রদেশে ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফের (পিটিআই) ২৫ জন সংসদ সদস্য ভিন্নমত পোষণ করেছিলেন। এর মধ্যে ৫ জন সংরক্ষিত আসনের। ফলে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন ওই ২৫ এমপির পদ শূন্য ঘোষণা করে ২৩ মে। এসব এমপি তখন মুখ্যমন্ত্রী পদে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) প্রার্থী শেহবাজ শরীফের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী পদে ভোট দিয়েছিলেন। ধারণা করা হয়, এ কারণেই তাদের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। সংরক্ষিত পদ বাদ দিয়ে পদের সংখ্যা ২০। সেই পদগুলোতে আজ নির্বাচন হচ্ছে। একে দেখা হচ্ছে ইমরান খানের জন্য ইজ্জতের লড়াই হিসেবে। সব চোখ আজ তাকিয়ে আছে পাঞ্জাবের দিকে।ক্ষমতা ছাড়ার পর এই প্রথম সরাসরি ভোটের মুখোমুখি হচ্ছে ইমরান খানের পিটিআই। ফলে তারা তাদের আসনগুলো পুনরুদ্ধার করতে পারে কিনা তা-ই এখন দেখার বিষয়। এ নির্বাচনকে ইমরান খানের জনপ্রিয়তা মাপার একটি মাপকাঠি হিসেবেও দেখা হচ্ছে। তবে পিটিআই নির্বাচনের আগেই অভিযোগ করেছে, নির্বাচনে জালিয়াতির সব রেকর্ড ভঙ্গ করবে সরকার। তাই বলা হয়েছে, আজ রোববার পাঞ্জাব এক তীব্র উত্তেজনাকর রাজনৈতিক লড়াই দেখবে। এই নির্বাচন নির্ধারণ করবে এ প্রদেশে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হবেন কে। এ অবস্থায় রাজনৈতিক বোদ্ধারা মনে করছেন নির্বাচনী লড়াই হবে কঠিন। কারণ, পিটিআইয়ের দলত্যাগী ২০ এমপি তাদের সমর্থন দিয়েছেন পিএমএলএন’কে। পাঞ্জাব প্রদেশে পিটিআই এবং পিএমএলএনের প্রায় সমান সংখ্যক আসন আছে। ফলে কোনো দল এই উপনির্বাচনে লিড নিতে পারলে, খুব সহজেই সেই দল সরকার গঠন করতে পারবে। আগামী ২২ শে জুলাই মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ২০১৮ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই প্রদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতায় বিজয়ী হয়েছে পিএমএলএন। এমনকি যখন পিটিআই সরকার ক্ষমতায় তখনও সেখানে জিতেছে পিএমএলএন। ২৯টি জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে নির্বাচনেও সাফল্য দেখিয়েছে পিএমএলএন। তারা জিতেছে ১৪টিতে। পিটিআই ১০টিতে। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী ২০ জন এমপির মধ্যে ১০জনই ছিলেন স্বতন্ত্র। পরে ব্যবসায়ী ও রাজনীতিক জাহাঙ্গীর খান তারিনের উদ্যোগে তারা যোগ দিয়েছেন পিটিআইতে। এই নির্বাচনে পিটিআই গতি বাড়িয়েছে। ভোটারের বাড়িতে বাড়িতে গেছে। সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলপ্রধান ইমরান খানের বৈদেশিক ষড়যন্ত্র তত্ত¡ বর্ণনা করেছে তারা। নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয় শনিবার রাত ১২টায়। নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থীর পক্ষে জোরালো প্রচারণা চালান পিএমএলএনের ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজ ও পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ইমরান খান। এ সময়ে ইমরান খান তার সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র তত্তে¡র বয়ান দেন। তার সমর্থকদের নিশ্চয়তা দেন যে, এই নির্বাচনে ‘চোর এবং দুর্নীতিবাজরা’ বিজয়ী হবে না। নির্বাচনের সব রেকর্ড ভঙ্গ করে তারা জালিয়াতি করবে।