নিজস্ব প্রতিবেদক : একাদশ সংসদকে ‘রাবার স্ট্যাম্প’ সংসদ হিসেবে অভিহিত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকালে গুলশানে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পার্লামেন্টে কী চলছে? এ পার্লামেন্ট পুরোপুরিভাবে একটা রাবার স্ট্যাম্পে পরিণত হয়েছে এবং সরকারি দল তাদের ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য, তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য, একদলীয় শাসন ব্যবস্থাকে আড়াল করার যে একটা পার্লামেন্ট খাড়া করে রেখেছে আসলে সেই পার্লামেন্টে কী হচ্ছে?
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তাদের সেই পুরোনো কায়দায় ১৯৭২ থেকে ৭৫ সালে তারা যেভাবে পার্লামেন্টকে নিয়ন্ত্রণ করেছিল ঠিক একই কায়দায় আজকেও তারা…। সংসদ সদস্যদের যেটুকু ন্যূনতম অধিকার আছে, সেই অধিকারটুকু তাদের দেয়া হচ্ছে না।’
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যদের অধিকার ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুধু তাই নয়, তারা (সরকারি দল) প্রতারণা করছে জনগণের সঙ্গে। সংসদ সদস্যরা যে প্রশ্ন দিচ্ছেন সেই প্রশ্ন বলে দেয়া হচ্ছে। এটা চিন্তাও করা যায় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে শপথ নেয়া হয়েছে সংবিধান অনুযায়ী। সংবিধান মানে কী? জনগণের সঙ্গে রাষ্ট্রের চুক্তি। সেই সংবিধানে পরিষ্কার করে বলা আছে সংসদ সদস্যদের কী কী অধিকার আছে, সংসদ কীভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা মধ্যে তাদের দায়িত্ব গ্রহণ করবে, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব কী? প্রধানমন্ত্রী কীভাবে তার সরকারকে প্রতিনিধিত্ব করবেন। সংসদের রুলস অব প্রসিডিউরের মধ্যে সব কিছু বলা আছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘যেখানে যদি স্পিকার, পার্লামেন্টের সেক্রেটারিয়েট তারা যদি এই প্রতারণার সঙ্গে, এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত হয় তাহলে এটাকে কোন ধরনের অপরাধ বলব?’
ফখরুল বলেন, ‘আমি তো পরিষ্কার করে বলতে চাই, এই ধরনের সংবিধান লঙ্ঘন মানে হচ্ছে রাষ্ট্র বিরোধী অপরাধ। অর্থাৎ পুরো জাতির সঙ্গে প্রতারণা করা, সংবিধানকে লঙ্ঘন করা, সংবিধানকে এড়িয়ে যাওয়া। এরকম একটা সংসদ এখন চলছে।’
বর্তমান সংসদে একটা বিরোধী দল শক্তিশালী থাকায়-এটা গণতন্ত্রের জন্য খুব প্রয়োজন’-আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা হাস্যকর। আমরা মনে করি যে, এই ধরনের কথা বলা মানে হলো জাতির সঙ্গে তামাশা করা।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, এগুলো পরিহার করুন। সত্যিকার অর্থে একটা জনগণের পার্লামেন্ট নির্বাচিত করুন, একটা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটা নির্বাচন দিন। সেই নির্বাচনে দেখা যাবে যে, কারা সত্যিকার অর্থে জনগণের প্রতিনিধি, কারা জনগণের প্রতিনিধি নয়। সত্যিকারের বিরোধী দল বলতে কী বুঝায়।’
এ সময় দলীয় সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।