রেজিঃ নং ডিএ ৬০০৯ | বর্ষ ১৪ | ৪ পৃষ্ঠা ৩ টাকা || বৃহস্পতিবার | ২৮ নভেম্বর ২০২৪ | ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
কচুয়া উপজেলায় উদ্বেগ জনক ভাবে বেড়েছে চুরি
উজ্জ্বল কুমার দাস (কচুয়া,বাগেরহাট)প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ কচুয়া উপজেলার মঘিয়া ইউনিয়ন সহ উপজেলার বিভিন্ন যায়গায় ধারাবাহিক ভাবে চুরির উপদ্রব বেড়েগেছে।করোনা কালিন মহামারিতে প্রায় দের বছরের বেশি সময় কর্মসংস্থান সীমিত হওয়ায় মানুষের আয় কমে যাওয়ায় অর্থনৈতিক ভাবে যখন চলতে হিমসিম খেতে হচ্ছে তখন চুরির ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ উৎকন্ঠা বাড়ছে।মঘিয়া ১ নং ওয়ার্ড এর ফয়সাল এর বাড়ি গত ১৪ অক্টোবর রাত ২ টায় ঘরের বেড়া কেটে ঘুমিয়ে থাকা তার স্ত্রীর ১ ভরি ওজনের স্বর্নের চেন নিয়ে যায়।এ সময় বাড়িতে থাকা লোকজন ও এলাকা বাসী ধাওয়া দিলেও চেন সহ চোর পালিয়ে যায়।ফয়সাল জানান,ঘটনার সময় তিনি তার স্ত্রীর পাশে ঘুমানো ছিলেন কিন্তু ফ্যান চালানো থাকায় শব্দে বেড়া খুলে ফেলার শব্দ তিনি প্রথমে টের পায়নি।চেইন নিয়ে যাওয়ার সময় স্ত্রীর চিৎকারে ঘুম ভেঙ্গে ধাওয়া দিলে চোর পালিয়ে যায়।একি দিন রাত ৩ টায় মঘিয়া ইউনিয়নে খলিশাখালি গ্রামের ৩ নং ওয়ার্ডের তোফাজ্জেল মল্লিকের বাড়ি চুরি করতে আসলে ধাওয়া খেয়ে চোর পালিয়ে যায়।তার ছেলে মল্লিক সাহিন জানান,তার ঘরের বাহির থেকে দরজার সামনে তালা দিয়ে বাগানের সুপারি ও হাস মুরগী চুরির পরিকল্পনা ছিল তাদের।এর কয়েক দিন আগে মঘিয়া ইউনিয়নের মঘিয়া গ্রামের গৃহিণী সিমা রানী মিস্তি জানান,পরিবারের সবাই ঘুমানো অবস্থায় মাঝ রাতে ঘরের ডোয়ার পিছন থেকে গর্ত খুরে ঘরে প্রবেশ করে কিছু নগদ টাকা আনুমানিক ৩০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্নের চেইন ও মোবাইল ফোন সহ কিছু জিনিস পত্র নিয়ে যাওয়ায় সময় ধাওয়া দিলে চোর পালিয়ে যায়।এর আগে একি এলাকায় পর্যায়ক্রমে উত্তর মঘিয়ার মনমথন পাইকের গোয়ালঘর থেকে ১ টি গরু,আসাদুজ্জামানের গোয়াল ঘর থেকে বাছুর সহ ৩ টি গরু ও ১ টি ছাগল চুরি হয়। মঘিয়া ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের মনি শেখ নামের একজন জানান,গত ১২ অক্টোবর তার নতুন ভবনের ছাদে উঠে মাঝরাতে তালা ভেঙ্গে কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাদের রুমের ভিতর প্রবেশ করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তার স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে জিম্মি করে লাঠি ও রড দিয়ে তার স্ত্রী সন্তানকে আঘাত করে আহত করে নগদ টাকা স্বর্নের চেইন সহ মূল্যবান জিনিস পত্র নিয়ে পালিয়ে যায়।এ সময় মনি শেখ কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বে থাকায় বাসায় ছিলেন না।তার স্ত্রী রেহেনা বেগমের তথ্য অনুযায়ী থানায় এ বিষয়ে একটি অভিযোগ করেছিলেন।অভিযোগে তিনি এলাকার চিহ্নিত তিন জনের নাম উল্লেখ করেন এরা হলেন গপ্ফার শেখের ছেলে নাদিম শেখ,নাহিদ শেখ,শাগর শেখ এছাড়াও অজ্ঞাত নামা কয়েকজন সহ বিপ্লব নামের আরো একজন জরিত ছিলেন বলে তিনি জানান।ঘটনা স্থল থেকে ৬০০ টকা সহ একটি মানি ব্যাগ, ব্যবহৃত ১টি গামছা ও এক জোরা জুতা আলামত হিসাবে পুলিশ হেফাজতে নেয়।
গত ১৩ অক্টোবর মঘিয়া ইউনিয়নের সহবৎকাঠি গ্রামের আলি শেখের সুপারী বাগান থেকে ৩৬ ছাড়া সুপারি ও তিন মন মালঠা লেবু চুরিকরে নিয়ে যাওয়ায় সময় হাতেনাতে একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।এসময় নাহিদ শেখ ও অজ্ঞাত নামা ১ জন পালিয়ে যায় বলে জানান।বিষয়টি নিয়ে থানায় অভিযোগ গ্রহন পূর্বক আটক ব্যাক্তিকে কচুয়া থানা পুলিশ জেল হাজতে প্রেরণ করেন।বাদ পরেনি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও, বড়আন্ধারমানিক দুর্গাপুজায় উঠানো মন্দিরে জমারাখা আনুমানিক ১৫/২০ হাজার টাকার সুপারি রাতের বেলা মন্দিরের ভিতর থেকে চুরির ঘটনা ঘটে।কাঁঠালিয়া গ্রামের কাওছার শেখের মাছের ঘের থেকে ধারাবাহিক ভাবে মাছ চুরি হয়ে আসছিলো।গত ১১ অক্টোবর কাঁঠালিয়া গ্রামের পাসে ঘোনারহুলা নামক স্থানে তার মাছের ঘের পাহাড়ায় থাকা অবস্থায় মাছ চুরি করতে আসলে কাওসার সেখ তাদের ধাওয়া দিলে পালিয়ে যায় বলে খবর পাওয়া যায়।স্থানীয় লোকজন জানান,রাতের অন্ধকার থাকায় চোরকে সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।ইতিপূর্বে তার ঘের থেকে আনুমানিক ৩৫ হাজার টাকার মাছ চুরি হয়েছে।এ নিয়ে এলাকার ঘের মালিকদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে।এর আগে ১০ আগষ্ট বারুইখালী গ্রামের একজন অভিযোগ করেন, সাহাপাড়া ২ নং বারুইখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে মোঃ সোহেল খান এবং মোঃ রুবেল খানের ২৮৭/৩ নাম্বার বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে।এসময় নগদ টাকা ও ৩ টি মোবাইল ফোন চুরি হয়।গত মাসে কচুয়া ইউনিয়নের পশ্চিম টেংরাখালী বটতলায় অবস্থিত খোকার দোকান সহ মোট ৪ টি দোকান চুরির ঘটনা ঘটে।এছাড়াও কচুয়া উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়নের শ্যানপুকুরিয়া গ্রামের প্রদীপ মিস্ত্রীর বোনের নগদ টাকা চুরির ঘটনা ঘটে একি এলাকার বিনয় ঘরামীর গোয়াল ঘর থেকে ১ টি গরু চুরির ঘটনা ঘটে।এছাড়াও গত মাসের শুরু থেকে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ছোট-বড় অসংখ্য চুরির ঘটনা ঘটেছে।আমাদের অনুসন্ধানী তথ্য অনুযায়ী হাতে গোলা অল্প কয়েকজন এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করলেও অধিকাংশ মানুষ প্রতিকার না পাওয়ার আসংখ্যায় থানায় অভিযোগ করেন না।এমন উদ্বেগ জনক পরিস্থিতি সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ উৎকন্ঠা যেমন বাড়ছে তেমনি অর্থনৈতিক সংকট আরো ঘনীভূত হচ্ছে।দ্রুত সময়ের মধ্যে চুরির ঘটনাকে আমলে নিয়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সহ সাধারণ মানুষের সতর্ক অবস্থান বৃদ্ধি করা জুরুরি বলে মনে করছে সাধারণ মানুষ।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]
Copyright © 2024 দৈনিক শিরোমনি | shiromoni.com. All rights reserved.