নিউজ ডেস্ক : বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসীকর্মী ফেরত আসা অব্যাহত রয়েছে। গত ১ এপ্রিল থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে সর্বমোট এক লাখ ৪১ হাজার ৩৬ জন কর্মী ফিরে এসেছেন। তাদের মধ্যে পুরুষ এক লাখ ২৬ হাজার ৭৭৮ জন ও নারী ১৪ হাজার ২৫৮ জন। প্রবাসফেরত কর্মীদের ৫০ শতাংশেরও বেশি সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফিরেছেন। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, চলতি মাসের ২ তারিখ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত ফেরত এসেছেন প্রায় ৩৯ হাজার কর্মী। সে হিসাবে চলতি মাসে গড়ে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার ৩০০ জন করে প্রবাসীকর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। প্রবাসফেরত কর্মীদের মধ্যে কেউ বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস, কেউ করোনার কারণে কাজ না থাকায় বা চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় আবার কেউ ভিসার মেয়াদ না থাকায় সাধারণ ক্ষমার আওতায় দেশে ফেরত এসেছেন। ফেরত আসা প্রবাসীদের মধ্যে বৈধ পাসপোর্টে এক লাখ ১২ হাজার ৪৫০ জন এবং ২৮ হাজার ৫৮৬ জন আউটপাসের মাধ্যমে ফেরত আসেন।
১ এপ্রিল থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রবাসীকর্মীদের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট ২৮টিসহ অন্যান্য দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ৩৯ হাজার ১৫৯ জন সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে ফেরত আসেন (পুরুষ ৩৬ হাজার ৫৬১ জন জন ও নারী দুই হাজার ৬৯৮ জন)। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ না থাকায় তারা কর্মীদের পাঠিয়ে দিয়েছে। কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদের আবার নেয়ার কথা বলে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। অনেকেই বলছেন তারা ছুটিতে এসেছেন।
সৌদি আরব থেকে ৩৩ হাজার ২১৬ জন (পুরুষ ২৮ হাজার ৩১৫ জন ও নারী চার হাজার ৯০১ জন) ফেরত আসেন। বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস নিয়ে তারা দেশে আসেন। মালদ্বীপ থেকে নয় হাজার ৬৪৯ জন (পুরুষ নয় হাজার ৫৮১ ও নারী ৬৮ জন) ফেরত আসেন। পর্যটননির্ভর দেশ হওয়ায় করোনার কারণে কাজ নেই তাই মালিক বা কোম্পানি তাদের ফেরত পাঠিয়েছে।
সিঙ্গাপুর থেকে দুই হাজার ৪৯৩ জন (পুরুষ দুই হাজার ৪৬৪ ও নারী ২৯ জন)। কাজের বা চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা দেশে ফেরত আসে। ওমান থেকে নয় হাজার ৮১০ জন (পুরুষ আট হাজার ৭৪৩ ও নারী এক হাজার ৬৭ জন)। বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস নিয়ে দেশে আসেন।
কুয়েত থেকে নয় হাজার ১৪৬ জন (পুরুষ আট হাজার ৯৫৭ জন ও নারী ১৮৯ জন) ফেরত আসেন। আকামা বা ভিসার মেয়াদ না থাকায় বা অবৈধ হওয়ায় সাধারণ ক্ষমার আওতায় ফেরত আসেন আবার অনেক কর্মী বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে দেশে ফিরেছেন। বাহরাইন থেকে ফেরত এসেছেন ৭৪৬ জন ফেরত আসেন। তারা সবাই পুরুষ। বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস নিয়ে তারা দেশে আসেন। এছাড়া অসুস্থ কিংবা চাকরি হারিয়ে অনেকে ফিরে আসেন।
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরত এসেছেন ৭১ জন এবং তাদের সবাই পুরুষ। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন। কাতার থেকে ফেরত এসেছেন ১১ হাজার ৮৩৯ জন (পুরুষ ১০ হাজার ৮৩০ জন ও নারী এক হাজার ৯ জন)। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন। মালয়েশিয়া থেকে ফেরত এসেছেন পাঁচ হাজার ৭৪১ জন (পুরুষ পাঁচ হাজার ৪৩৭ জন ও নারী ৩০৪ জন)। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ফেরত এসেছেন ১০০ জন এবং তাদের সবাই পুরুষ। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় তারা দেশে ফিরে আসেন। থাইল্যান্ড থেকে ফেরত এসেছেন ৩২ জন (পুরুষ ৩০ জন ও নারী দুইজন)। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন তারা। মিয়ানমার থেকে ফেরত এসেছেন ৩৯ জন। তাদের সবাই পুরুষ। কাজ নেই তাই দেশে ফিরে এসেছেন।
জর্ডান থেকে ফেরত এসেছেন দুই হাজার ১৭৭ জন (পুরুষ ৪০৮ জন ও নারী এক হাজার ৭৬৯ জন)। সবাই গার্মেন্টস শ্রমিক। চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় সবাই দেশে ফেরত আসেন। ভিয়েতনাম থেকে ফেরত এসেছেন ১২১ জন (সকলেই পুরুষ)। তারা প্রতারিত হয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। কম্বোডিয়া থেকে ৪০ জন ফেরত আসেন। তাদের সবাই পুরুষ। কাজ নেই তাই দেশে ফিরে আসেন।
ইতালি থেকে ফেরত আসেন ১৫১ জন। তাদের সকলেই পুরুষ। ইরাক থেকে ফেরত এসেছেন পাঁচ হাজার ৭৮৮ জন (পুরুষ পাঁচ হাজার ৭২৮ জন ও নারী ৬০ জন)। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন তারা। শ্রীলঙ্কা থেকে ফেরত এসেছেন ৫৪৮ জন এবং তাদের সকলেই পুরুষ। কাজের মেয়াদ শেষে তারা ফেরত আসেন।
মরিশাস থেকে ফেরত এসেছেন ১৯২ জন (পুরুষ ৪২ জন ও নারী ১৫০ জন)। কাজের মেয়াদ শেষ তাই ফেরত এসেছেন। রাশিয়া থেকে ফেরত এসেছেন ১০০ জন ( সকলেই পুরুষ )। তাদের ফিরে আসার কারণ জানা যায়নি। তুরস্ক থেকে ফেরত আসেন চার হাজার ৬৮৪ জন। (পুরুষ চার হাজার ২২১ জন ও নারী ৪৬৩ জন)। কাজ নেই তাই ফেরত এসেছেন।
লেবানন থেকে ফেরত আসেন চার হাজার ৭৮৩ জন (পুরুষ তিন হাজার ১৬৬ জন ও নারী এক হাজার ৬১৭ জন)। কাজ নেই তাই ফেরত এবং অনেকে আউটপাস নিয়ে ফেরত এসেছেন। নেপাল থেকে ফেরত এসেছেন ৫৫ জন (পুরুষ ৪০ জন ও নারী এক হাজার ১৫ জন)। কারণ জানা যায়নি। হংকং থেকে ফেরতে এসেছেন ১৬ জন (পুরুষ ১২ ও নারী ৪)। ফিরে আসার কারণ জানা যায়নি।
জাপান থেকে ফেরত এসেছেন আটজন এবং তারা সবাই পুরুষ। আইএম জাপানের মাধ্যমে যাওয়া প্রথম ব্যাচের আটজন তিন বছর মেয়াদ শেষে ছুটিতে আসেন। লন্ডন থেকে ৫৩ জন ফেরত আসেন। তাদের মধ্যে ৪০ জন পুরুষ ও ১৩ জন নারী। কী কারণে ফেরত আসেন তা উল্লেখ করা হয়নি।
লিবিয়া থেকে ১৫১ জন থেকে ফেরত আসেন এবং তাদের সবাই পুরুষ। কী কারণে ফেরত আসেন তার উল্লেখ নেই। এছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে মোট ১২৮ জন ফেরত আসেন। তাদের সকলেই পুরুষ। কী কারণে তারা ফেরত আসেন তা জানা যায়নি।
এই বিভাগের আরো সংবাদ
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]