উজ্জ্বল কুমার দাস (কচুয়া,বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ
এ বছর করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলায় অবস্থিত বারুণী স্নানোৎসব স্বল্প পরিসরে হলেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে না মেলা। দ্বিতীয়ধাপে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দ্বিতীয়বারের মত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বারুণী স্নানোৎসব ও মেলার মূল আনুষ্ঠানিকতা।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ রাখতে কমিটির পক্ষ থেকে বারুনী স্নান উৎসব ও মেলা স্থগিত করা হয়েছে।সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পঞ্জিকা অনুসারে ৯ এপ্রিল শুক্রবার এ পুন্য স্নান ও মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
মন্দিরে সভাপতি অধির কুমার হালদারের কাছ থেকে এমন তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন গত বছর বিধিনিষেধের কারনে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তাই গত বছরের মতো এবছর মেলা সহ জনসমাগম ঘটে এমন কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।যেহেতু মেলা না করার সিদ্ধান্ত হয়েছে তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে কোন অনুমতি চাওয়া হয়নি।শুধু সংক্ষিপ্ত ভাবে ধর্মীয় আচার আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে স্থানীয় কিছু ভক্ত প্রতি বছরের মতো এখানে স্নান করতে এসেছে।তবে আগের মতো সেই উপস্থিতি নেই।স্থানীয় ভাবে ৪-৫ টা দোকান বসলেও পুরো মাঠ রয়েছে ফাঁকা।
এ স্নান ও মেলা কবে থেকে শুরু হয়েছে তার সঠিক কোন সময় এখনো পাওয়া যায়নি তবে বিভিন্ন তথ্য লোককথা ও ধর্মীয় বই পুস্তকের মাধ্যমে জানাযায়,প্রাচীন কালে সূর্যবংশীয় রাজা সগরের ষাট হাজার পুত্র মহর্ষি কপিলের ক্রুদ্ধদৃষ্টিতে ভস্মীভূত হয়ে প্রেতরুপে আবদ্ধ হলে আত্মাকে উদ্ধারের জন্য তদীয় প্রপৌত্র ভগীরথ ব্রক্ষার কৃপাধন্য হয়ে স্বর্গলোক থেকে পতিতপাবনী মা গঙ্গাকে পৃথিবীতে আনায়ন করেন।গঙ্গোত্রী হতে হরিদ্বার,ত্রিবেণী, এলাহাবাদ, বারানসী,নবদ্বীপ ও গঙ্গাসাগর হয়ে মায়ের আগমন ভৈরবের স্রোতধারায়।এখানে মা গঙ্গা যাত্রা পথে নিজ হস্ত উত্তোলন করে তাঁর যাত্রার স্বাক্ষর রেখে যান।মায়ের অপ্রাকৃত দর্শন ও কৃপায় দ্রুতই এই স্থানটি এক পূন্য তীর্থক্ষেত্রে পরিনত হয়ে ওঠে।সেই থেকে প্রতি বছর চৈত্র মাসের শুক্ল পক্ষের মধু কৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে বাগেরহাট জেলার কচুয়া উপজেলার মঘিয়া ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে এই মহা বারুনির পুন্য স্নান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।আর একে কেন্দ্র করে বৃহত্তর মেলার আয়োজন হয়ে আসছিল।তবে কালের পরিক্রমায় মেলার আয়োজন সিমিত হয়ে আসছিল।
তবে করোনার কারনে দু বারের মতো মেলা সহ বৃহত্তর আনুষ্ঠানিকতা বন্ধ থাকায় সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্তদের মনে রয়েছে বিষাদের ছাপ।তারা মনে করে গঙ্গার পবিত্র স্রোত ধাড়ায় ধরা হোক পবিত্র বিনাশ হোক মহামারী করোনার।
৩৫ views