কলকাতায় শিগগিরই ভারত-বাংলাদেশ বিজনেস ডেস্ক চালু হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) কলকাতার ‘ভারত চেম্বার অব কমার্স’ আয়োজিত ‘ইন্ডিয়া-বাংলাদেশ: নিউ হরিজনস অব ট্রেড অ্যান্ড বাইলেটারাল রিলেশন’ শীর্ষক সভায় তিনি এ কথা জানান।
সভায় টিপু মুনশিকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব দেন ভারত চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট এন জি খৈতান। টিপু মুনশি এ প্রস্তাব সাদরে গ্রহণ করে বলেন, এ বিষয়ে দ্রুত একটি সমঝোতা চুক্তি সই করা প্রয়োজন।
এন জি খৈতান বলেন, আমরা দুই পাড়ের মানুষ রবীন্দ্র সংগীত ভালোবাসি। আমাদের ভাষা এক, একই সীমান্ত। তবে আমরা বাণিজ্য ক্ষেত্রে কেন পিছিয়ে থাকবো?
তিনি বলেন, ভারতের পরে স্বাধীন হয়েও বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ভারতের মানুষের চেয়ে বেশি। পোশাকশিল্পে বাংলাদেশ যেভাবে উন্নতি করেছে তা বিশেষভাবেই উল্লেখযোগ্য।
এসময় দুই দেশের বাণিজ্যে সহযগিতার জন্য ভারত চেম্বার অব কমার্সের উদ্যোগে নতুন করে ‘বাংলাদেশ ডেস্ক’ চালু করার কথা বলেন তিনি। তি বলেন, আফ্রিকাসহ কয়েকটি দেশের নামে ডেস্ক থাকলেও বাংলাদেশ ডেস্ক বলে কোনোকিছু নেই। বাংলাদেশ ডেস্ক চালু হলে বাংলাদেশ সম্পর্কিত সব রকম তথ্য বা সহায়তা পাওয়া যাবে।
দুই দেশের বাণিজ্যের স্বার্থে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্ক এবং বাণিজ্য সম্প্রসারণ গড়ে তুলতে বছরে অন্তত দুবার প্রতিনিধি সম্মেলন শুরু করার প্রস্তাব দেন এন জি খৈতান। তার মতে, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধিতে বছরে দুবার অর্থাৎ প্রতি ছয় মাসে একবার করে দুই দেশের প্রতিনিধিরা যাতায়াত করবেন এবং ব্যবসা সংক্রান্ত মতবিনিময় করবেন।
বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এন জি খৈতানের এই প্রস্তাবেও সম্মতি দেন।
সভায় ভারত চেম্বার অব কমার্সের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা সীমান্ত এলাকায় নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন টিপু মুনশির কাছে। এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, মুষ্টিবদ্ধ হাতে যেমন করমর্দন হয় না তেমনি আমাদেরও থেমে থাকলে হবে না। এখনই শুরু করে দিতে হবে। আমাদের ব্যবসা বাড়াতে হবে। কারণ আমি মনে করি `better late than never'.
পশ্চিমবঙ্গে অর্থ বিনিয়োগের ব্যাপারে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশসহ কয়েকটি প্রতিবেশী দেশকে ভারত সরকার তাদের দেশে বিনিয়োগের সুযোগ বন্ধ রেখেছে। আমরা চাইছি বটে। তবে যেটা শুনেছি, কেউ যদি বাংলাদেশ থেকে ভারতে বিনিয়োগ করতে চায় তার ‘কেস টু কেস’ তারা পর্যালোচনা করবে। আমরা এখানে বিনিয়োগ করতে চাই। কারণ বাংলাদেশ সরকার সুযোগ করে দিয়েছে, যেসব ব্যবসায়ী বিদেশে গিয়ে ব্যবসা করতে চাযন, তারা তা করতে পারেন।
মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে তিস্তার পানি বিষয়ক চুক্তি নিয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আগে তিস্তার পানি আসুক, তারপর কথা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজর অকৃত্রিম ভালোবাসার। সে কারণেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আজ পাকিস্তানের চেয়েও এগিয়ে বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে কলকাতার বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনার আন্দালিব ইলিয়াসসহ বাংলাদেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে সভা শেষে কলকাতাস্থ বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনের ইফতার পার্টিতে দেন টিপু মুনশি।
আজই ছিল তার কলকাতা সফরের শেষ দিন। শুক্রবার দুপুরে চার দিনের সফরে মিজোরামের রাজধানী আইজলে যাবেন তিনি। সেখানে এক বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দেবেন। পরে মিজোরামের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী আর. লালথানগ্লিয়ানার সঙ্গে প্রস্তাবিত বর্ডার হাট এবং ‘সুসংহত চেক পোস্ট’র (আইসিপি) পাইলট প্রজেক্টের কাজ খতিয়ে দেখবেন তিনি।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]