বিশেষ প্রতিনিধি :মিনহাজ উদ্দিন – গাজীপুরের জেলার শ্রীপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা কাওরাইদের রেললাইনে মাদকের হাট নতুন নয়। এখানে প্রকাশ্যে বিক্রি হয় মাদক। সন্ধ্যা নামলেই জমজমাট হয় এই বাজার। নারী-পুরুষের পাশাপাশি যুক্ত থাকে অল্প বয়সী শিশু কিশোররাও। আবার কেউ কেউ থাকেন পাগলের ছদ্মবেশে। তাদের অনেকের হাতে থাকে কাপড়ের ব্যাগ। তাতে রাখেন কাগজে মোড়ানো গাঁজার পুঁটলি। ক্রেতারাও ভাসমান এসব বিক্রেতার কাছ থেকে মাদক কিনে দ্রুত সটকে পড়েন। জানা যায়, দিনে মাদক কেনা-বেচা শুরু হলেও সন্ধ্যা নামলে আরও বেড়ে যায় মাদক কারবারীদের দৌরাত্ম্য। প্রকাশ্যে চলে মাদকের জমজমাট এই বাজার। পুলিশের সোর্স মারফত অন্য কোন মাধ্যমে খবর পেলেই সটকে পড়েন মাদকব্যাবসায়ীরা।
সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযান চললেও এখানে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে মাদক। পুলিশের গাড়ি সাইরেন বাজিয়ে মূল সড়ক দিয়ে যায়। কাওরাইদ বাজার রেললাইন, নিধুর মাঠ,কালিবাড়ি,মড়ল পারা, দাইপাড়া,মৃধাপাড়া, হিলুপাড়া,সোনাব,লালমাটিয়া, কেরানীবাড়ী,বৈরাগবাড়ী, নান্দিয়া সাঙ্গুন ঘুরে ঘুরে দেখা যায়, মাদক ব্যাবসার রমরমা বানিজ্যের কারবার। ঠিক সন্ধ্যায় কালিবাড়ির আলমের বাড়ির মুখে দাঁড়িয়ে এক নারী। তার মতো একটু দূরে দূরে দাঁড়িয়ে আছেন আরও ৯-১০ জন। ওই পথ দিয়ে হেঁটে যেতেই নারী বললেন, ওই কয়ডা লাগবে? কয় টাকার? দেখা গেল, বিক্রেতাদের হাঁকডাকের মধ্যে মাদক কিনে দ্রুত সরে যাচ্ছে ক্রেতারা। কেউ পায়ে হেঁটে আসেন, কেউ মোটর সাইকেলে আবার কেউ প্রাইভেটকারে আবার কেউ হোন্ডা থেকে নেমে গাঁজা রাখা পুরো ব্যাগটি ধরে নিয়ে যাচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মাদকসেবীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাদের কাছ থেকে ধনী-গরিব সবাই মাদক ক্রয় করে। সন্ধ্যার পরে বেশি লোক আসে। ৫০-১০০ টাকার পুঁটলা বিক্রি হয়।
আবার কেউ কেউ বেশি টাকায় ক্রয় করে।আবার কেও ইয়াবা কিনতে আসে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক মাদকসেবী বলেন, ছোটবেলা থেকেই এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। আমরা এখানে ঘোরাঘুরি করি। আমাদের কাজই এটা। এগুলো পুঁটলা হিসেবে বিক্রি হয়। এক পোঁটলা ১০০ টাকা। আবার ৫০ টাকারও আছে ইয়াবাও। এখানে পুরুষ-মহিলা অনেকেই এগুলো বিক্রি করে। প্রতি প্যাকেটে আড়াইশ’ টাকা লাভ হয়। এদিকে একশ’ গ্রাম পাঁচ-ছয় হাজার টাকা দাম। ওই ১০০ গ্রামে দশ হাজার টাকা পাবেন। পাঁচ হাজারে পাঁচ হাজার টাকাই লাভ। তিনি বলেন, অনেকে এখান থেকে নিয়ে এলাকায় বিক্রি করে। এখানে রাত দশটা-এগারোটা পর্যন্ত বেচাকেনা হয় জমজমাট। গাঁজা সবাই খায়। সব ভালো ভালো লোকে কিনে নিচ্ছে এগুলো। এই ব্যবসায় কোনো লস হয় না। এটা তো কাঁচামালের ব্যবসা। গাঁজা বিক্রি করার টাকায় সংসার চালাই। সীমন্তবর্তী এলাকা থেকে এই মাদকগুলো আসে। সেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের লোক এসে দিয়ে যায়।
শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক আফজাল হোসেন মন্ডল বলেন স্বৈরাচার সরকার পতনের প্রশাসনের নীরব ভূমিকা থাকায় বেড়েছে মাদক বানিজ্য যৌথবাহিনির বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে কাওরাইদ থেকে মাদক নির্মূল করতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
কাওরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাবুদ্দিন বলেন,
অনেকেই আড়ালে থেকে মাদক ব্যাবসায়ীদেরকে শেল্টার দেয় তাদের কে চিন্হিত করে আইনের আওতায় আনা হোক।যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জাফর আহমেদ বলেন, কাওরাইদে মাদক দিনদিন বাড়ার কারনে যুবসমাজ ধ্বংসের দিকে।এদের প্রতিহত করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
লাল সবুজ যুব ও ক্রীড়া সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি বলেন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবনকারীদের কে, থানা পুলিশের নিকট ধরিয়ে দিন, যেখানে মাধব সেখানে অপরাধ, এলাকাবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি, এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। কাওরাইদ ইউনিয়ন সাবেক ছাত্রনেতা শেখ সোহেল বলেন,মাদক ব্যাবসায়ীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী এদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া অতীব জরুরী।
ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা রিয়াদ মন্ডল বলেন,মাদকের ভয়ালথাবা থেকে যুব সমাজকে রক্ষা করতে প্রশাসনকে বিনীত অনুরোধ করছি।স্থানীয়রা জানান কাওরাইদ বেলদিয়া এলাকার চিন্হিত মাদকব্যাবসায়ী সেলিম, কালিবাড়ির মাদক সম্রাজী নূরজাহান, আশরাফুল,কাওরাইদ মধ্যে পাড়া এলাকার হিমুর মা নামে পরিচিত, কাওরাইদ মরল পাড়া এলাকার আছমত বাজারের সোহাগ পিছিয়ে নেই মাদক ব্যাবসায় জানা গেছে এদের নামে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে এবং একাধিক বার মাদক সহ গ্রেফতার হয়েছে। অনুসন্ধান বলছে এসব মাদক কারবার করে অনেকেই হয়েছে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ। অনেকের রয়েছে মাদক ব্যাবসার কালো টাকার পাহাড়।
বাপতা গ্রামের হাবিবুর, মোফাজ্জল হোসেন চান মিয়া, সাইফুল ইসলাম (আগুন), রনি – এই মাদক ব্যবসায়ী জড়িত আছেন, নান্দিয়া সাঙ্গন থেকে মাদক ব্যবসায়ী সাদ্দাম, হেলাল এবং মাদকের গডফাদার হোমায়ন কবির ওরফে (টাইগার) নামে পরিচিত তারাও এই মাদক ব্যবসায় জড়িত আছেন ।
মাদকের অনুসন্ধানে ০৪/১২/২০২৪ ইং নান্দিয়া সাঙ্গন সংবাদ কর্মী যাওয়ার পর, হাতেনাতে সাদ্দাম ও হোমনায় কবির ওরফে (টাইগার) ইয়াবা সহ পাওয়া যায় । সংবাদ কর্মীর ভিডিও করার কারণে, সংবাদ কর্মীর উপর হামলা করেন, সংবাদ কর্মীকে মারধর করেন, এবং সংবাদ কর্মীর মানি ব্যাগ সহ অ্যাকশন ক্যামেরা রেখে দেন ও ভিডিও করার কারণে মাইক্রোফোন ভেঙ্গে ফেলেন, এদের মধ্যে অনেকে টাকার মালিক হলেও থাকেন গরীবী হালে।এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদিন মন্ডল বলেন,মাদকের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে,আমার এরিয়াতে কোন মাদক থাকবেনা,প্রতিনিয়ত মাদকব্যাবসায়ীদের নামে মামলা হচ্ছে, কাওরাইদের এই বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।