ইউনুছ, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের একটি পুকুরে বিষ প্রয়োগে দুই-অাড়াই লক্ষাধিক টাকার মাছ নিধনের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। রোববার (৩০ জানুয়ারি) গভীর রাতে ওই ইউনিয়নের পোড়ার ভিটা নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সকালে মাছ মরে ভেসে উঠতে থাকে।ভুক্তভোগী পরিবারটির অভিযোগ, পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন আমার পরিবারকে বিভিন্নভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা চালায়। সরাসরি ক্ষয়ক্ষতি করতে না পারলে গেল রাতের অন্ধকারে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করেন তারা। এতে পুকুরে থাকা ১২-১৩ মণ মাছ মারা গেছে।
যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইউনিয়নের পোড়ার ভিটা নামক এলাকার মৎস্য চাষী মো. অানোয়ার হোসেন নিজ বাড়ির পার্শ্ববর্তী প্রায় ৪৪ শতক জমিতে মাছের খামার করেছেন। বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় তার ৪৪ শতকের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে দুর্বৃত্তরা। এতে পুকুরটিতে চাষ করা কার্পু, গ্লাস কাপ, সরপুটি, কাতল, রুই, বাটা, ব্রিগেড, সিলভার কাপ, শিংগি সহ দেশীয় বিভিন্ন প্রজাতির দুই লক্ষাধিক টাকার মাছ মারা যায়। রোববার সকালে পুকুরপাড়ে গিয়ে মাছ মরে ভেসে উঠতে দেখে হতবাক হয়ে যান অানোয়ার হোসেন। অানোয়ার হোসেন জানান, তার বাড়ি ছিল পার্শ্ববর্তী গ্রামে। পরবর্তীতে সে এই গ্রামে এসে বাড়ি করলে ২০০৭ সাল থেকে তার প্রতিপক্ষরা তাকে এ এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার জন্য নানা রকম হুমকি ধামকী দিয়ে অাসছে। সে বাড়ীর পার্শ্ববর্তী পুকুরে মাছের প্রজেক্ট করে জীবিকা নির্বাহ করে অাসছে।
প্রতিপক্ষরা সেখানেও নানাভাবে বাধা প্রদান সহ অত্যাচার করে অাসছে। ওই অবস্থায় শনিবার রাতে পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে তার দুই লক্ষাধিক টাকার মাছ বিষ প্রয়োগে মেরেছে বলে তিনি সন্দেহ করছেন। আনোয়ার হোসেন বলেন, গত ১৪-১৫ বছর আগে পোড়ার ভিটা এলাকায় বাড়ি করি। সেসময় অনেক কষ্ট করে একটি পুকুর খনন করি। সেই পুকুরে মাছ চাষ করেই কোনরকম ভাবে সংসারটা চালাচ্ছি। এখানে বাড়ি করার পর থেকে প্রতিপক্ষের লোকজন বিভিন্ন ভাবে আমার ক্ষতি করে আসছে।
গেল রাতে তারা আমার পুকুরে বিষ দিয়েছে। এতে আমার পুকুরে থাকা ১২-১৩ মণ মাছ মারা গেছে। ঋণের টাকা নিয়ে মাছ চাষ করেছি। এখন আমার কি হবে। তারা আমাকে রাস্তায় নামিয়ে দিল আমার ভিক্ষা করা ছাড়া আর কোন পথ নাই।আনোয়ারের ছেলে জনি বলেন, আমি ডিগ্রী তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। আমার বাবা মৎস্য চাষী এই ব্যবসা করেই বাবা আমার পড়াশোনার খরচ বহন করে। মৎস্য চাষ করেই বাবা কোনরকম সংসারটা চালাচ্ছে।
প্রতিপক্ষের লোকজন রাতে বিষ দিয়ে পুকুরের মাছগুলো মেরে ফেলেছে। এখন আমাদের কি হবে। যারা পুকুরে বিষ দিয়েছে তাদের বিচার চাই আমি।প্রতিবেশি একরামুল হক ও তৈয়ব আলী বলেন, আনোয়ার ভাই মাছ চাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। কেবা কাহারা রাতের আধারে তার পুকুরে বিষ প্রয়োগ করেছে। তার পুকুরে থাকা বেশির ভাগ মাছেই মারা গেছে। যারা এ কাজ করেছে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। এবিষয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মোহাম্মদ শাহারিয়ার বলেন, ওই মৎস্যচাষী থানায় এসেছে অভিযোগ দিলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
১৪ views