আরশাদুল ইসলাম ঝন্টু কেশবপুর যশোর প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ যশোরের কেশবপুরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারনে কেশবপুরে বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছেন ৪৪২ জন ছাত্রী। করোনাকালে মাধ্যমিক পর্যায়ে ৪৪২ ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, করোনার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় অভিভাবকরা তাদের মেয়েদের গোপনে বিয়ে দিয়েছেন। বাল্য বিয়ের শিকার ওই ছাত্রীদের এখন ঠাঁই হয়েছে শ্বশুর বাড়ি।অভিভাবকদের অসচেতনতার কারণেই ছাত্রীরা বাল্য বিয়ের শিকার হচ্ছে বলে সচেতন মহলও বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। তবে নতুন করে কোন ছাত্রী যেন বাল্য বিয়ের শিকার না হয় সে বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিস, শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিয়ে কাজ শুরু করেছেন।উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুরে ৭২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫২টি মাদ্রাসা রয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৬ হাজার। করোনার কারণে ৫৪৪ দিন বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গত ১২ সেপ্টেম্বর খুলেছে। সম্প্রতি মাধ্যমিক স্তরের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান হাজিরা খাতা অনুযায়ী অনুপস্থিত, ঝরে পড়া ও বিবাহিত শিক্ষার্থীর তথ্য উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে ৭২টি মাধ্যমিক বিদ্যলয়ের ২৫৩ জন ও মাদ্রাসার ১৮৯ জন শিক্ষার্থী বাল্য বিয়ের শিকার হয়েছে।প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক বাল্য বিয়ের শিকার হওয়া ছাত্রীদের নামের তালিকা শিক্ষা অফিসে জমা দেওয়ার বিষয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের হিসাব রক্ষক শ্যামল কুমার সিংহ নিশ্চিত করেছেন।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি এবং কানাইডাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সামাদ বলেন, গত সোমবার সমিতির সভা করা হয়েছে। ওই সভায় প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে শিক্ষক ও অভিভাবকদের সমন্বয়ে বাল্য বিয়ে রোধসহ ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কক্ষে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই শ্রেণি কক্ষে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ফিরে এসেছে।উপজেলা নাগরিক সমাজের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে বাল্য বিয়ের শিকার ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রত্যেক সচেতন মানুষকে এগিয়ে আসা উচিত। তাছাড়া নতুন করে কোন ছাত্রী বাল্য বিয়ের শিকার না হয় সে বিষয়েও শিক্ষক ও অভিভাবকদের কাজ করতে হবে।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠান প্রধান ও অভিভাবকদের সঙ্গে মতবিনিময় করে শিক্ষার্থীদের ক্লোজ মনিটরিং করা হচ্ছে। যারা অনিয়মিতভাবে যাতায়াত করছে তাদেরকে নিয়মিত করতে শিক্ষকদেরও বাড়ি বাড়ি যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যাতে করে কোন শিক্ষার্থী ঝরে না পড়ে এবং বাল্য বিয়ের শিকার না হয়।’
১ view