সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষ পর্যন্ত বার্সেলোনার কোচ হিসেবে কাতালান জায়ান্ট ক্লাবটিতে ফিরে এলেন ক্লাবটির কিংবদন্তী ফুটবলার জার্ভি হার্নান্দেজ। যদিও তার ফিরে আসাটা এমন এক সময় যখন বার্সেলোনায় চলছে ক্রান্তিকাল। খাদের কিনারা থেকে প্রিয় ক্লাবকে টেনে তোলাই এখন এ সাবেক তারকা মিডফিল্ডারের মূল চ্যালেঞ্জ।
২০১১ সালে ক্লাবের তৎকালীন কোচ পেপ গার্দিওলা বলেছিলেন, যখন জাভি ফুটবল ছেড়ে দিয়ে শুধু ম্যাচগুলো উপভোগ করবে তখন আমি নিশ্চিত সে এই ক্লাবে কোচ হিসেবে ফিরে আসবে। ১০ বছর পর গার্দিওলার সেই ভবিষ্যদ্বানী সত্যি হলো।
গার্দিওলার অধীনে আমুল বদলে যাওয়া সেই সফল বার্সেলোনাকেই পুরো ফুটবল বিশ্ব মাঠে দেখতে চায়। আর সেই কাজ সম্পাদনে ক্লাবকে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করার জন্য গার্দিওলার প্রিয় শিষ্যর থেকে এই মুহূর্তে যোগ্য ব্যক্তি আর কেউ হতে পারে না।
কাতারের ক্লাব আল সাদের হয়ে কোচের দায়িত্ব পালন করছিলেন জাভি। শুক্রবার ক্লাবটি টুইট করে জানায়, বার্সেলোনা রিলিজ ক্লজের অর্থ পরিশোধ করতে রাজি হওয়ায় তারা জাভিকে ছেড়ে দিতে রাজি।
বার্সেলোনার হয়ে দারুণ এক ক্যারিয়ার রয়েছে জাভির। ক্লাবটির যুব একাডেমিতে বেড়ে উঠা সাবেক এ মিডফিল্ডার ক্লাব ছাড়ার আগে দলটির হয়ে খেলেন রেকর্ড ৭৭৯ ম্যাচ। ক্যাম্প ন্যুতে থাকাকালীন চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, আটটি লা লিগ ও তিনটি কোপা ডেল রে’সহ জিতেছেন মোট ২৫টি শিরোপা। মিডফিল্ডার হিসেবে তার সময়ে কোন খেলোয়াড়ই এত লম্বা সময় ধরে এই পজিশনে নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে পারেনি।
আন্তর্জাতিক অর্জনের দিক থেকেও পিছিয়ে নেই জাভি। স্পেনের হয়ে ২০১০ বিশ্বকাপ ও দুটি ইউরো শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব রয়েছে তার। পরিসংখ্যানের দিক থেকে স্পেনের ফুটবল ইতিহাসে জাভি সবচেয়ে সফল খেলোয়াড়। লিওনেল মেসি তার সাথে না খেললে ব্যালন ডি’অর জাভিরই প্রাপ্য ছিল। পরপর তিনবার জাভি এই তালিকায় তৃতীয় হয়েছেন। ২০১৫ সালে জাভি বার্সেলোনা ছেড়ে প্রথমে আল সাদে খেলোয়াড় হিসেবে যোগ দেন। পরে ২০১৯ সালে দলটির কোচের দায়িত্ব নেন। তার হাত ধরে দলটি জিতেছে একটি করে কাতার স্টার্স লিগ ও কাতার সুপার লিগ এবং দুটি করে কাতার কাপ ও আমির অব কাতার কাপ। লিগে অপরাজিত আছে রেকর্ড ৩৬ ম্যাচ ধরে।
গত বছর জাভি বলেছিলেন, ‘আমার মূল লক্ষ্য হচ্ছে বার্সেলোনার হয়ে কিছু করা। এটা আমার বাড়ির মত, এখানে ফিরে আসতে পারাটা স্বপ্ন সত্যি হবার মতই ঘটনা।’