রেদোয়ান হাসান,সাভার,ঢাকা,প্রতিনিধি,দৈনিক শিরোমণিঃ
ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র দুইদিন। ঈদ আপ্যায়নে বাঙালির ঘরের অন্যতম প্রধান অনুসঙ্গ সেমাই। ঈদের দিনের আনুষ্ঠানিকতা শুরুই হয় সেমাই খেয়েই। ঈদ কেনাকাটার শেষাংশে মানুষ ছুটছে সেমাই ও চিনির দোকানগুলোতে।অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও ঈদকে ঘিরে দোকানগুলোতে ভিড় বেড়েছে। ভিড়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে এসব জিনিসপত্রের দামও। সুযোগ বুঝে কেজিতে চিনির দাম কেজিতে ৩-৪ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু আগের মতো দামেই বিক্রি হচ্ছে সেমাই। তবে দোকানগুলোতে বিক্রি বাড়েনি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।সাভার আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এসব চিত্র। বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা যায়, মুদি দোকানগুলোতে থরে থরে প্যাকেট ও বস্তায় খোলা সেমাই সাজিয়ে রেখেছেন দোকানিরা।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্যাকেটজাত কোম্পানির মধ্যে বনফুল, প্রাণ, ওয়েল ফুড, কুলসন, কিশোয়ান, ড্যানিশ ও প্রিন্স ব্র্যান্ডের ২০০ গ্রাম লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়। আর ৫০০ গ্রামের স্পেশাল লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১২০ টাকায়। খোলা সেমাইয়ের মধ্যে লাচ্ছা, লম্বা সেমাই বাজারগুলোতে বেশি দেখা যায়। প্রতিকেজি লম্বা সেমাই বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লাচ্ছা সেমাই প্রকার ও কোম্পানি ভেদে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। ‘লকডাউন’র জন্য কেউ কারো বাসায় যাচ্ছে না। অতিথি সমাগম কম হবে। তাই ক্রেতারা সেমাই ও চিনি নিচ্ছেন শুধু যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু।জানতে চাইলে সাভারের অন্ধ মার্কেটের পিংকি স্টোরের মালিক আলতাফ হোসেন বলেন, ক্রেতারা সাধারণত ঈদের কয়েক দিন আগ থেকে সেমাই কিনতে শুরু করেন। ঈদ যত এগিয়ে আসছে সেমাই বিক্রি তত বাড়ছে। তবে এ বছর ক্রেতা এলেও আগের মতো পণ্য বিক্রি হচ্ছে না।তিনি বলেন, ‘লকডাউন’র জন্য কেউ কারো বাসায় যায় না। তাই ক্রেতা বাড়লেও বিক্রি বাড়েনি। বাড়তি চাহিদা কম। এজন্য ক্রেতারা প্রয়োজনের অতিরিক্ত সেমাই নিচ্ছে না। এ বছর প্যাকেটজাত সেমাইয়ের চাহিদা বেশি।সাভার নামা বাজারের মীম স্টোরের মালিক নান্টু খান বলেন, বাজারে সব প্যাকেটজাত সেমাইয়ের প্যাকেটের গায়ে লেখা দামের চেয়ে কমে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে খোলা সেমাই প্রকার ও মানের ভিত্তিতে দাম কম বেশি নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। শুধু চিনির দাম কেজিতে তিন থেকে চার টাকা বেড়েছে।এদিকে প্যাকেটজাত সেমাইয়ের পাশাপাশি দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে খোলা সেমাইও। বাজারগুলোতে খোলা চিকন সেমাই বিক্রি হচ্ছে এক কেজি ৫০ টাকা করে। দুই ধরনের খোলা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে এখানে। একটা সাদা, আরেকটা রঙিন। সাদা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়, রঙিনগুলো ১২০ থেকে ২০০ টাকায়। এখানে খোলা চিনির খুচরা মূল্য ৭০ থেকে ৭২ টাকা।
কথা হয় কয়েকজন সেমাই কিনতে আসা ক্রেতার সঙ্গেও। জানতে চাইলে সাভারের ব্যাংক কর্মকর্তা শুভঙ্কর বাদল বলেন, ঈদের দিনের শুরুই হয় সেমাই খেয়ে। এরপর ঈদের নামাজে যাই। অন্যান্য কেনাকাটা শেষে এখন সেমাই কিনতে এসেছি। বাজারে সেমাইয়ের দাম না বাড়লেও চিনির দাম বেড়েছে। অসাধু ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত মুনাফা পাওয়ার জন্য এ কাজ করে থাকেন। এটা ঠিক না।লিস্ট দেখে দেখে বাজারে কেনাকাটা করছিলেন খালিদ রাব্বি। তিনি বলেন, পোলাওর চাল, তেল, লবন সবই কিনেছি। লিখে না আনলে ভুলে যাই। এখন দেখে দেখে কিনছি। সেমাই ও চিনি কেনা শেষ হলেই আপাতত সমাপ্তি।তিনি বলেন, সেমাই আগের দামে বিক্রি হলেও চিনির দাম কেজিতে তিন থেকে চার টাকা বেড়েছে।উল্লেখ্য, বাজারগুলোতে চিনির দাম কিছুদিন আগে ৫০ কেজির চিনির বস্তা ৩ হাজার টাকায় থাকলেও বর্তমানে তা ৩৪০০ করে কিনতে হচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে বাজারে। চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৭২ টাকায়, যা ১০ দিন আগেও ছিল ৬৭ টাকা থেকে ৬৮ টাকা। এছাড়া প্যাকেটজাত লাল চিনি বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৭৫ টাকা থেকে ৮০ টাকায়।
২ views