ইকবাল হোসেন, পাইকগাছা উপজেলা প্রতিনিধি: উপকূলীয় এলাকার সাদা সোনা বলে খ্যাত চিংড়ি শিল্পে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন পাইকগাছার সফল ব্যবসায়ী রয়্যাল ফিস ট্রেডিং এর স্বত্তাধিকারী গোলাম কিবরিয়া রিপন। উচ্চ শিক্ষিত রিপন চাকুরির পিছনে না দৌড়ে চিংড়ি ঘের ও বাগদার পোনা উৎপাদন শিল্পে জড়িত হয়ে আজ সফল ও স্বাবলম্বী হয়েছেন। পেয়েছেন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ চিংড়ি চাষির মর্যাদা ও সম্মাননা পুরস্কার।
খুলনার বয়রা রায়ের মহলের বাসিন্দা প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী প্রয়াত নজির আহমেদ এর ছেলে গোলাম কিবরিয়া রিপন বিগত ২০০১ সালে পাইকগাছায় বাগদা চিংড়ি পোনা ব্যবসা ও পরবর্তীতে ২০০৭ সালে দেড়’শ বিঘার ইজারাকৃত জমিতে লবন পানির চিংড়ি চাষ শুরু করেন। এখন তার সুন্দবন সংলগ্ন দু’উপজেলা পাইকগাছা-কয়রায় চিংড়ি ঘেরের সংখ্যা ৬টি। যার জমির পরিমান ১৮শত বিঘা। জানাগেছে, এসব ঘেরের অধিকাংশ জমি ইজারাকৃত। তিনি উন্নত সনাতন পদ্ধতি’র চিংড়ি চাষ ও পোনা উৎপাদন ও ব্যবসা করে প্রতিবছর ১৩ থেকে ১৫ কোটি টাকা আয় করে থাকেন। ৫০ কোটির অধিক বাগদার হ্যাচারি পোনা উৎপাদন করেন।
ঘের ও পোনা ব্যবসায়ী দুটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় সাড়ে ৪শ শ্রমিক-কর্মচারী জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। পরিবেশ প্রতিকূলতার মধ্যেও তিনি মৎস্য সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগীতায় চিংড়ি ঘের ব্যবসায় সাফল্য অর্জন করেছেন। তিনি এখন খুলনা বিভাগীয় পোনা ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও পাইকগাছা উপজেলা চিংড়ি চাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি ধর্মীয়, ক্রীড়া,সামাজিক -সাংস্কৃতিক ও উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে ভূমিকা রেখে চলেছেন। ইতোমধ্যে তিনি স্বীকৃতি স্বরুপ ২০১৩ সালে খুলনা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পর-পর ২০১৬ থেকে ২০১৮সাল পর্যন্ত শ্রেষ্ঠ চিংড়ি চাষি হিসেবে পুরষ্কৃত হয়েছেন। সর্বশেষ ২০২৩ সালেও উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে পুরষ্কার স্বরুপ সম্মাননা ক্রেস্ট অর্জন করেছেন।
এত সফলতার পিছনে, গোলাম কিবরিয়া রিপন জানান, বি,এল কলেজ থেকে এম,এ পাশ করে চাকুরির পিছনে না ছুটে চিংড়ি ঘের ও পোনা ব্যবসায় যুক্ত হয়ে পিছনে তাকাতে হয়নি। এ শিল্পের সাথে সম্পৃত্ত থেকে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করছি। তিনি আরোও বলেন, গত সরকারের স্থানীয় সাবেক এমপি ও তার অনুসারীরা চিংড়ি চাষ বন্ধের বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়।
এর বিরুদ্ধে চিংড়ি ঘের মালিক ও পোনা ব্যবসায়ী ও এর সাথে সংশ্লিষ্টদের সংগঠিত করে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করেছি।
সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক বলেন, উপজেলায় এখন ২০ হাজার হেক্টর জমিতে লবন পানির চিংড়ি চাষ হয়।
চিংড়ি ঘের মালিকদের মধ্যে গোলাম কিবরিয়া রিপন একজন সফল চিংড়ি চাষী। তিনি ব্যবসায়ী রিপনকে অনুসরণ করে উন্নত সনাতন পদ্ধতির চিংড়ি চাষে সফল হতে অন্যান্য চিংড়ি চাষীদের এগিয়ে আসার প্রত্যাশা করেন।