শেখ তোফাজ্জেল হোসেন,খুলনা সিটি প্রতিনিধিঃ সর্বাত্মক বা কঠোর লকডাউনে সরকারি বিধি নিষেধ
অমান্য করায় খানজাহান আলী থানা পুলিশ শতাধিক অটোরিক্সা আটক করে থানায় জব্দ করেছে।
এ সকল যানবাহনের বিরুদ্ধে কোন মামলা না হওয়ায় লকডাউন শেষে স্ব-স্ব চালকের নিকট গাড়ী
গুলোকে পুনরায় হস্থান্তর করা হবে বলছে পুলিশ। জরুরী প্রয়োজনে গাড়ী নিয়ে বের হওয়া
আটককৃত এ সকল অটোরিক্সার ব্যাটারী নষ্ট হওয়ার আশংকায় ফেরৎ পেতে থানার সামনে অবস্থান
নেয় আটককৃত গাড়ীর চালকরা। আয়ের একমাত্র বাহন এভাবে নষ্টের হাত থেকের রক্ষা করতে একটি
বার সুযোগ চান তারা। দেশে গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউন বা সর্বাত্মক
লকডাউনে খানজাহান আলী থানা পুলিশের হাতে আটক মাহেন্দ্র, ইজিবাইক, মটরভ্যান সহ
অর্ধশতাধিকের উপর ছোট যান আটক করে থানার মধ্যে খোলা আকাশের নিচে রাখা হয়েছে।
কঠোর লকডাউনের মাত্র দু দিনে থানার অভ্যন্তরে আটক অটোরিক্সায় ভরে গেছে। গতকাল শুক্রবার
বেলা পৌনে ১২টায় এ সকল গাড়ীর চালকরা থানার সামনে অবস্থান নিয়ে গাড়ী গুলোকে মুচলেকা
দিয়ে ফেরৎ নিতে বিক্ষোভ করে। তারা প্রশাসনের উর্ধতন মহলের দৃষ্টি আকর্শন করে বলেন পরিবার
গুলোর বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেওয়ার। এদের মধ্যে ইজিবাইক
চালক হাবিবুর রহমান বলেন আমার বাড়ীর সামনে থেকে আমার গাড়ীটি পুলিশ আটক করে নিয়ে
এসেছে। আমি অনেক অনুরোধ করে তাদেরকে বলেছি আমি যাত্রী বহনের জন্য গাড়ী বের করিনি
আমি ঔষধ আনতে শিরোমণি যাওয়ার জন্য বের হয়েছি। আমার কোন কথা না শুনে তারা আমার
ইজিবাইকটি থানায় নিয়ে আটকে রেখেছে। এভাবে দু’তিন দিন থাকলে আমার গাড়ীর
ব্যাটারী ডাউন হয়ে গাড়ীটি চালানোর অনুপযোগী হয়ে যাবে। প্রতিটির ব্যাটারীর মূল্য
প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা আর এ ব্যাটারী গুলো নষ্ট হয়েগেলে পুনরায় ব্যাটারী কেনার
সমার্থন তাদের নাই। মহেন্দ্র চালক আজগর জানান, মা.বাবা, স্ত্রী সন্তান সাত জনের সংসারে
উপারজনের একমাত্র ব্যক্তি আমি। একদিন গাড়ী না চালালে সংসার চলে না তার পরও লকডাউনে গাড়ী
বন্ধ রেখেছিলাম। জরুরী প্রয়োজনে রাস্তায় নামতেই আমার গাড়ীটি পুলিশ আটক করে নিয়ে
যায়। মাহেন্দ্র চালক আজগর আরো বলেন সরকার আমাদেরকে আর্থিক কিছু সহযোগিতা
করলে লকডাউনে আমরা গাড়ী বন্ধ রেখে ঘরে অবস্থান করবো কথা দিচ্ছে আমরা গাড়ী নিয়ে
আমরা আর রাস্তায় বের হবো না। মটরভ্যান চালক ইব্রাহিম বলেন গরীবের কথা কেউ শোনেনা।
সারাদিন গাড়ী চালিয়ে যা পাই তাই দিয়ে চাল-ডাল কিনে নিয়ে যাই। কিন্তু লকডাউনে আয় বন্ধ করে মরার পথ হয়েছে। এর উপর এভাবে ভ্যানটি আটকে রাখলে একমাত্র আয়ের উৎস ভ্যানটি নষ্ট হয়ে যাবে। থানার সামনে অবস্থান নেওয়া সকলে প্রথম বারের মতো মুচলেকা নিয়ে আটক ছোট যানগুলোকে ছেড়ে দেওয়ার দাবী জানান। এ ব্যাপারে খানজাহান আলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ প্রবীর কুমার বিশ্বাস অটোরিক্সা
আটকের কথা স্বিকার করে বলেন সর্বাত্মক লকডাউনে সরকারি আর্দেশ অমান্য করে এ সকল
যানবাহন গুলো যাত্রী বহন করায় তাদেরকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। লকডাউন শেষ হলে যানবাহন
গুলোকে স্ব-স্ব ব্যক্তির কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ সকল ছোট যানবাহনের বিরুদ্ধে কোন মামলা
করা হয়নি। আটককৃত অটোরিক্সার ব্যাটারী যাতে নষ্ট না হয়ে যায় সে জন্য যারা ব্যাটারী খুলে নিতে আসছে তাদেরকে দিয়ে দিচ্ছি।