খুলনা বিভাগে লকডাউন কার্যকর করে মানুষকে ঘরে রাখতে নিজেদের জীবনের ঝুকি নিয়ে রাস্তায় আছে স্থানীয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। করোনা নিয়ন্ত্রনে আপ্রাণ চেষ্টা করছে প্রশাসন। কিন্তু করোনার এই পরিস্থিতিতেও কিস্তির টাকার ব্যাপারে কোন ছাড় দিচ্ছে না এনজিও গুলো। এনজিও'র কিস্তির টাকার চাপে রাস্তায় নামতে বাধ্য হচ্ছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও রিকশা ভ্যান চালকরা।
ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকা ও বন্দরনগরী বেনাপোলে করোনা সংক্রমণ বেড়ে গেছে। ফলে সেখানে লকডাউন (বিধিনিষেধ) ঘোষণা করেছে সরকার। এ অবস্থায় বেনাপোলে যানবাহন চলাচল ও অফিস-আদালত, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কিন্তু থেমে নেই এনজিওদের কিস্তি আদায়।
এনজিও থেকে অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ঋণ নিয়ে তাদের ব্যবসার কার্যক্রম চালান। এছাড়া অনেকে আবার ঋণ নিয়ে ইজিবাইক, থ্রি-হুইলার, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন কিনে তা চালিয়ে আয় করেন এবং ঋণের কিস্তি দেন। আবার অধিকাংশ এনজিও বিবাহিত নারীদের সমিতির মাধ্যমে ঋণ দিয়ে থাকে।
কিন্তু সীমান্তের এই শহরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর লকডাউন দিলে কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। এখন এনজিও কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তির জন্য ধরনা দিচ্ছেন, চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ ঋণগ্রহীতাদের।
বেনাপোল পোর্ট থানার দিঘিরপাড়, ভবেরবেড়, নারানপুর, কাগজপুকুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ঋণগ্রহীতারা অভিযোগ করে বলেন, ‘এ সময় আমাদের খাবার যোগাড় করা কঠিন। তারপর এনজিও কর্মীরা মামলা-হামলার ভয় দেখিয়ে কিস্তি আদায় করছেন।’
দিঘিরপাড় গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, ‘একটি ইজিবাইক কিনেছে ব্র্যাক থেকে লোন নিয়ে। এখন রাস্তায় উঠা যাচ্ছে না। কিন্তু ওই এনজিও কর্মীরা এসে ঋণের টাকার জন্য চাপ দিচ্ছেন এবং হুমকি দিচ্ছেন টাকা না দিলে ইজিবাইক নিয়ে যাবেন।’
নাম প্রকাশ না করার সত্ত্বে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায়কারী কর্মচারী বলেন, ‘আমরা চাকরি করি। প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে টাকা আদায়ে। ঠিকমত কিস্তির টাকা আদায় করে অফিসে জমা দিতে না পারলে বেতন বন্ধ। এমনকি চাকরি হারাতে হবে।’
বেনাপোল পৌরসভার ৫ নং দিঘিরপাড় ওয়ার্ডের কাউন্সিলার রাশেদ আলী বলেন, ‘গ্রামের মানুষ তার নিকট অভিযোগ করছে। লকডাউনের মধ্যে তারা খেতে পারছে না। তারপর আবার কিস্তির জন্য চাপ।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্র্যাক, গ্রামীণ ব্যাংক, আশাসহ কয়েকটি এনজিও কর্মীরা গ্রামে এসে দাপট দেখাচ্ছেন। তারা কিস্তি না দিলে মামলারও হুমকি দিচ্ছেন।’
স্থানীয় দরিদ্র মানুষের প্রত্যাশা এ ব্যাপারে প্রশাষন থেকে কোন ঘোষণা আসুক যেন লকডাউন শেষ হবার আগে কিস্তির টাকা নেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করা না হয়।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]