এস,এম শাহাদৎ হোসাইন, গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: গাইবান্ধায় টমেটো চাষ সফল হয়েছে চরাঞ্চলের কৃষক। অন্যান্য সবজির পাশাপাশি বালুচরে ব্যাপকভাবে টমেটোর চাষ করা হচ্ছে। এসব টমেটো দেখতে যেমন ভাল, তেমনই সুস্বাদু ও আকারে বড় হওয়ায় বাজারে চাহিদা প্রচুর। চলতি মৌসুমে টমেটো চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছে কৃষকগণ। গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান সরকার বলেন, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনা নদীর ধু ধু বালুচর এখন সোনারচর। চরে এখন সোনা ফলে। এমন কোন সবজি নেই যে চরে হয় না। বালুচরে এখন সবুজের সমারোহ। কেরোসিন, সোয়াবিন আর লবন ক্রয়ের জন্য চর থেকে শহরে আসতে হয় চরের মানুষকে। তাছাড়া চরে সবই পাওয়া যায়। মোল্লারচরের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বলেন, চরে দরিদ্র নারী হনুফা, সালমা, মর্জিনা, মমতাজ, বেলারানীসহ শতাধিক নারী টমেটোর জমিতে কাজ করেন।
ফলে তাদের পরিবারে আয়ের পরিমাণ বাড়ছে। কুন্দেরপাড়া গ্রামের আফসার বলেন, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনা নদীর বালুচরের মানুষ আগে কাজের সন্ধানে যেতো দেশের বিভিন্ন স্থানে। দিনমজুরের কাজ করে স্ত্রী ছেলে-মেয়েদের খাবার যোগাড় করতে হতো। কিন্তু সে চিত্র এখন বদলে গেছে। গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বেলাল হোসেন বলেন, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদীর বালুচর থেকে শুরু করে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার যমুনা নদীর ১৬৫টি চরে এখন বিভিন্ন জাতের ফসল হয়। আগে চরে শুধু মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টা ও মরিচের চাষ ভাল হতো। এখন অন্য ফসলের সাথে ব্যাপক হারে সবজির চাষ হচ্ছে। চরের বিশাল এলাকা দখল করে নিয়েছে টমেটোর চাষ।
পল্লী উন্নয়ন একাডেমির যুগ্ম পরিচালক ড. আব্দুল মজিদ প্রামানিক বলেন, বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমীর সহযোগিতায় মেকিং মার্কেট ওয়ার্ক ফর দি চর প্রকল্পের আওতায় চরের চাষিদের সংগঠিত করে বীজ সরবাহের চলতি মৌসুমে বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে টমেটোর চাষ করা হয়েছে। লাল ও সবুজ টসটসে টমেটো চরবাসীর ভাগ্য বদলে দিয়েছে। বালুচরের টমেটো আকারে যেমন বড়, দেখতেও সুন্দর। ফলন ভাল হয়েছে। বাজার মুল্য ভাল। কৃষকদের বস্তা ভরে হাটে-বাজারে বিক্রয়ের জন্য যেতে হয় না। দূর-দূরান্ত থেকে পাইকার এসে জমি থেকে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে।