মাইদুল ইসলাম,গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি : গাইবান্ধায় সালিশী সীদ্ধান্ত উপেক্ষা করে পুকুরের দখল স্বত্ব নিয়ে বিরোধ। থানায় মামলা দায়ের। মামলার অভিযোগের বিষয়বস্তু নিয়ে এলাকায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে,গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুপতলা ইউনিয়নের পশ্চিম কুপতলা দক্ষিণ পাড়া গ্রামের কবির হোসেনের স্ত্রী জয়নব বেগমের সাথে একই গ্রামের পাশ্ববর্তী প্রতিপক্ষ মৃত.কলিম উদ্দিনের পুত্র আঃ সালামগংদের জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। মামলার অভিযোগে জয়নব বেগম দাবি করেন, স্বামী কবির হোসেন ক্রয় সূত্রে ১১ শতক জমির মালিক। এ জমির ভোগ দখলীয় পুকুর মিথ্যা দাবী করে গত ৩০-০৩-২০২২ ইং তারিখ দুপুর আনুমানিক ২টায় প্রতিপক্ষ আঃ সালামগং মারপিট,সাধারণ ও গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম, শ্লীলতাহানি,চুরিসহ ভয়ভীতির ঘটনা ঘটায়। এ ঘটনায় জয়নব বেগম বাদী হয়ে প্রতিপক্ষ আঃ সালামসহ ৪ জনকে আসামি করে গত ০৮-০৪-২০২২ ইং তারিখে গাইবান্ধা সদর থানায় মামলা (নং-১০) দায়ের করেন।
এ দিকে, দায়েরকৃত এ মামলার অভিযোগে উত্থাপিত বিষয়বস্তু নিয়ে এলাকায় চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়। মিলছে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য।অনেকেই বলছেন, বিতর্কিত ওই পুকুরটি প্রতিপক্ষ আঃ সালামগংদের পৈত্রিক সম্পত্তি। এ সূত্র ধরে প্রতিপক্ষ আঃ সালামগং দীর্ঘ ৬০/৭০ বছর ধরে মাছ চাষ করে ভোগ দখল করে আসছেন। কবির হোসেন ক্রয় সূত্রে যদি এ পুকুরের মালিক হন তার উচিত ছিল বিজ্ঞ আদালতে ফৌঃ কাঃ বিঃ ১৪৪/১৪৫ ধারায় অভিযোগ দায়ের করে বিতর্কের অবসান ঘটানো। কিন্তু তিনি তা করেননি।
এমতাবস্থায় বিতর্কিত জমিজমার সূত্র ধরে প্রতিপক্ষ আঃ সালামগং গত ১৪-১১-২০২১ ইং তারিখে যদি কবির হোসেনকে মারপিটে গুরুতর আহত করে থাকেন তবে বাদী জয়নব বেগমের উচিত ছিল তাৎক্ষণিকভাবে আইনের আশ্রয় নেয়া। অথচ সে সময়ে অভিযোগ না করে ঘটনার প্রায় ৪ মাস পর অভিযোগ দায়েরের উদ্দেশ্য কি? প্রতিপক্ষ আঃ সালামগংদের হেয়প্রতিপন্ন করা না অন্য কিছু? এছাড়াও একই ঘটনার সূত্র ধরে গত ৩০-০৩-২০২২ ইং তারিখে যদি প্রতিপক্ষ আঃ সালামগং পুকুরের দখল নিতে পুকুরের বাউন্ডারী বেড়া ভাঙ্গচুরসহ রাশিদুল ইসলাম ও বাদী জয়নব বেগমকে লাঠিপেটা করে গুরুতর আহত করে থাকেন তবে হামলার শুরুতেই উচিত ছিল আত্মরক্ষায় চিৎকার দেয়া।
অথচ এ সময় একের পর এক সহিংস ঘটনার শিকার হলেও চিৎকার দেননি। এ ঘটনায় রাশিদুল ইসলাম ও বাদী জয়নব বেগম যদি গুরুতর আহত হয়ে থাকেন তবে মামলা করার স্বার্থে উচিত ছিল হাসপাতালে ভর্তি হওয়া। তা না করে স্থানীয় ডাক্তারের চিকিৎসা নেয়ার বিষয়টি শুধুই হাস্যকর। প্রকৃতপক্ষে এমন ঘটনা যদি ঘটেই থাকে তবে প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আশেপাশের লোকজন সাক্ষী হবার কথা। সেখানে বাদী জয়নব বেগমের নিজস্ব লোকজন শ্বাশুরী কহিনুর বেগম,প্রায় ১ কিমি দূরের মামা শ্বশুর মোস্তফা, প্রায় আড়াই কিমি দূরের চাচা আলতাফ হোসেন, নিজ বাড়ীর জ্যা মনিরা বেগম ও ভাসুর জহুরুল ইসলাম সাক্ষী হলেন কি করে? শুধু তাই নয় ঘটনা ঘটার ৮ দিন পর মামলা করার উদ্দেশ্যই বা কি? আর এমন ঘটনায় বাদী জয়নব বেগম পেরে উঠতে পারবেননা মর্মেই কি পরের দিন পক্ষীয় লোকজন নিয়ে প্রতিপক্ষ আঃ সালামগংদের বাড়ীতে লোকজন না থাকার সুবাদে লুটপাটের ঘটনা ঘটিয়েছেন? বিষয়টি দুঃখজনক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত।
সচেতন মহল বলছেন, জমিজমা নিয়ে বিরোধে গত ০৫-০৪-২০২২ ইং তারিখে উভয়পক্ষের আহবানে এলাকার বিশিষ্টজন রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে একটি সালিশী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ বৈঠকে উভয় পক্ষের কাগজপত্রাদী যাচাই ও পর্যালোচনা পূর্বক সীমানা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এতে করেও ওই বিতর্কিত পুকুরটি প্রতিপক্ষ আঃ সালামগংদের থেকে যায়। এ কারণে প্রতিপক্ষ আঃ সালামগংদের হাঁস যদি পুকুরে নেমে থাকে এতে করে বাদী জয়নব বেগমের ক্ষতির কারণ হতে পারে না। বিষয়টি যেন উদোর পিন্ড বুদোর ঘাড়ে চাপানো।