পাঁচ সদস্যের পরিবারে তিনিই একমাত্র উপার্জনক্ষম। ৫০ শতক জমি বর্গা নিয়ে একের পর এক বিভিন্ন মৌসুমী শাকসব্জী বিক্রিতে তার স্ত্রী শামসুন্নাহারও তাকে সাহায্য করেন। প্রতিটি লাউ আকারভেদে ৭০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পারছেন।
চাষী শামসুল হক বলেন, লাউ চাষের প্রক্রিয়া জানতে তাকে কারও কাছে যেতে হয়নি। ত্রিশ বছর আগে একবার লাউ চাষ করেছিলেন। একদিকে করোনা, অন্যদিকে মেয়ের বিয়ে দেয়া, ছেলের লেখা-পড়ার খরচ চালানো ইত্যাদি কারণে গেল দু’বছর আর্থিক অসচ্ছলতা ছিল। ফলে শাকসব্জীর আবাদ করতে পারেননি।নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এবারের লাউ ফলনে আর্থিক দৈন্যতা পুষিয়ে অধিক মুনাফা আর্জনে সক্ষম হয়েছেন। এতে তার পরিবারের সবাই খুশি।
প্রতিবেশী চাষী শহীদুল্লাহ বলেন, অন্যান্য শাকসব্জীর পাশাপাশি এবারও তিনি লাউয়ের চাষ করেছেন। গেল দু’বছর করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। লাউ ফলিয়ে বিক্রি করতে পারেননি। ওই দু’বছর তার উৎপাদন খরচও উঠেনি। এবার বেশ ভাল ফলন ও আয় করছেন।
প্রতিবেশী জসীম উদ্দিন বলেন, সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিন তিনি লাউ বিক্রি করেন। এ এলাকার টেংরা, তেলিহাটি, টেপিরবাড়ী (ছাতির বাজার) এবং আনসার টেপিরবাড়ী হাটে চাষী শামসুল হক নিয়মিত লাউ বিক্রি করেন। সময় পেলেই তিনি লাউ ক্ষেতে কাজ করেন। এবারের লাউ ফলনে তার অনেক লাভ হচ্ছে। তার চাষবাস দেখে আশপাশের চাষীরাও তার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছেন।
স্ত্রী শামসুন্নাহার বলেন, উৎপাদন খরচের চেয়ে কাজের লোকের মজুরি বেশি। কাজের লোক নিতে গেলে অনেক টাকা লাগে। তাই কাজের লোক না নিয়ে নিজেরাই জমিতে কাজ করে শ্রমিকের টাকায় ছেলের লেখাপড়ারর খরচ চালিয়েছেন। বীজ বপনের ৪৫ দিনের মাথায় ফলন পেয়েছেন। স্থানীয় বাজারগুলো লাউ বিক্রি করে বেশ ভালো আয় পেয়ে পরিবারের সকলেই খুশি।
চাষী আব্দুল বাতেন বলেন, শামসু ভাইয়ের চাষাবাদ দেখে এবার লাউয়ের আবাদ করেছেন। তিনিও ফলন পেতে শুরু করেছেন। প্রত্যাশার চেয়েও বেশি লাভবান হওয়ার আশা করচেন তিনি।
স্থানীয় তেলিহাটী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আইনুল হক বলেন, শামসুল হক একজন সফল চাষী। বিভিন্ন মৌসুুমী ফল ফসলের চাষ করে তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। লাউ চাষে তিনি সবচেয়ে বেশি সফল। তার লাউ চাষ দেখে একই এলাকার আব্দুল বাতেন, নূূরুল হক, ফজলুল হকসহ অনেকেই লাভবান হচ্ছেন।