গুম হওয়া ব্যক্তিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশ তাদের পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে সাদা কাগজে সই নিচ্ছে- গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত খবরের প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। এসব প্রতিবেদনে অতিরঞ্জিত এবং বিকৃত সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে, যাতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ডিএমপি।
শুক্রবার (১৪ জানুয়ারি) ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ‘গুম হওয়া’ সংক্রান্ত দায়ের করা অভিযোগের বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন এবং উপস্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এক্ষেত্রে ভিকটিম এবং অভিযোগ প্রদানকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা, তাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ ইত্যাদি কার্যক্রম পরিচালনা করা পুলিশ বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রথাগত দায়িত্ব।
‘এই দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে পুলিশ মাঝে মধ্যে ভিকটিমের পরিবার কিংবা অভিযোগকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভিকটিমের পরিবার বা অভিযোগকারী ব্যক্তিদের পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করে থাকে।’
ডিসি ফারুক হোসেন বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সবুজবাগ থানা এলাকায় মাহবুব হাসান সুজন নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে পুলিশ ১০ জানুয়ারি তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ সময়ে মাহবুব হাসান সুজনের ভাই মো. শাকিল খান তার ভাইয়ের নিখোঁজ হওয়ার স্থান সম্পর্কে ভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন যা ইতোপূর্বে সবুজবাগ থানার জিডিতে (জিডি নং-৫৩৩, তাং-১১/১২/২০১৩) উল্লেখ নেই।
‘এ ব্যাপারে একটি লিখিতভাবে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপনের জন্য পুলিশ অনুরোধ করলে তিনি বা তার বাবা তা দিতে অস্বীকার করেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি এ বিষয়ে মিডিয়ার কাছে মিথ্যাচার করেছেন এবং বলেছেন, পুলিশ তার বাবার কাছ থেকে সাদা কাগজে সই নেওয়ার চেষ্টা করে। অপরদিকে একই ঘটনায় মাহবুব হাসান সুজনের সঙ্গে নিখোঁজ হওয়া কাজী ফরহাদের বোন এবং ভগ্নিপতি নিখোঁজ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য লিখিতভাবে পুলিশের কাছে উপস্থাপন করেন।’
ডিএমপির এ কর্মকর্তা আরও বলেন, মিডিয়ায় উল্লেখিত অপর ঘটনায় দেখা যায়, পল্লবী এলাকার নিখোঁজ তরিকুল ইসলামের বিষয়ে হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করতে পুলিশ তার বাসায় যায় এবং এ সংক্রান্ত কাগজ পত্রের কপি প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়। পরবর্তীতে তরিকুল ইসলামের স্ত্রী তার শ্বশুরসহ থানায় আসেন। ওই সময়ে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) থানার বাইরে থাকায় তাদের কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু তিনি মিডিয়ার কাছে অভিযোগ করেন পুলিশ তাকে থানায় বসিয়ে রাখে। অথচ ওসি থানায় আসামাত্র তার সঙ্গে কথা বলেন। এর ধারাবাহিকতায় তারা গতকাল (১৩ জানুয়ারি) প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত আছে জানালে পুলিশ তার বাসা থেকে তা সংগ্রহ করে।
ডিএমপি যেকোনো অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে গ্রহণ করে এবং প্রয়োজনীয় অনুসন্ধান বা তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। অনুসন্ধান বা তদন্ত চলাকালে অভিযোগকারী বা ভুক্তভোগীর সঙ্গে যোগাযোগ করা তদন্ত বা অনুসন্ধান কার্যক্রমের অংশ। কিন্তু পুলিশের কার্যক্রমকে হয়রানি হিসেবে উল্লেখ করে উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রচার করা এবং এ সম্পর্কে একতরফা বিবৃতি প্রদান করা পুলিশের তদন্ত কাজে অসহযোগিতার নামান্তর বলেও উল্লেখ করেন ডিসি ফারুক হোসেন।
ভবিষ্যতে এ ধরনের অতিরঞ্জিত, বিকৃত এবং মনগড়া তথ্য প্রকাশ থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে অনুরোধ করেছে ডিএমপি। একইসঙ্গে পুলিশের আইনানুগ দায়িত্ব পালনে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন ডিএমপির এই কর্মকর্তা।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]