ডেস্ক রিপোর্ট দৈনিক শিরোমণিঃ খুলনাগামী রড বোঝাই ট্রাক (সিলেট ট-১১-০৪১১) রাস্তার পাশে উল্টে গিয়ে রডের চাপা পড়ে খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশার (খানাবাড়ী) মান্নান হাওলাদারের বাড়ীর ভাড়াটিয়া ফুলবাড়ীগেট বাজারের ব্যবসায়ী মুজিবর হাওলাদারের পুত্র মো. রিয়াজ হাওলাদার(১৯), দৌলতপুর থানার সেনপাড়ার জব্বারের পুত্র মো. সাব্বির(১৮) ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছে এবং আড়ংঘাটা থানাধিন তেলিগাতী গ্রামের মাহবুব শেখের পুত্র রাহুল শেখ(১৮) ভাগ্যক্রমে বেঁচে গুরুতর আহত হয়েছে। মর্মান্তিক এ দূর্ঘটনায় ট্রাকের চালক মো. হাসান ও হেলপার বিপুল অক্ষত রয়েছে বলে জানাগেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় গোপারগঞ্জের টেকেরহাটের বেন্নাবাড়ী এলাকায় মর্মান্তিক এ দূর্ঘটনা ঘটে। স্থানিয়রা আহত রাহুল শেখকে উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে পরে টাকার অভাবে চিকিৎসা না নিয়ে নিজ বাড়ী তেলিগাতীতে চলে আসে। গতকাল শুক্রবার সকালে নিহত মো. রিয়াজ হাওলাদার ও সাব্বিরের জানাযা শেষে দাফন সম্পন্ন করা হয়।জানাগেছে, খুলনার আড়ংঘাটা থানাধিন তেলিগাতী টিটিসি গেট সংলগ্ন এম আর এন্টারপ্রাইজের একটি ট্রাক(সিলেট ট-১১-০৪১১) চিটাগাং সিটিগেট এলাকা থেকে রড লোড দিয়ে খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় ট্রাকটি গোপালগঞ্জের টেকেরহাটের বেন্নাবাড়ী এলাকায় পৌছালে বিপরীতমুখি একটি গাড়ীকে সাইড দিতে গিয়ে ট্রাকটি রাস্তার পাশে উল্টে যায়। এ সময় ট্রাকের রডের উপরে থাকা ট্রাকের হেলপার মো. রিয়াজ ও রাহুল এবং অন্য একটি ট্রাকের হেলপার মো. সাব্বির রডের নিচে চাপা পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌছে রিয়াজ ও সাব্বিরকে রড কেটে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে এবং ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া তেলিগাতী গ্রামের রাহুল শেখকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরন করে।রাহুল শেখ জানায়, আড়ংঘাটা থানাধিন তেলিগাতীর এম আর এন্টারপ্রাইজের মোস্তাক আহম্মেদের সাড়ে ১৩টন রড নিয়ে তিন দিন আগে চিটাগাং সিটিগেট এলাকা থেকে একটি ট্রাক(সিলেট ট-১১-০৪১১) খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। রড বোঝাই ট্রাকটিতে আমি এবং রিয়াজ ট্রাকের রডের উপরে বসে আসছিলাম। ট্রাকটি চাদপুর ঘাট পার হওয়ার পর আমাদের সাথে যোগ দেয় অন্য একটি ট্রাকের হেলপার সাব্বির। সন্ধ্যা হওয়ায় আমরা তিনজনে ট্রাকের রডের উপর ত্রিপলের উপর শুয়ে পড়ি। ট্রাকটি বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টায় গোপালগঞ্জের টেকেরহাটের বেন্নাবাড়ী পৌছালে ট্রাকটি রাস্তার পাশে উল্টে যায়। এ সময় ঘুমিয়ে থাকা সাব্বির ও রিয়াজ রডের নিচে চাপা পড়ে এবং আমি জেগে থাকায় লাভ দিয়ে গোবরের উপরে গিয়ে পড়লেও রডের একটি লডের নিচে আমার পা চাপা পড়ে। বিকট শব্দে এবং আমাদের চিৎকারে পাশ^বর্তিরা এগিয়ে এসে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। বৌলতলী পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘ্টনাস্থলে পৌছে রিয়াজ ও সাব্বিরকে রড কেটে রডের নিচ থেকে মৃত অবন্থায় এবং আমাকে গোবরের মধ্যে থেকে উদ্ধার করে। ট্রাকের চালক হাসান ও অপর হেলপার বিপুল অক্ষত থাকে।গতকাল শুক্রবার সকালে নিহত রিয়াজ ও সাব্বিরের মরদেহ তাদের বাড়ীতে পৌছালে স্বজনদের আহজারীতে এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। অসহায় দরিদ্র পরিবারের সংসারের হাল ধরতে ট্রাকের হেলপারের কাজ নেওয়া অল্প বয়েসি যুবকদের এভাবে চলে যাওয়া যেন কেহ মানতে পারছেনা। প্রিয় সন্তানের এমন মৃত্যুতে নিহতের স্বজনরা জ্ঞান হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিল। স্বজনদের কান্নায় এলাকার বাতাস ভারি হয়ে উঠে। এদিকে নিহত রিয়াজের জানাযা শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় খানাবাড়ী ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে তাকে যোগিপোল কবরস্থানে দাফন করা হয় এবং নিহত সাব্বিরের জানাযা সকাল সাড়ে ৯টায় সেনপাড়ায় অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা শেষে তার গ্রামের বাড়ী পটুয়াখালীতে নিয়ে দাফন করা হয়। দূর্ঘটনায় গুরুতর আহত রাহুলকে চিকিৎসা শেষ না করেই তেলিগাতীর বাড়ীতে নিয়ে এসেছেন তার স্বজনরা। এ সময় পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলেন দূর্ঘটনার খবর শুনে পাশের বাড়ী থেকে ৫শ টাকা ধার করে গোপালগঞ্জ হাসপাতালে যাই। সেখানে টাকার অভাবে চিকিৎসা না করাতে পেরে বাড়ীতে নিয়ে এসেছি কিন্তু দু.খজনক মাহাজন রাহুলের কোন খোজ খবর নেইনি। রাহুল রডের চাপায় পিঠে, মাজায়, পায়ে এবং হাতে গুরুতর আহত হয়েছে।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]