মো: হোসেন আলী, গোপালগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহীহীনদের আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর একজন সচ্ছল ব্যাক্তির নামে বরাদ্দ হওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করছেন প্রকৃত ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারে সদস্য ও স্থানীয়রা।
উপজেলার সাদুল্লাপুর ইউনিয়নের গোলাবাড়ীতে অবস্থিত আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘরগুলোর মধ্যে ১০ নং হাজরাবাড়ী মৌজায় ১ নং খতিয়ানের ২৫২৪ দাগের জমিসহ দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা ঘরটি সচ্ছল সেলিনা বেগম, স্বামী:দুলাল ফলিফা এর নামে বরাদ্দ হওয়ার এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনায় তথ্য গোপন করে প্রতারনার অভিযোগে স্থানীয়রা একটি গন স্বাক্ষরের আয়োজন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানানোর প্রক্রিয়া শুরু করছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেলিনা বেগম বহরাবাড়ী গ্রামের একজন সচ্ছল নারী, পৈত্রিক ভিটায় তার একটি সুসজ্জিত টিনের ঘর রয়ছে। ঘরের সব দামী ফার্নিচার, টেলিভিশন, ফ্রিজ নিয়ে তার সুখেই দিন কাটছে। এছাড়াও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক স্থানীয়রা জানায়, সেলিনা বেগমের বড় অংকের টাকার সুদের ব্যাবসা রয়েছে। এলাকায় দরিদ্র মানুষের অর্থনৈতিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাদের থেকে চড়া সুদে টাকা আদায় করার অভিযোগও রয়েছে ওই নারীর বিরুদ্ধে। এছাড়াও ঘরটি নিজের নামে বরাদ্দ হলেও সে ওখানে না থেকে তার মেয়ে জামাইকে সেই ঘরের রেখে সরকারের সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
স্থানীয়রা আরো জানান, কোনভাবেই সেলিনা একটি সরকারি ঘর পাওয়ার যোগ্য নয় আমাদের ধারণা স্থানীয় একজন আওয়ামীলীগ নেতা সহযোগিতায় প্রশাসনের সাথে লবিং করে এই ঘরটি হাসিল করেছে। বরং তার চেয়েও গ্রামে অনেক অসহায় ও ভিটা হীন মানুষ রয়েছে তাদের এই ঘরটি পাওয়া উচিৎ।
তথ্য গোপন করে আশ্রয়ন প্রকল্পের সুবিধাভোগ করার বিষয়ে সেলিনা বেগমের সাথে কথা বললে তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, একটি চক্র তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে এমন অভিযোগ তৃলেছে। আমি কোন তথ্য গোপন করিনি তবে আমার অল্পকিছু টাকা সুদে খাটানো আছে৷
এতো সচ্ছল একজন মানুষ কিভাবে আশ্রয়ন প্রকল্পে সরকারি ঘর পায় জানতে চাওয়া হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মাসুদ পারভেজ জানায়, ওটা আমার অনিচ্ছাকৃত ভূল ছিলো। এছাড়াও ব্যস্ততার কারনে সরজমিনে গিয়ে তার পারিবারিক অবস্থা দেখতে পারিনি তাই সেলিনা বেগমের মুখের কথা শুনেই তার তালিকায় নাম তুলে দিয়েছিলাম।
এই বিষয়ে সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা লিপটন মন্ডল বলেন, আমি এখানে পোস্টিং হয়ে আসার আগেই এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হয়ে গিয়েছিল। তাই এই ব্যাপারে আমার কিছুই করার ছিলো না।
কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, গৃহহীন ও ভূমিহীন অসহায় পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর কোনভাবেই সচ্ছল ব্যাক্তির পাওয়ার সুযোগ নেই। সেলিনা বেগম যদি তথ্য গোপন করে প্রতারনার মাধ্যমে প্রকল্পের ঘর নিয়ে থাকে তবে তদন্ত অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।