মোঃ রুবেল আহমেদ, (বিশেষ প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল)
চলমান তাপপ্রবাহের কারনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃকস্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা বিবেচনা করে, সরকারের আগামী ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ অমান্য করায়। একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করেন গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা। বৃহস্পতিবার দুপুরে পৌরসভার সূতি পলাশ মহল্লার দারুল কোরআন ও কওমী মাদ্রাসায় যান। তিনি সেখান গিয়ে দেখতে পান শতাধিক শিশু প্রচন্ড গরমের মধ্যে টিনের ঘরে দমবদ্ধ পরিবেশে ক্লাস করছে। তিনি উপস্থিত হওয়ার পর পরই প্রচন্ড গরমে প্রথম শ্রেণির ছাত্র রায়হান অসুস্থ হয়ে পড়ে। কিন্তু সেখানে কোন পানির ব্যবস্থা ছিলোনা। এমতাবস্থায় তিনি তার গাড়িতে রাখা খাবার পানি এনে শিশুর মাথায় ও চোখমুখে দেয়ার ব্যবস্থা করান। খবর পেয়ে শিশুর বাবা বাছেদ মিয়া সেখান হাজির হন এবং চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে নিয়ে যান।
ওই অভিভাবক পরে স্থানীয় সংবাদকর্মীদের জানান, প্রচন্ড গরমে যেখান কোথাও একদন্ড তিষ্ঠানো যায়না, সেখান প্রতিষ্ঠান প্রধান সরকারি নির্দেশে ছুটি না দিয়ে জলন্ত দুপুর জুড়ে ক্লাস নিয়ে থাকেন। অভিভাবকেরা সন্তানদের ক্লাসে পাঠাতে বাধ্য হন। দিনের অধিকাংশ সময় বিদ্যুৎ থাকেনা। তখন টিনের ঘর নারকীয় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ফলে প্রতিদিনই কোন না কোন শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠান প্রধান আইপিএস বসানোর জন্য শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ফিস আদায় করেছেন। কিন্তু আইপিএস বসাননি। পরে প্রতিষ্ঠানের পরিচালক শেখ সাদী সরকারের নিয়ম লঙ্গন করে ক্লাস চালু রাখায় দুঃখ প্রকাশ করেন এবং সরকারি নিয়ম মানার প্রতিশ্রুতি দিয়ে উপজেলা প্রশাসনকে মুচলিকা দেন।
এরপর পৌরশহরের কোনাবাড়ী বাজারে লাইটহাউজ ল্যাবরেটরী স্কুল এন্ড আলহেরা নূরানী মাদরাসায় তপ্ত দুপুর জুড়ে ক্লাস নেয়ার অভিযোগ পেয়ে ইউএনও সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা সেখানেও হাজির হন। তিনি অভিযোগের সত্যতা খুঁজে পান। ওই স্কুলের কয়েকজন অভিভাবক সংবাদকর্মীদের জানান, স্কুল প্রধান মৌখিক ঘোষণা দিয়েছেন যে, কোন শিশু ক্লাস না করলে পরীক্ষায় নাম্বার কমিয়ে দেয়া হবে। ফলে অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে বাচ্চাদের ক্লাসে পাঠাচ্ছেন। স্কুল ও মাদ্রাসা প্রধান হাবিবুর রহমান ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ এবং মুচলেকা দেন। প্রতিষ্ঠানগুলো জানান, প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের জন্য তারা ক্লাস বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা জানান, স্বাস্থের চেয়ে শিক্ষা বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ উপেক্ষা করে, শিশুদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রেখে কোন প্রতিষ্ঠান খোলা রাখলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]