টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার নগদা শিমলার জগন্নাথবাড়ীতে অবস্থিত সাত গ্রামের সংখ্যালঘুদের শ্মশানঘাটে যাওয়ার রাস্তার এক অংশ জবরদখল করে ভবনসহ চালের মিল ও বয়েল নির্মাণের অভিযোগ উঠে গোপালপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ও নগদা শিমলা ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মোঃ আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে, এর ফলে শতাব্দী প্রাচীন শ্মশানঘাটে শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে যেতে সমস্যার সৃষ্টি হয়, বিল ও চকে কৃষকদের ফসল আনা নেয়া ও জমি চাষাবাদে শুরু হয় নিদারুন দুভোর্গ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সেই বেদখল হওয়া রাস্তা পুনরুদ্ধার করলেন গোপালপুর উপজেলা প্রশাসন। অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়ে শ্মশানঘাটের রাস্তা পুনরুদ্ধার করা হয় ।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সমরেন্দ্র নাথ সরকার বিমল জানান, প্রায় দেড়শ বছর আগে নগদাশিমলা ও হাদিরা ইউনিয়নের মাইজবাড়ী, চতিলা, জগন্নাথবাড়ী, পলশিয়া, নগদাশিমলা, চরশিমলা ও সৈয়দপুর গ্রামের কয়েক হাজার সংখ্যালঘুদের জন্য হেমনগরের জমিদার হেমচদ্র চৌধুরী প্রায় তিন একর জমিতে জগন্নাথবাড়ী শ্মশানঘাট নির্মাণ করেন। শ্মশানঘাটে যাওয়ার জন্য শিমলা বাজার থেকে ২০ ফিট প্রশস্ত এবং দেড়শ গজ দীর্ঘ একটি রাস্তা নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বছর দুয়েক আগে গোপালপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আবুল হোসেন রাস্তা জুড়ে একটি বহুতল ভবনসহ চালের মিল ও বয়েল নির্মাণ করেন। ফলে শ্মশানঘাটে যাওয়া আসা বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিবাদ করলে সংখ্যালঘুদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়, এতে বেকায়দায় পড়েন সংখ্যালঘুরা।
নগদা শিমলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম হোসেন আলী জানান, শ্মশানঘাটের একপাশে বিল আরেক পাশে বিশাল ফসলী মাঠ। বিলে গোছল ও মাছ ধরা এবং ফসলী জমি চাষাবাদ ও ফসল আনা নেয়ার একমাত্র রাস্তা এটি। সুতরাং রাস্তা বন্ধ করে ভবন নির্মাণ করায় সংখ্যালঘুদের দাহ ছাড়াও কৃষকদের চাষাবাদ দারুন সমস্যা হয়।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) সাদিয়া ইসলাম সীমা জানান, মোঃ আবুল হোসনকে কয়েকদফা নোটিশ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি কর্ণপাত না করায় আজ মঙ্গলবার দুপুরে অবৈধ ভবন ভেঙ্গে শ্মশানঘাটের রাস্তা উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।
এ ব্যাপার মোঃ আবুল হোসেনের কাছে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ক্যামেরার সামনে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান, পরে বিস্তারিত জানাবেন বলে সরে যান।
উল্লেখ্যঃ এই নেতা এর আগে নিজের প্রভাব খাটিয়ে জগন্নাথবাড়ীর কইচা বিলের প্রায় দশ একর খাস জায়গা জবরদখল করে দীঘি বানিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। সেটাও উপজেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে দীঘি দখলমুক্ত করেছিলেন।
৮০ views