২৭ মৃত ব্যক্তি জীবিত হয়েছেন। আরও দুই শতাধিক ব্যক্তিকে জীবিত করার চেষ্টা চলছে। এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁরাও পুনর্জীবন লাভ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তবে বাস্তবে নয়, কিছুদিন আগে টাঙ্গাইলের গোপালপুরে হালনাগাদ করা ভোটার তালিকায় এমন চিত্র উঠে এসেছে।
[caption id="attachment_64725" align="alignnone" width="239"] জীবিত থাকার প্রমাণপত্র[/caption]
উপজেলার ধোপাকান্দি ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের নিতাই চন্দ্র দাসের স্ত্রী সাবিত্রী রানী অভিযোগ করেন, গত বছর ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার সময় তাঁকে মৃত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। গত রোববার মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করতে গিয়ে দেখেন ডেটাবেইসে তাঁকে মৃত দেখাচ্ছে। পরে নির্বাচন অফিসে গেলে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছ থেকে জীবিত থাকার সনদপত্রসহ আবেদন করতে বলা হয়।
পরে ধোপাকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলামের কাছ থেকে গত সোমবার এই মর্মে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করেন। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, সাবিত্রী রানী মারা যাননি। তিনি সশরীরে ইউপি অফিসে হাজিরা দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে তিনি জীবিত রয়েছেন। অতএব তিনি বেঁচে নেই, এমন ভুয়া তথ্য সংশোধন করে তাঁকে হয়রানি থেকে মুক্ত করা হোক।
একইভাবে পৌরসভার গাংগাপাড়া গ্রামের আমান আলীর ছেলে শাফিকুল ইসলাম, জোত বিষ্ণুপুর গ্রামের নিতাই দাসের ছেলে দীপক দাসসহ ২৭ জনকে মৃত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করায় স্কুল-কলেজে সন্তানের ভর্তি, বয়স্ক ভাতার টাকা ওঠানো, হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা এবং ব্যাংকের সেবা থেকে ছয় মাস ধরে বঞ্চিত রয়েছেন তাঁরা। অনেকেই ভাতা বা ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা তুলতে না পেরে হয়রানির শিকার হয়েছেন। পরে উপজেলা নির্বাচন অফিসে বিশেষ ফরমে আবেদন করে মৃত তালিকা থেকে তাঁদের নাম প্রত্যাহার করতে সক্ষম হন।
গোপালপুর নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন বলেন, বছরখানেক আগে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য দেড় শতাধিক মাঠকর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁরা সবাই ছিলেন স্কুলশিক্ষক। বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করেন তাঁরা। তাঁদের কাজের নিয়মাবলি শিখিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তাঁরা দায়িত্বে অবহেলা করেছেন। জীবিতদের মৃত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে হয়রানির ব্যবস্থা করেছেন।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান বলেন, মাঠকর্মীদের সন্তোষজনক সম্মানী দেওয়া হয়। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। অথচ কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় আড়াই শ জীবিত মানুষকে মৃত দেখানো হয়েছে। এ সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এই মৃতদের জীবিত করতে এখন হিমশিম খেতে হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘প্রতিদিনই ভোগান্তি নিয়ে সেই ‘মৃত’রা অফিসে আসছেন। আর আমরা প্রমাণ সাপেক্ষে তাঁদের জীবিত করছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনুমোদন দিলে এসব মাঠকর্মীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনে মামলা করা হবে।
ভোগান্তি নিয়ে প্রশ্ন:
এদিকে গোপালপুর উপজেলার নাগরিক সাদিকুর রহমান প্রশ্ন তুলেছেন ভোগান্তি নিয়ে।
তিনি জানান সম্প্রতি তার ভাবির মায়ের নাম ও ভাগ্নের নামের বানান সংশোধন করতে গেলে, একগাদা কাগজ প্রমান হিসাবে হিসাবে চাওয়া হয়। সাথে ভাই বোনের এনআইডি ইত্যাদি।
অথচ জীবিত মানুষকে মৃত করতে কোন প্রমাণ দরকার হয়না। এ ধরনের ভোগান্তি থেকে জনগণের মুক্তি পাওয়া দরকার।
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]