নাজমুল হোসেন, রাজবাড়ি জেলা প্রতিনিধিঃ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের পৌর ৯নং ওয়ার্ডের
কাইমুদ্দিন প্রামানিক পাড়ায় আগুনে পুড়ে তিনটি হতদরিদ্র পরিবার পাশে এসে সহমর্মিতারা হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন গোয়ালন্দে মানবিক জনদরদী এক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী । তিনি গোয়ালন্দ পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড নছর উদ্দিন সরদারপাড়া বাসিন্দা মোঃ সিরাজুল হক। আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়ার তিনটি পরিবারের সদস্যদের জন্য নতুন ঘর তৈরির করে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন।
১লা মে সোমবার সকাল ১০ ঘটিকার সময়ের দিকে সরজমিনে দেখা যায়, গোয়ালন্দ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড কাইমুউদ্দিন প্রামানিক পাড়ায় আগুনে পোড়া নিঃস্ব হয়ে যাওয়া তিনটি পরিবারের
বাড়িতে নতুন ঘরের নির্মাণ কাজ চলছে।
টিনের চৌচালা ঘর তৈরির যাবতীয় সরঞ্জাম নিয়ে হাজির হয়েছে। সেই জনদরদি মানবিক ব্যবসায়ী
সিরাজুল হক।
নিঃস্ব পরিবার তিনটির নতুন ঘর নির্মাণ কাজ
নিজে সশরীরে উপস্থিত থেকে পর্যবেক্ষণ করছেন তিনি।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পৌর ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন রনি, ও পৌর তিন নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা উক্ত ঘর নির্মাণ কাজের দাতা , জন-বান্ধ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সিরাজুল হক।
উল্লেখ্য গত ৬ই এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিকেল আনুমানিক সাড়ে পাঁচটার দিকে কিয়াম শেখের রান্না ঘরের চুলার আগুন থেকে আগুনের সূত্রপাতে
একটি রান্নাঘর ও তিনটি বসতঘর সহ মোট চারটি ঘর আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেই থেকেই তিনটি পরিবার খোলা আকাশের নিচেই বসবাস করছিলো।
নতুন ঘর পেয়ে ভুক্তভুগী পরিবারের অন্যতম সদস্য মোঃ ফারুক শেখ বলেন, আমরা খেটে খাওয়া দিনমজুর মানুষ আমরা দিনে এনেদিনে খাই
হঠাৎ করে বসতবাড়ি আগুনে পুড়ে নিঃস্ব হয়ে যাই
সর্বশেষ থাকার জায়গা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ি। সেই দিন আমাদের ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন রনি ভাই নিজে থেকে তৎক্ষণিকভাবে আমাদের এক মাসের খাবারের সহায়তা করেন এবং একটি ঘর পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। আজ একটি নতুন চৌচালা টিনের ঘরের তৈরীর যাবতীয় সরঞ্জাম এবং ঘর তৈরির শ্রমিকদের মজুরি সহ প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকার
সামগ্রী বুঝিয়ে দিয়েছেন। আমরা পরিবারের সদস্যরা সিরাজুল হক ভাইয়ের কাছে চির কৃতজ্ঞ।
নতুন চৌচালা টিনের ঘরের নির্মাণ কাজের উদ্বোধক, গোয়ালন্দ পৌর ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন রনি বলেন,
৯ নং ওয়ার্ড আমার নিজের এলাকা আগুন লাগার খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমি নিজে গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের খবর দেই। খবর পেয়ে তৎক্ষণিক ছুটে আসে গোয়ালন্দের ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে প্রায় আধাঘন্টার চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। কিন্তু ততক্ষণে বসতবাড়ি সবগুলোই পড়ে ছাই হয়ে যায়। তৎখানে পরিবার তিনটিকে এক মাসের খাদ্য সহায়তা ব্যবস্থা করি। পরের দিন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়র মহোদয়কে নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে। নগদ সাহায্য হাতে তুলে দেওয়া হয় এবং সরকারি ভাবে কিছু টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশা করি এ সকল অচিরেই পেয়ে যাবেন তিনটি পরিবার সরকারি প্রসেসিং একটু দেরি হওয়াতে পরিবারের অসহায়ত্বের কথা ব্যবসায়ী সিরাজুল হক বলেন, তিনি নতুন ঘর তৈরীর প্রতিশ্রুতি দেন। একদিন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্য ফারুক শেখ কে সিরাজুল হকের
কাছে গেলে তিনি সব কিছু শুনে নিজ খরচে নতুন টিনের ঘর তৈরি করে দেয়ার কথা বলেন। তা আজ বাস্তবে রূপ নিচ্ছে। সিরাজুল হক এর মানবিক কাজের জন্য ধন্যবাদ ও চির কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আগুনে পোড়া নিস্ব তিনটি পরিবারের কাছে নতুন ঘরের সকল সরঞ্জাম তুলে দিয়ে নির্মাণ কাজের উদ্বোধন সম্পর্কে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সিরাজুল হক বলেন, আমি বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদের মাধ্যমে এবং পৌর ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নাসির উদ্দিন রনি র মুখে। তিনটি নিঃস্ব পরিবারের সদস্যদের অসহায়ত্বের কথা শুনে তাদের বসবাসের জন্য একটি চৌচালা ঘরের ব্যবস্থা করার প্রতিশ্রুতি দেয়। আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষায় আজ এই নতুন টিনের ঘর তৈরির সকল সরঞ্জাম পরিবারের সদস্যদের হাতে বুঝিয়ে দিতে পেরে আমি মহান আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করছি। অসহায় পরিবারের পাশে যেন
এভাবেই সারা জীবন থাকতে পারি। এজন্য ছোট বড় সকলের কাছে দোয়া কামনা করছি। আজ আমি আমার সামান্য চেষ্টায় একটি নতুন টিনের ঘরের ব্যবস্থা করলাম। এবং সমাজের যে সকল বিত্তবান মানুষ আছেন তাদেরকে নিঃস্ব তিনটি পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি।