এম.এ আউয়াল নরসিংদী প্রতিনিধি,দৈনিক শিরোমণিঃ ঢাকা থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় ঘোড়াশাল পৌরসভার অবস্থান। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত পৌরসভাটির আয়তন ২৭.৫ বর্গকিলোমিটার। এখানে ১ লাখ ১২ হাজার লোকের বাস। মোট ভোটার সংখ্যা ৫৮ হাজার ৩শ’ জন। শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত ঘোড়াশাল শিল্প এলাকা হিসেবে পরিচিত।এখানে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, ইউরিয়া সার কারখানা, জুট মিল, ইস্পাত ও পেট্রোলিয়াম কারখানা রয়েছে। ঘোড়াশাল একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। বর্তমানে মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মো: শরীফুল হক।২০১৬ সালের জুন মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেনকে পরাজিত করে তিনি দ্বিতীয়বারের জন্য মেয়র নির্বাচিত হন। দীর্ঘ সময় মেয়রের দায়িত্বে থেকে তিনি রাস্তাঘাট নির্মাণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, প্রতিটি সড়কের পাশে বাতি স্থাপন, আধুনিক পৌর অডিটোরিয়াম, পৌর কেন্দ্রীয় মসজিদ, পৌর ঈদগাহ নির্মাণসহ দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছেন। তবে কয়েকটি ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতাসহ কিছু সমস্যা এখনও রয়ে গেছে।পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভার রূপকার দুইবারের নির্বাচিত মেয়র মো: শরীফুল হক আসন্ন নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী হতে পলাশ উপজেলা ও পৌর আ.লীগের তৃণমূলের ভোটে সমর্থন পেয়েছেন।পৌর নাগরিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার শুরুতে ঘোড়াশাল পৌরসভায় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা তেমন ছিল না। বর্তমান মেয়র পৌরসভায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন। তার হাত ধরেই পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে। তিনি বিভিন্ন রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার করেছেন। ড্রেন নির্মাণ করেছেন। পৌর এলাকার সৌন্দর্য্য বর্ধনের জন্য বিভিন্ন জায়গায় ফুলের গাছ লাগানোসহ সড়কবাতির ব্যবস্থা করেছেন। পলাশের এমপি ডা: দিলীপের সহযোগিতায় ঘোড়াশাল পৌরসভায় কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। পৌর এলাকায় এখন আর কোনো কাঁচা রাস্তা নেই। নরসিংদীর অন্যান্য পৌরসভার তুলনায় ঘোড়াশাল পৌরসভা এখন ‘উন্নয়নের রোল মডেল’। ঘোড়াশাল পৌরসভার উন্নয়ন-অগ্রগতি প্রসঙ্গে ষাটোর্ধ্ব ইলিয়াস মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক ও মফিজুর রহমানসহ কয়েকজন প্রবীণ বাসিন্দার সাথে কথা হলে তারা জানান, বর্তমান মেয়রের নেতৃত্বে ঘোড়াশাল পৌর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। নানামুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ফলে এ পৌরসভার পূর্বেকার চিত্র পাল্টে গেছে। গত ৮ বছরে অসংখ্য রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে তারা আলহাজ্ব মো: শরীফুলকে পুনরায় মেয়র হিসেবে দেখতে চান।সম্প্রতি প্রতিবেদকের সাথে একান্ত আলাপচারিতায় ঘোড়াশাল পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মো: শরীফুল হক বলেন, ‘আমি নির্বাচনের সময় যেসব প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলাম, তা শতভাগ পূরণের চেষ্টা করেছি। রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট নির্মাণ করেছি। প্রতিটি ওয়ার্ড ও বাজারের রাস্তা ঢালাই এবং প্রশস্ত করেছি। সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ফুলের বাগান তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে শত শত সোলার লাইট স্থাপন করেছি। পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণ করেছি। জলাবদ্ধতা নিরসন ও মশা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করেছি। পৌর এলাকায় প্রয়োজনীয় ডাস্টবিন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং ময়লা-আবর্জনা রাখার জন্য ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছি। নাগরিক সেবা পেতে পৌরবাসীকে কোনো রকম হয়রানির শিকার হতে হয় না। আমাদের অভিভাবক মাননীয় এমপি ডা: আনোয়ারুল আশরাফ দিলীপের সার্বিক সহযোগিতা ও দিকনির্দেশনায় পৌর এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে।মেয়র বলেন, ‘উন্নয়নের পাশাপাশি আমি নানা পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঘোড়াশাল পৌরসভাকে দুর্নীতিমুক্ত করতে পেরেছি। বর্তমানে পৌর এলাকায় সরকারি খাসজমি কারো দখলে নেই। এছাড়াও সরকারি খাল ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে আমি নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রেখেছি।’ অপরাধ দমন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস, মাদক, চাঁদাবাজি, যৌন হয়রানি বন্ধে আমি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সভা, সেমিনার করে জনগণকে সচেতন করছি। উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে তাদেরকে আইনের আওতায় এনেছি।ঘোড়াশাল পৌরসভা নিয়ে আগামী দিনের পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাইলে আলহাজ্ব মো: শরীফুল হক বলেন, ‘দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আমি অবহেলিত পৌরবাসীকে একটি আধুনিক মডেল পৌরসভা উপহার দিতে নিরন্তর চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস, আমি যে কাজ করেছি তাতে পৌরবাসী সন্তুষ্ট। চলমান উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমি আসন্ন পৌর নির্বাচনে পুনরায় মেয়র পদে লড়তে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমি আশা করি, ঘোড়াশাল পৌরসভার উন্নয়নে আমার নিরলস প্রচেষ্টা বিবেচনা করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পলাশ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আমার প্রিয় নেতা, ডা: আনোয়ারুল আশরাফ দিলীপ এমপি মহোদয় আমাকে পুনরায় মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দিলে পৌর নাগরিকরা আমাকে ভোট দিয়ে পুনরায় মেয়র নির্বাচিত করবেন।’