শরিফুল,রংপুর সিটি প্রতিনিধি :রংপুরঃ রংপুরে চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় পুলিশের সাবেক এএসআই রাহেনুল সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেছে পিবিআই। মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দুপুরে পৃথকভাবে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে এবং মানব পাচার অপরাধ দমন ট্রাইবুনালে মোট ৩৬৭ পাতার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
চার্জশিট সূত্রে জানা যায়, রংপুরের হারাগাছ থানাধীন বাহার কাছনা মাস্টার পাড়া এলাকায় দশম শ্রেণীর এক স্কুলছাত্রীকে রংপুর মেট্টোপলিটন ডিবি পুলিশের এসআই রাহেনুল ইসলাম সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গণ ধর্ষণের মামলা করেন ভুক্তভোগীর পিতা
আয়নাল হক।
এতে এজাহারনামীয় আসামি এসআই রাহেনুল ইসলাম, সুমাইয়া পারভীন মেঘলা, সুরভী আক্তার সমাপ্তি, বাবুল হোসেন এবং আবুল কালাম আজাদ কে গ্রেফতার করা হয়। আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাবুল হোসেন ও আবুল কালাম আজাদ আদালতে দোষ স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
এছাড়াও ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধারায় আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেন। আসামিদের জবানবন্দি ও জব্দকৃত আলামতসহ ডিএনএ পরীক্ষায় গণধর্ষণের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়।
এএসআই রাহেনুল ইসলাম প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভুক্তভোগীকে ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর বাহার কাছনার সুমাইয়া পারভীন মেঘলার ভাড়া বাসায় সন্ধ্যা সাতটার দিকে ধর্ষণ করে ছাত্রীকে তার বাড়ির কাছে পৌঁছে দেয়। এ বিষয়ে তার মা রাগারাগি করলে ওই স্কুল ছাত্রী রাত দশটার দিকে মেঘলার বাড়িতে আবারও আসে।
পরে মেঘলা তার বান্ধবী সুরভী আক্তার সমাপ্তিসহ বাবুল ও কালামের সাথে পরেরদিন সকাল এগারোটার দিকে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করায়।
তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম তদন্ত শেষে এএসআই রাহেনুল ইসলাম ওরফে রাজু, সুমাইয়া পারভীন মেঘলা এবং আসামি সুরভী আক্তার সমাপ্তির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন এবং মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে অপরাধ করার প্রাথমিক প্রমাণ পায়।
এছাড়াও অপর দুই আসামি আবুল কালাম আজাদ ও বাবুল হোসেনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অপরাধ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ৪৪ পাতার জুডিশিয়াল নথি ও ৩২৩ পাতার কেস ডকেট প্রস্তুত করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ও মানবপাচার দমন ট্র্যাইবুনালে চার্জশিট দাখিল করেন।
এসময় উপস্থিত রংপুর পিবিআই পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন বলেন, আইন সবার জন্য সমান। আমরা এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধেও নিরপেক্ষ তদন্ত করে ধর্ষণের বিষয়ে প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছি। চার্জশিট দাখিল করা হলো। অপরাধ করলে কেউ পার পাবেনা।