বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের মাঝ দিয়ে প্রবাহিত ছোট যমুনা নদীর আদম দুর্গাপুর ও তাজপুর মৌজা থেকে মাটি উত্তোলনের দায়ে এই জরিমানা আরোপ ও আদায় করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রফিকুল ইসলাম।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ সদর উপজেলার তিলকপুর ইউনিয়নের আদম দুর্গাপুর ও তাজপুর মৌজায় ছোট যমুনা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে তুলসীগঙ্গা নদী। সম্প্রতি নদীটির একাংশ শুকিয়ে গেলে গত দেড় মাস যাবত নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি শুরু করেন তিলকপুর ইউনিয়নের প্রভাবশালী ইউপি সদস্য ফাহাদুজ্জামান বাপ্পী।
বিষয়টি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ওই এলাকার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা প্রতিবাদ করতে গেলেও তোয়ক্কা করেন না বাপ্পী। গত দেড় মাসে এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে প্রায় ৫ লক্ষ টাকারও অধিক মাটি বিক্রি করেন তিনি। বিষয়টি নজরে এলে বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন।
তিলকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, নদীর মাটি সরকারী সম্পত্তি। এই মাটি লুটপাত করে খাওয়া শুরু হলে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানোর পরেও অদৃশ্য কারণে মাটি বিক্রি বন্ধ হয়নি। লাখ লাখ টাকার মাটি বিক্রির পর ৫০ হাজার টাকা জরিমানা যথেষ্ট নয়। নিয়মিত মামলা দায়ের এবং বড় অংকের জরিমানা করলে ভবিষ্যতে এই দুঃসাহস আর কেউ দেখাতো না।
নদীর মাটি কেটে অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য ফাহাদুজ্জামান বাপ্পী বলেন, নদীর একাংশ দিঘী হিসেবে ইজারা নিয়ে কয়েক বছর যাবত মাছ চাষ করে আসছি। গভীরতা বৃদ্ধি না হলে মাছের ডিম উৎপাদন সম্ভব হতো না। তাই উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েই নদী খনন করছিলাম।
নওগাঁ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রফিকুল ইসলাম বলেন, বেশ কিছুদিন যাবত ছোট যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে গিয়ে একটি এক্সকাভেটর (ভেকু) দিয়ে মাটি কেটে বিক্রির বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় মাটি ও বালু ব্যবস্থাপনা আইনে ইউপি সদস্য বাপ্পীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়। ভবিষ্যতে নদীর মাটি কেটে অবৈধভাবে কেউ বিক্রি করলে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।