রেজিঃ নং ডিএ ৬০০৯ | বর্ষ ১৪ | ৪ পৃষ্ঠা ৩ টাকা || মঙ্গলবার | ২৬ নভেম্বর ২০২৪ | ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
জকিগঞ্জে বিকাশ প্রতারক চক্রের ফাঁদে মাদ্রাসা ছাত্রী
আহসান হাবীব লায়েক : সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের রারাই গ্রামের এক মাদ্রাসা ছাত্রীর হত দরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে উপবৃত্তি প্রদান ও সহায়তার নামে বিকাশ প্রতারণার মাধ্যমে ২১ হাজার ৪শত ২০ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
প্রতারণার শিকার ছাত্রীর মা বলেন, বুধবার ২ ফ্রেব্রুয়ারি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয়ে ০১৮৯৪-২২৮৬৭২ ও ০১৮২২-১২০১৫৯ নাম্বার থেকে ফোন করে আমার মেয়ের নাম বলে উপবৃত্তির প্রদানের জন্য কিছু তথ্য জানতে চায়। উপবৃত্তি প্রদানের জন্য তথ্য নিশ্চিত করতে ছাত্রীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম ও ছাত্রী নাম বলে ছাত্রীর কাছে মোবাইল ফোন দিতে জানায় কথিত কর্মকর্তা।
ছাত্রীর মা সরল বিশ্বাসে কথিত কর্মকর্তার কথা মতে (ছদ্মনাম) ফারিয়ার কাছে মোবাইল ফোন দিলে তার শিক্ষা প্রতিষ্টান জকিগঞ্জ ফাজিল সিনিয়র মাদ্রাসার নাম, জন্মনিবন্ধন নাম্বার, রেজিষ্ট্রেশন নাম্বার প্রকাশ করে তা সঠিক হয়েছে কি না জানতে চায়। প্রতারক কথিত কর্মকর্তা সকল সঠিক তথ্য প্রকাশের জন্য (ছদ্মনাম) ফারিয়ার মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তা হিসেবে বিশ্বাস করে। এবং ছাত্রীর পরিবারের মোবাইলে bKash থেকে You have received TK 1.00 from 01610378619. Ref 12600. Fee Tk 0.00. Balance Tk 1.85. TrxlD 9B24H4SFR8 at লিখা একটি এসএমএস পাঠিয়ে জানতে চায় ১২ হাজার ৬শত টাকা পেয়েছে কি? এসএমএস দেখে বিষয়টি ফারিয়া না বুঝে টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করেলে দ্রুত টাকাগুলো উত্তোলনের জন্য একটি বিকাশের দোকান যাওয়ার কথা বলে কথিত কর্মকর্তা।
কথিত কর্মকর্তা প্রতারকের কথা মতো (ছদ্মনাম) ফারিয়ার উপজেলার থানাবাজারের বিসমিল্লাহ স্টেশনারি নামে একটি বিকাশের দোকানে গেলে প্রতারক নিজের মোবাইলে ২১ হাজার ৪শত ২০টাকা ক্যাশ ইন করতে বলেন। এবং সাথে সাথে বিকাশের দোকান থেকে ২১হাজার ৪শত ২০টাকা সহ ৩৪ হাজার ২০ টাকা নিয়ে নিতে জানিয়ে কল কেটে দেয়। এরপর থেকে কথিত কর্মকর্তা প্রতারকের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে বিসমিল্লাহ স্টেশনারির স্বত্বাধিকারী তহ দরিদ্র ভুক্তভোগী পরিবারের প্রতি তার ২১হাজার ৪শত ২০ টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে ইজ্জতের ভয়ে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে ঋণ করে দোকানের টাকা পরিশোধ করেন ছাত্রীর মা। ভুক্তভোগী পরিবারে নেই কোনো উপার্জনকারী ব্যক্তি ঋণের চাপে এখন দিশেহারা পরিবার।
অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের পারিবারিক তথ্য একমাত্র স্কুল-কলেজ- মাদ্রাসা ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট বিকাশ এজেন্ট জানে। এছাড়া কেউ জনার কথা নয়। তাহলে কিভাবে প্রতারকরা এমন সব তথ্য জানে? এ নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
সিলেট জেলা প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও গঙ্গাজল ক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আব্দুল খালিক বলেন, প্রতারকদের ফোন পেয়েছেন এমন অভিভাবক অনেক সময় এসে জানান, আমরা তাদের সতর্ক করে দেই। উপবৃত্তির টাকা মোবাইলে প্রবেশের আগেই সতর্ক করে দেই। এক্ষেত্রে অভিভাবক শিক্ষার্থী সকলেই সতর্ক হতে হবে।
সিলেট জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও সাজ্জাদ মজুমদার বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক মোঃ কুতুবউদ্দিন বলেন, বিকাশ নিজেই টেলিভিশনসহ সামাজিক মাধ্যমে প্রতারণা নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। শিক্ষাবোর্ডের অধীনে উপবৃত্তি প্রদানের কোন সিস্টেম নেই। শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এই টাকা সরবরাহ হয়ে থাকে। বোর্ড থেকে উপবৃত্তি সংক্রান্ত তথ্য চাওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি বিকাশ প্রতারকদের ব্যাপারে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সচেতন করতে শিক্ষকদের প্রতি আহবান জানান।
জকিগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত সুমন চন্দ্র সরকার বলেন, ‘প্রতারণার শিকার এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থী থানায় একটি জিডি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করছি। এসব প্রতারকরা খুবই কৌশলী তাই তাদের চিহ্নিত করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। প্রযুক্তির যুগে শিক্ষার্থীরা সতর্ক হওয়া উচিত।’
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]
Copyright © 2024 দৈনিক শিরোমনি | shiromoni.com. All rights reserved.