মোঃ মাসুম, মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি, দৈনিক শিরোমণিঃ মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ীতে ধর্ষিতার ভাইকে চুরীর অপবাদ দিয়ে মারধর করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত কিশোর পারভেজ (১৭) এর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৭ টার দিকে তার গ্রামের বাড়ি পাইকপাড়া গ্রামে নিয়ে আসা হলে স্বজনদের কান্নায় আকাশ ভাড়ি হয়ে উঠে। জানাজা শেষে তাকে আবদুল্লাহপুর ঈদগা কবরস্থানে দাফন করা হবে বলে স্বজনরা জানান। জানাগেছে, টঙ্গীবাড়ী উপজেলার উত্তর পাইকপাড়া গ্রামের এক মাদরাসা ছাত্রীকে (১৫) প্রায় ১০ মাস আগে ধর্ষণ করে স্থাণীয় ৩ বখাটে। ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষিতার পিতা বাদী হয়ে টঙ্গীবাড়ী থানায় পৃথক মামলা দায়ের করলে ২ ধর্ষক বিগত প্রায় ৪ মাস আগে মুন্সীগঞ্জ আদালতে আত্নসমর্পন করলে আদালত ওই দুই ধর্ষককে জেল হাজতে প্রেরন করে। সেই মামলার জের ধরে ২৮ মে রাত ৮টার দিকে চুরীর মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে পারভেজকে মারধর করে ধর্ষন মামলার আসামী হাবিবুর এর বাবা হাসান (৫০) মা শাহানাজ বেগম (৪০) ও ফুফা বাচ্চু কোতয়াল (৫৫)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় তারা পারভেজকে মেরে ঘাড় মটকে ফেলে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করার জন্য গলায় অনেক সময় চাপ দিয়ে ধরে রাখে। এতে ফয়সালের গলায় একাধিক চিহ্ন দেখা যায়। ঘার মটকে দেওয়ার পর পারভেজের মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে পারভেজ বিষ পান করেছে বলে মিথ্যা প্রচারনা চালায়। স্থাণীয়রা জানান, পারভেজের পিতা মহিউদ্দিন খান একজন দারিদ্র সহজ সরল মানুষ। মহিউদ্দিনের স্ত্রী তার ৪ ছেলে-মেয়েদের রেখে প্রায় ৭ বছর আগে চলে যায় । চলে যাওয়ার পর মহিউদ্দিনের বড় মেয়ে পিংকি তার ৩ ভাই বোনকে দেখাশুনা করছিলো। কিন্তু বিগত প্রায় ৪ বছর আগে মহিউদ্দিনের ছোট ছেলে মিরাজ (৭) বাড়ি হতে হারিয়ে যায়। পরে পিংকিরও বিয়ে হয়ে গেলে পারভেজ ও অপর ধর্ষিতা মেয়েকে নিয়ে বিপাকে পরে মহিউদ্দিন খান। মহিউদ্দিন বিভিন্নস্থানে ঝালমুড়ি বেচঁতে চলে যেতো এই সুযোগে স্থাণীয় ৩ লম্পট মিলে তার মেয়েকে ধর্ষণ করেলে কিশোরী অন্তস:ত্ত্বা হয়ে পরে। পরে মহিউদ্দিন খান বাদী হয়ে ৩ লম্পট স্থাণীয় বাবুল মিয়ার ছেলে ফাহিম, আফসার চৌধুরীর ছেলে সামি ও হাসান মিয়ার ছেলে হাবিবুরের বিরুদ্ধে টঙ্গীবাড়ী থানায় পৃথক দুটি ধর্ষণের মামলা করেন। এর জের ধরে পারভেজকে মারধর করে ধর্ষক হাসানে বাবা,মা ও ফুফা। ১ জুন ভোরে ঢাকার মিডফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। অভিযুক্ত হাবিবুর ও সামি বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। অপর অভিযুক্ত ধর্ষণের সহযোগী ফাহিম পলাতক রয়েছেন। এলাকাবাসী জানায় শুক্রবার রাতে ওই ধর্ষিতার ভাই পারভেজ অভিযুক্ত প্রতিবেশী হাবিবুর এর বাড়ির ওপর দিয়ে আসছিলো। এ সময় তার উপর হামলা চালিয়ে তাকে মারধর করা হয়।তাকে দ্রুত মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। পরবর্তীতে সেখান থেকে মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেই মঙ্গলবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যায়। মৃত পারভেজের বাবা মহিউদ্দিন খান বলেন, আমার মেয়েকে ওরা নির্যাতন করলো। এখন পোলাটারে মাইরা ঘার মটকে দিয়ে মুখে বিষ ঢেলে দেয়। আমি এ ঘটনার কঠিন বিচার চাই।এ ব্যাপারে টঙ্গীবাড়ী থানা ওসি হারুন অর রশিদ জানান, ওই ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ দায়ের করেনি। তবে এলাকায় খুব উত্তেজনা বিরাজ করায় এক বৃদ্ধ মহিলাকে নিরাপত্তার জন্য থানায় ধরে আনা হয়েছে।
৯ views