ফজলুর রহমান, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে কালবৈশাখী ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়। শুক্রবার মাধ্যরাতে ঝড়, বর্ষণ ও শিলাবৃষ্টিতে বিভিন্ন বড়-ছোট গাছপালা, বাড়ি-ঘর, ফসল ভেঙ্গে যায়। বিশেষ করে বিদ্যুৎতের তারে গাছপালার ডাল পরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়।
বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, ঝড়ো হাওয়ায় বিভিন্ন কাচা-পাকা বাড়িঘর, বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে শত শত হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়। হাজারও ঘরের টিনের চালা উড়ে যায়। বড় বড় গাছপালা উপড়ে পড়েছে। রাস্তাগুলোতে বড়-ছোট গাছপালা ভেঙ্গে উপচে পরে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। পৌর শহরের সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষী পাকুড় গাছটি ভেঙ্গে পরেছে পাশ্বের মূল সড়কের উপরে। এতে করে রাস্তার এক পাশ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পরে। পরে শ্রমিক লাগিয়ে গাছটি অপসারন করা হলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। কিন্তু গাছের ডালপালা বিদ্যু’তের তারের উপরে পরলে সেটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অপরদিকে শহরের কোট চত্বরে পাকুড় গাছ, সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, পিটিআই, সার্কিট হাউজ, ডায়াবেটিকস হাসপাতালের সামনের বড় বড় গাছ উপড়ে পড়েছে। বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জের অবস্থা আরও খারাপ। সবদিকে গাছ, গাছের ডালপালা ভেঙ্গে গিয়ে রাস্তা ঘাট প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। আর্ট গ্যালারীতেও বড় বড় বেশ কিছু গাছ ভেঙ্গে পরেছে।
গতকাল শনিবার পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, অসংখ্য কাচা-পাকা বাড়িঘর ভেঙ্গে পরেছে। সাথে ভুট্টা ও অন্যান্য বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দিনভর ভাঙ্গা বাড়ির টিন ও অন্যান্য জিনিসপত্র সরাতে ব্যস্ত সময় পার করতে হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্থদের। শত শত হেক্টর জমির ভুট্টা, বোরো ধান মাটির সাথে মিশে গেছে। আম ও লিচুরও ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। রাত থেকে গতকাল শনিবার বিকেলে পর্যন্ত পৌর শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকার পর কিছু ুকিছু এলাকায় বিদ্যুৎ চালু হলেও অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ চালু হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে কালবৈশাখী ঝড়ে জেলায় প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
ঠাকুরগাঁও ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক ফরহাদ হোসেন জানান, শহরের বিভিন্ন স্থানে গাছ ভেঙ্গে বিদ্যুৎতের তার ছিড়ে গেছে। তবে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নির্ণয় সম্ভব হয়নি।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন জানান, জেলায় ৩৭ মি. মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। কিছু কিছু স্থানে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। ঝড়ে ভুট্টা, বোরো ধান, আম, লিচুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায়। তবে কোন উপজেলায় কত ক্ষতি হয়েছে তা এখনও নিরুপন করা হয়নি। কৃষি বিভাগের লোকজন মাঠে গিয়ে তথ্য সংগ্রহের পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে বলে জানান তিনি।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মো: সামসুজ্জামান বলেন, ঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে। সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বাড়িঘর, গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খোজ-খবর নেওয়া হচ্ছে, পরবর্তিতে ক্ষয়-ক্ষতির সঠিক পরিমাণ জানা যাবে।