দৈনিক শিরোমণি ডেস্ক: এ বছরের ডিসেম্বরের শেষার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার চিন্তা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। নির্বাচন কমিশনও ডিসেম্বরে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তবে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি চলতি বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন চাইলেও জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনের জন্য কোনো সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পক্ষে নয়। তারা চায় প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচন হোক। অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন নয়, গণপরিষদ নির্বাচন চায়। এ অবস্থায় আগামীকাল শনিবার থেকে ছয়টি কমিশনের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এই আলোচনা কত দিন চলবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। এ আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন ও জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি পথনকশা আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। তাদের অন্যতম লক্ষ্য দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনা। এ জন্য ১১টি সংস্কার কমিশনও গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে সংবিধান, নির্বাচনব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশন ইতিমধ্যে তাদের প্রস্তাব জমা দিয়েছে। এসব প্রস্তাব নিয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের’ সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে আগামীকাল থেকে। বিএনপি সূত্র জানায়, মূলত নির্বাচন প্রশ্নে যাতে দলগুলো অভিন্ন অবস্থান নেয়, সে লক্ষ্যে এসব আলোচনা চলছে। পাশাপাশি নির্বাচনে আসন সমঝোতার বিষয়টিও গুরুত্ব পাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, সংস্কারে জোর দিলেও বিভিন্ন খাতে, বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না অন্তর্বর্তী সরকার। এমন অবস্থায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি নির্বাচিত সরকার না এলে পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নিতে পারে, এমন আশঙ্কার কথাও আলোচনা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে নির্বাচনের দাবি জোরালো হতে শুরু করেছে। গত ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়ের কথা জানিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছিলেন, অল্প সংস্কার করে নির্বাচন চাইলে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে আর আরেকটু বেশি সংস্কার করে নির্বাচন চাইলে ২০২৬ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে নির্বাচন করা সম্ভব।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাসের মাথায় এসে নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়তে শুরু করেছে। এখন সরকার আগামী ডিসেম্বরের শেষ দিকে নির্বাচন আয়োজন করার কথা ভাবছে। তবে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের দাবিও আছে কোনো কোনো পক্ষের। এ বিষয়েও এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি সরকার। ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনার পর অন্তর্বর্তী সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।