এস এ ডিউক ভূঁইয়া-তিতাস (কুমিল্লা)প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার তিতাস উপজেলা প্রাথমিক,মাধ্যমিক,সমমান পর্যায়ের কিছু মাদ্রাসা,কমিউনিটি ক্লিনিক ও ডাকঘরের বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।প্রাণঘাতি মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজ,মাদ্রাসার ভবন খালি পড়ে আছে।এতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদানের পরিবেশ। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে ফসল তোলার মাঠ ও লাকড়ি খড়ি রাখার পরিত্যাক্ত স্থানে।ফলে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক প্রাথমিক বিদ্যালয়,
উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজসহ সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রয়েছে।তিতাস উপজেলায় ৩টি কলেজ,১৫টি হাই স্কুল,৭টি মাদ্রসা ও ১টি রেজিষ্টারসহ মোট ৯৩টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।সরজমিনে দেখা যায়,তিতাস উপজেলার রতনপুর ভূঁইয়া বাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ধানের খড় ও তিল গাছের স্তুপ এবং স্কুল মাঠে প্লাস্টিকের পলিথিন বিছিয়ে তিল মাড়াই করছেন কৃষকের স্ত্রী,রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ গজিয়ে জঙ্গল সৃষ্টি হয়েছে,
চর-রাজাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দার লোহার বেরিগুলো ভেঙ্গে পড়ে যাচ্ছে এবং পাশে বসে যুবকরা মোবাইলে গেমস খেলছে,
নারান্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কলিমিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের পুরনো ভবন গুলোর দেয়ালের রং ও আস্তর সরে যাচ্ছে,মাঠে গজাচ্ছে ঘাস। স্কুলের পাশে নারান্দিয়া কাচারি ঘর ও ডাকঘরের দরজা জানালাগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, মঙ্গলকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে গাছের ডালা কেটে তা,লাকড়ি করে স্কুলের সামনে রেখে শুকাতে দেখে গেছে, ৫৬ নং খলিলাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় দেখা যাচ্ছে লাকড়ি খড়ির স্তুপ ও স্কুলের জানালায় ঝং ধরে গেছে ,রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় লাকড়ি খড়ির স্তুপ ও রঘুনাথপুর কমিউনিটি ক্লিনিক সংলগ্ন মাঠে খড়ের স্তুপ,শাহাবৃদ্ধি আঃ কাদির ভূঁইয়া মেমোরিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভেতরে নতুন ভবন নির্মাণের রড,সিমেন্ট রাখা হয়েছে এবং নির্মাণ শ্রমিকদের বসবাস করতে ও স্কুলের ভেতরে কাপড় শুকাতে দেখা গেছে।এবিষয়ে রতনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকা আফরোজা আক্তার জানান,এ ব্যাপারে আমি গ্রামবাসীকে অনেকবার সচেতন করেছি, স্কুল মাঠে কিছু না রাখার জন্য এবং কয়েকবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেজবুকে প্রচারও করেছি।তারপরেও তারা কাথা শুনছেনা।অপরদিকে মেহনাজ মীম আদর্শ সরকারি কলেজ,গাজীপুর খাঁন সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজ,
ইঞ্জিনিয়ার হারুনুর রশিদ গার্লস কলেজে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর পদচারনায় না থাকায় মাঠে গজিয়েছে ঘাস,বিভিন্ন প্রজাতির গাছ ও গাছের পাতা পড়ে আর্বজনার সৃষ্টি হচ্ছে মাঠে। অপরদিকে উপজেলার ফাজিল-দাখিল ও আলিম মাদ্রাসাগুলোতে দেখা গেছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর পদচারনায় না থাকায় লক্ষ করা গেছে একই চিত্র।এ বিষয়ে গাজীপুর খান সরকারি মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল বাতেন জানান,শিক্ষার্থীদের প্রদচারনা না থাকলে অবশ্যই স্কুল কলেজ জিমিয়ে যায়,থাকে না চাঞ্চল্য। দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে স্কুল কলেজগুলো যদি খোলা থাকত তাহলে লেখা-পড়ার গুনগত মান অব্যহত থাকত। তারপরে যেহেতু করোনা কালীন সমস্যা এখানে সরকারের সিদ্ধান্ত যথেয়।আমরা প্রতিদিন প্রতিষ্ঠানে এসে স্কুলের পরিচর্যা করে থাকি। সবচেয়ে বেশি বেহাল দশা লক্ষ করা যাচ্ছে ভিটিকান্দি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের ভবনটিতে চারপাশের জানালার গ্লাসের একটি অংশও ভাঙ্গা ছাড়া নেই।এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরীফ রফিকুল ইসলাম জানান, করোনা কালিন সময়ে স্কুল খোলা না থাকায় নিয়মিত তা পরিচর্যা করা হচ্ছে না, তাছাড়া আমরা সবসময় স্কুলগুলো পরিচর্যার বিষয়ে সকল প্রধান শিক্ষকদের সচেতন করে থাকি।আর স্কুল মাঠে বা বারান্দায় খড়ের স্তুপ লাকড়িসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র রেখে যদি কেউ স্কুলকে ময়লা আবর্জনা বা নোংরা করে থাকে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনোয়ারা চৌধুরী জানান,কোভিড-১৯ এর কারণে সারা বিশ্বই এখন অচল,হাই স্কুলগুলোতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের প্রদচারনা না থাকায় এ বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়।আমরা জুম মিডিয়া ও অনলাইনের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের লেখা-পড়া চালিয়ে যাওয়া ব্যবস্থা অব্যহত রেখেছি।স্কুল-কলেজ খোলা না থাকলেও আমরা শিক্ষকদের পরিচর্যায় বিষয়টি অবগত করিয়েছি।এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাম্মৎ রাশেদা আক্তার জানান স্কুল কলেজ ও সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ময়লা আবর্জনা করার বিষয়টি দুঃখজনক,এটি মেনে নেওয়া যায় না।আমরা তদন্ত করে এর ব্যবস্থা নেব।