এস এ ডিউক ভূঁইয়া-তিতাস(কুমিল্লা)থেকেঃ কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় প্রতিনিয়ত ঘটছে চুরি ডাকাতির ঘটনা। একের একের পর এসব ঘটনা যেন নাথিং টু সে। কারোরই যেন কিছু করার নেই।
গতকাল দিবাগত রাতে ভিটিকান্দি ইউনিয়নের রতনপুর চকের বাড়িতে হানিফ মিয়ার ঘর থেকে নগদ টাকাসহ অন্যান্য দামী জিনিস নিয়ে যায়। ঘরের লোকজন টের পেয়ে চিৎকার করলে ডাকাত দল হানিফ মিয়ার বউকে কুপিয়ে আহত করে। পরে মসজিদের মাইকে মাইকিং করলে ডাকাতদল মাইক্রো নিয়ে পালিয়ে যায়।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার জগতপুর ইউনিয়নের প্রথম দশানীপাড়ার দু’টি বাড়ীতে দুর্ধর্ষ ডাকাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, রাত ২ টায় উপজেলার জগতপুর ইউনিয়নের প্রথম দশানী পাড়ার চকের বাড়ীর আবুল কাসেম এর বিল্ডিং ও দুচালাঘরের তালা ভেঙ্গে নগদ টাকা,স্বর্ণ অলংকারসহ ৫ টি মোবাইল সেট নিয়ে যায় মুখোশ পরিত ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল। ডাকাতির ঘটনায় সরজমিনে অনুসন্ধানে গিয়ে জানা যায় জগতপুর ইউনিয়নের প্রথম দশানী পাড়ার চকের বাড়ীর মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে আবুল কাসেমকে (৬০) পিঠে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে ও তার স্ত্রী শাহিনা বেগমকে(৪৫)গলায় ছুরি ধরে রেখে মারধর করে বিল্ডিং ও দুচালা ঘর থেকে নগদ টাকা,স্বর্ণ অলংকারসহ ৫ টি মোবাইল সেট নিয়ে চলে যায় মুখোশ পরিত ১০-১২ জনের ডাকাত দল।
গুরুতর আহত আবুল কাসেম বুধবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।তার পিটে ছয়টি সেলাই করা হয়েছে।
আহত আবুল কাসেম এর মেয়ে রোজিনা আক্তার জানায় ১০-১২ জনের মুখোশ পরিত ডাকাত দল আমাদের বিল্ডিং ও দুচালা ঘরের তালা ভেঙ্গে আমার বাবা কে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে আমার আম্মার গলায় ছুরি ধরে হাতে ও পিটে লাঠি দিয়ে মারধর করে আমার মায়ের গলা থেকে ১ ভরি ওজের স্বর্ণের চেইন ও আট আনি ওজনের কানের দুল,আমার বড় ভাই মোঃ সোহেল এর স্ত্রী মোসাম্মৎ কুহিনূর আক্তারকে মারধর করে তার গলা থেকে ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও আট আনি ওজনের কানের জিনিস,আমার মেজ ভাই মোঃ জুয়েল এর স্ত্রী মোসাম্মৎ জুমি আক্তারের গলা থেকে সাত আনি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও পাঁচ আনি ওজনের কানের জিনিস,বিল্ডিংরোমে টেবিলে উপর রাখা ব্যাগের ভিতরে রাখা দেড় ভরি ওজনের ৩ টি স্বর্ণের আংটি,নগদ-২৫০০/টাকা ও ৫ টি মোবাইল সেট ১টি আইফোন যার মূল্য-৭০ হাজার টাকা, দু’টি হাওয়াইফোন যার,মূল্য ৭৩ হাজার টাকা, স্যামসাং মোবাইল ফোন যার, মূল্য ১৬ হাজার, নকেয়া মোবাইল ফোন যার মূল্য ৪ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
এদিকে একই রাতে একই পাড়ার মৃত লাল মিয়ার ছেলে মোঃ জহর মিয়ার (৬০) বিল্ডিং ও দু’চালা ঘরের তালা ভেঙ্গে তার মুখ হাত ও পা বেঁধে তাঁর স্ত্রী বানু বেগমের গলা থেকে ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন ও ১ ভরি ওজনের কানের জিনিস,২ টি মোবাইলফোন ১টি স্যামসাং যার মূল্য ২০’হাজার টাকা, ১টি মোবাইল ফোন যার মূল্য ৮’হাজার টাকা, চার্জ লাইট ২টি যার মূল্য ৮ হাজার, বিল্ডিং থেকে নগদ ৩০’হাজার টাকা ও দু’চালা ঘর থেকে প্লাস্টিকের ব্যাংক কেটে ২০’হাজার ও মসলার মেশিন যার মূল্য ৩’হাজার টাকা নিয়ে গেছে বলে জানায় জহর মিয়ার ছেলের বউ সারমিন আক্তার।
এছাড়াও ৯ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দিবাগত রাতে বাতাকান্দি সরকার বাড়ীর মৃত দেলোয়ার হোসেন সরকারের ছেলে মেসার্স শাহ আমানত ট্রেডার্সের প্রোঃ মোঃ রুবেল সরকারের বাতাকান্দি বাজারের চাউল বাজরের চাউলের গোডাউনের তালা ভেঙে পলাশ বাসমতী ৩৪ ও এসি আই কোম্পানির নাজির সাই ১০ বস্তাসহ মোট ৪৪ বস্তা চাউল নিয়ে গেছে ডাকাত দল। যার মূল্যে আনুমানিক ১ লক্ষ টাকা বলে জানান মেসার্স শাহ আমানত ট্রেডার্সের প্রোঃ মোঃ রুবেল সরকার।
এছাড়া ৭ ফেব্রুয়ারি রবিবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে চর রাজাপুর বেপারী বাড়িতে দেশীয় অস্ত্রের মুখে ১২-১৫ জনের একটি ডাকাত দল ঐ বাড়িতে অস্ত্রের মুখে সাইফুল ইসলামের স্ত্রী গৃহবধূ রোজিনাকে গণধর্ষণের হুমকি দিয়ে প্রতিটি কক্ষের তালা ভেঙ্গে প্রায় ১৭ লক্ষাধিক টাকার মালামালা নিয়ে যায়।
এর আগেওএকই কায়দায় তিতাসে কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এই বিষয়ে তিতাস উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার বলেন,এই বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা মিটিংয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে এবং তিতাস থানাকে আরও তৎপর হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই বিষয়ে যদি কারো কাছে কোন তথ্য থাকে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করবো। অবশ্যই নাম, ঠিকানা গোপন রাখা হবে।