ইউনুছ, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি দৈনিক শিরোমণিঃ দীর্ঘ তিন বছর থেকে শিকলে বন্ধি জীবন কাটাছে রাশেল (২০) নামের এক যুবক। এক সময় তার স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হওয়া। ভাগ্যের কি পরিহাস সপ্তম শ্রেণীতে পড়ালেখা অবস্থায় সে মানসিক রোগে ভোগতে শুরু করে। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় নিরাপত্তা জনিত কারনে তাকে শিকল দিয়ে ঘরের ভিতর বন্ধি করে রাখা হয়েছে। দিনে দিনে তার শাররিক অবস্থা অবনতির দিকে যাচ্ছে।কেউ এগিয়ে আসেনি তার চিকিৎসার জন্য। তার মা বাবার আকুতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ সমাজের হৃদয়বান ব্যক্তি সাহায্যের হাত বাড়ালে আমার ছেলে ভালো হবে। সে কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের শ্রীফলগাতি গ্রামের আব্দুল হান্নানের ছেলে।
দিনমুজুরী কাজ করে সংসার চালায় আব্দুল মান্নান। তার ঘরে স্ত্রী রাশেদা বেগম ও ছোট ছেলে আবু রায়হান (১৭)। চার সদস্যের পরিবার। অভাব অনাটন থাকলেও তাদের সংসারে ছিল না কোন অশান্তি। স্বপ্ন ছিল দুই ছেলেকে পড়ালেখা করানো। রাশেলকে স্থানীয় যাদুরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেওয়া হয়।সেখান থেকে রাশেল ভালো ফল করে পিএসসি পরীক্ষা পাশ করে। পরে তাকে যাদুরচর উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি করে দেওয়া হয়। সেখান থেকেই রাশেলের অস্বাভাবিক আচরন শুরু করে। ষষ্ঠ শ্রেণী পাশ করার পর ভর্তি হয় সপ্তম শ্রেণীতে। এর পরেই তার অবস্থা দিনে দিনে খারাপ হতে থাকে। চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসার স্বার্থে একাধীক চিকিৎসক পরিবর্তন করা হয়। বর্তমানে সে রংপুরে এক মানসিক বিশেযজ্ঞের চিকিৎসাধীনে রয়েছে।অর্থের অভাবে উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেনা তার বাবা মা। ফলে আদরের ছেলেকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছে তাদের পরিবার। ভিাটেমাটি ছাড়া অন্য কোন জমাজমি নেই। যতটুকু ছিল তা বিক্রি করে ছেলের চিকিৎসায় খরচ হয়ে যায়। তার চিতিৎসা করানোর জন্য তাদের সহায় সম্বল বলে আর কিছু নেই।একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা রাশেলের বাবা আব্দুল হান্নান বলেন, রাসেল মিয়া আজ থেকে ৭ বছর আগে হঠাৎ করে স্মৃতি শক্তি হারিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। প্রতিবন্ধি ছেলের জন্য বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারি দপ্তর ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে হাত পাতলেও সহযোগিতা পাইনি। রাসেলের মা রাসেদা বেগম বলেন আমার ছেলে গত ৭ বছর থেকে পাগলামি শুরু হয়। সংসারের সব কিছু বিক্রি করে তার চিকিৎসা করাই। ৩ বছর আগে থেকে অস্বাভাবিক আচরন কররে তাকে শিকল দিয়ে বেধে রাখছি। আমরা কাছে গেলে আমাদেরকেও মারপিট করে। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান জানান, ইতোমধ্যে মানসিক ভারসাম্যহীন রাশেলের নামে প্রতিবন্ধি ভাতার নাম দেওয়া হয়েছে। সে এখন সরকারি সুবিধা ভোগ করবে।