খাদেমুল ইসলাম, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি : তেঁতুলিয়া জমির বিরোধ সংঘর্ষের মামলায় নুরল আমিন দুলাল (৩৯) নামের এক অভিযুক্তকে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৩ সিপিসি ২ এর একটি চৌকস প্রতিনিধি সদস্যরা। সোমবার বিকেলে জেলার সদরের শহর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে র্যাব। গ্রেফতার হওয়া আসামী দুলাল তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউপির মন্ডলপাড়া গ্রামের মৃত.জুমার উদ্দিনের ছেলে।
জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় প্রতিপক্ষের সাথে জমাজমি নিয়ে বিরোধ নিয়ে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় করিমুল হক বাদী হয়ে নুরুল আমিন দুলালকে প্রধান আসামী করে ৯জনকে অভিযুক্ত করে মডেল থানায় মামলা করেন।
মামলার অপর অভিযুক্তরা হলেন, মোঃ হায়দার আলী (৩৪), মোঃ লুৎফর রহমান (৬০), মোঃ আফিজুল ইসলাম (৫০), মোঃ সমিরুল হক (২) লেদর (৫১), মোঃ তৈয়ব আলী (৫২), মোছাঃ নিহার বানু (৫২), মোছাঃ পান্না বেগম (৩৪), মোছাঃ ঝরনা বেগম (২৭)। তাদের মধ্যে হায়দার আলী বুড়াবুড়ি ইউপির মন্ডলপাড়া গ্রামের মৃত.জুমার উদ্দিনের ছেলে, লুৎফর রহমান একই ইউনিয়নের মান্দুলপাড়া গ্রামের মৃত.তফির উদ্দিনের ছেলে, মৃত জয়ন উদ্দীনের ছেলে আফিজুল ইসলাম, মৃত শেখ ফরিদের ছেলে সমিরুল হক লেদর, মৃত ওহাব উদ্দিনের ছেলে তৈয়ব আলী, মৃত.জুমার উদ্দিনের স্ত্রী নিহার বানু, নুরল আমিন দুলালের স্ত্রী পান্না বেগম ও হায়দার আলীর স্ত্রী ঝরনা বেগম।
মামলায় জানা যায়, বুড়াবুড়ি মৌজার ৭২ ও ২৫৯ নং খতিয়ান হতে খারিজ ২৫৯ খতিয়ানে ১৬৯৩ দাগে ২১ শতক জমি ক্রয়সূত্রে দীর্ঘ ৪০/৪৫ বছর ধরে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে ভোগ দখল করে আসছেন করিমুল হক। কিন্তু ওই জমি অভিযুক্তরা জোরজবস্ত করে বেদখল করার চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে শালিস দরবার হলেও বিবাদীরা কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
ঘটনার দিন ১৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় ইফতারের শেষে করিমুলের পিতা আব্দুল ওহাব বাড়ির বাইরে এসে দেখেন, অভিযুক্তরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বেআইনী লোকজন নিয়ে লাঠি সোঠা, ধারালো হাসুয়া, কোদাল, চাইনিজ কুড়াল, লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্রে সস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে জমিতে প্রবেশ করে খুঁটি ও বেড়া লাগিয়ে বেদখল দেয়ার চেষ্টা চালায়। এতে বাঁধা দিতে গেলে মারধরের শিকার হন বৃদ্ধ আব্দুল ওহাব। চাইনিজ কুড়ালের কোপে গুরুতর আহত হন। পরে সেখান থেকে দ্রæত উদ্ধার করে তাঁকে জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেলে রেফার্ড করেন চিকিৎসকরা। ঘটনার উপযুক্ত বিচার চেয়ে করিমুল হক গত ২০ এপ্রিল তেঁতুলিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার ৪দিনের মাথায় জেলা শহর থেকে মামলার প্রধান আসামী নুরল আমিন দুলালকে গ্রেফতার করেন র্যাব-১৩’র সিপিসি-২এর সদস্যরা।
মামলার বাদী করিমুল হক জানান, আমার ক্রয়সূত্রে জমি দীর্ঘ ৪০/৪৫ ধরে ভোগদখল করে আসছি। কিন্তু হঠাৎ করে বিরোধীরা এ জমি দাবি করছে তাদের। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে শালিস হলেও সেখানে তারা জমির কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তবে জমিটি দখল করতে তারা সেদিন আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে। বাবাকে রক্তাক্ত জখম করেছে। পরে ঘটনার সুবিচার চেয়ে থানায় মামলা করেছি।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, জমি নিয়ে বিরোধ পেনাল কোড ১৮৬০ এর ধারায় মামলা করেছিলেন বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের করিমুল হক নামের এক ভুক্তভোগী। মামলার পর থেকেই পুলিশ আসামীদের ধরতে মাঠে অভিযান চালাচ্ছে। তার মধ্যে আজ সোমবার বিকেলে মামলার প্রধান আসামী নুরুল আমিন দুলালকে পঞ্চগড় থেকে গ্রেফতার করে আমাদের হাতে সোপর্দ্য করেছে র্যাব-১৩। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।