উত্তম কুমার,জয়পুরহাট প্রতিনিধি,দৈনিক শিরোমণিঃ
জয়পুরহাট সদর উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামে দাদন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বাড়ি দখলের হুমকি দেয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন এক ভূক্তভোগী নারী। একই গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী পারভীন বেগম ওই গ্রামের মৃত আক্কাছ আলীর ছেলে সাইদুর রহমানকে দাদন ব্যবসায়ী উল্লেখ করে পারভীন এ অভিযোগ করেন।অভিযোগে পারভীন বেগম জানান, সাইদুর রহমান বেশ কিছু দিন আগে তার স্বামী আব্দুর রাজ্জাককে প্রতি মাসে লাখে ১২ হাজার টাকা সুদে মোট ৮ লাখ টাকা দেন। সেই টাকার সুদ দিতে গিয়ে রাজ্জাক দেউলিয়া হয়ে গোপনে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন। ‘সাইদুর এখন আমার বাড়ি দখল করার জন্য হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন, এ অবস্থায় আমার ২ নাবালক পুত্র সন্তানকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।বলেও অভিযোগ করেন পারভীন।
দলিল ও প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র দেখিয়ে তিনি বলেন, গত ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর রাজ্জাক একই গ্রামে থাকা তার নিজ সম্পত্তির উপর একটি আধাপাকা বাড়ি ও আশপাশের ভিটাসহ মোট ১৯ শতক জমি (দলিল নং-৭৪৮৬, মৌজা- সুন্দরপুর,জেএল-১৩২, এমআরআরঃ সাবেক-৭১, হাল-৮৮, আরএস-১৩৯) তাকে ও তার দুই নাবালক সন্তানকে রেজিষ্ট্রি দলিল মূলে লিখে দেন।স্বামী আব্দুর রাজ্জাকের অনুপস্থিতিতে এমনিতেই দুই সন্তানসহ নিজের ভরন-পোষনের কোন ব্যাবস্থা না থাকায় দূর্বিসহ জীবন-যাপন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে দাদন ব্যবসায়ী সাইদুর এই বাড়িটি এখন নিজের দাবী করে প্রায় প্রতি দিনই তাকে বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। শুধু তাই নয়, সাইদুর তার ভাড়াটে লোক দিয়ে রাতেও বাড়ির দরজায় ধাক্কা দিয়ে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। এতে দুই অবোধ শিশু-কিশোর সন্তানকে নিয়ে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছেন বলেও পারভীন অভিযোগ করেন।এ নিয়ে সরেজমিনে তথ্য অনুসন্ধ্যানে দেখা যায়, পূর্বে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর রাজ্জাক যে সম্পত্তি তার স্ত্রী ও দুই ছেলেকে দলিল মূলে লিখে দেন, ওই একই সম্পত্তি ২ বছর গত ২০১৬ সালে তা সাইদুরকেও লিখে দেন যা আইনত অগ্রাহ্য হবে বলে স্থানীয়রা জানান।একই গ্রামের আলমাস হোসেন, আবুল কালাম, মোকাব্বরসহ এলাকাবাসীদের অনেকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ২ বছর আগে রাজ্জাক তার স্ত্রী ও ২ সন্তানকে জমি লিখে দেন। কিন্তু সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে রাজ্জাক ভয়ে ওই সম্পত্তি সাইদুরকে দলিল করে দিয়ে গোপনে বিদেশ চলে যান। এখন রাজ্জাকের স্ত্রী ও তার ২ নাবালক সন্তানকে বাড়ি ছাড়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে।এ নিয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত সাইদুরের সাথে তার মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের অনৈতিক সুবিধা দেওয়র ইঙ্গিত করে তার কাছে যাওয়ার প্রস্তাব দেন।বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় আমদই ইউপি চেয়ারম্যান শাহানুর আলম সাবু সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ‘ ওই এলাকায় চড়া সুদে অনেকেই দাদন ব্যবসা করছেন যা আমিও অসংখ্য মৌখিক অভিযোগ পেয়েছি, এ কারনে সামজিক অস্থিরতা বাড়ছে। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।
১৪ views