ফেনী প্রতিনিধিঃ- উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দূর্নীতি আর দালালের দখলদারত্বের হাত থেকে রক্ষা পেল এবার ফেনী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস।”পাসপোর্ট ফি ব্যতিত অতিরিক্ত টাকা কাউকে প্রদান করবেন না” “দালাল প্রতারক হতে সাবধান” পাসপোর্ট অফিসের এমন শ্লোগান গুলো বহুদিন পরে বাস্তবে রুপ নিতে শুরু করেছে ফেনী পাসপোর্ট অফিস। জানা যায়,নানান অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নানা উদ্যোগে বহু বদলীকরন সহ জনগুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানটিতে সেবার মান আগের তুলনায় বেড়েছে। বহুদিন পরে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপে দালালবিহীন কাজ করে সহজে সেবা মিলছে।স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, গত কয়েক বছর ধরে ফেনী শহরের মহিপালে সার্কিট হাউজ সড়কের প্রবেশ পথে স্থাপিত আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসটি ভোগান্তি আর অনিয়মের আখড়া হিসেবে পরিচিত ছিল। দালাল ছাড়া মিলতো না কোন ধরনের পাসপোর্ট। টাকার বিনিময়ে জন্মনিবন্ধন জাল করে বানানো হত পাসপোর্ট। উল্লেখ্য, গত বছরের ২১ ও ২৩ অক্টোবর কয়েকটি মিডিয়া,গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এরপর সহকারী পরিচালক মো: মাহবুবুর রহমানসহ একেএকে বদলী করা হয় দুর্নীতির ঘটনায় জড়িত বেশ কয়েকজনকে। সাম্প্রতিক সময়ে জেলা পুলিশের অভিযানে ৭জন দালালকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনার পর অফিসের আশপাশে দালালদের আনাগোনাও কমতে থাকে।সূত্র আরো জানায়, গত বছরের ২১ অক্টোবর সহকারি পরিচালক পদে যোগদান করেন সাধন সাহা। বদলে যেতে থাকে সেবার মান আর অফিসের চিত্র। গত বছরের জুন থেকে চলতি বছরের গতকাল ২১ জুন পর্যন্ত ৪৯ হাজার ৭৯টি আবেদন জমা পড়েছে। ডেলিভারি ৪৭ হাজার ১৭টি পাসপোর্ট। সাধন সাহা যোগদানের পর গত নভেম্বর থেকে ৩৫ হাজার ৯৪টি পাসপোর্টের আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৩৩ হাজার ১শ ৯১টি ডেলিভারি হয়েছে। গতকাল বুধবারও আবেদন জমা হয়েছে ২০২টি। এর বিপরীতে ডেলিভারি ২শ ২৪টি।পরিচালক সাধন সাহা জানান, জনবল কম থাকার কারণে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে, তিনি আরো বলেন, ফেনী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ১৩টি পদ রয়েছে। এর মধ্যে উপ-সহকারি পরিচালক, উচ্চমান সহকারি ও অফিস সহায়ক পদ শুণ্য রয়েছে। শুধু তাই নয়, ফেনী একটি প্রবাসী অধ্যুষিত জেলা। এ কারণে এখানে জনবল সংখ্যা কমপক্ষে ২০ জন হলেও সেবার গতি স্বাভাবিক হবে। জাতীয় পরিচয় না থাকলেও ভিসা-টিকিট থাকলেও জরুরী ভিত্তিতে এমআরপি পাসপোর্ট সেবা দেয়া হয়। অনেকে সাধারণ পাসপোর্টের ক্ষেত্রে তথ্যগত সংশোধন, পাসপোর্ট গোপন কিংবা সঠিক ডকুমেন্ট সম্পর্কে ধারনা না থাকায় হয়রানির শিকার হন। পাসপোর্ট অফিসে আসা ব্যক্তিদের সেবা দিতে তারা আন্তরিকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছেন।