শেখ তোফাজ্জেল হোসেন,খুলনা সিটি প্রতিনিধি,দৈনিক শিরোমণিঃ
ভারত থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসা ৫০জনকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে খুলনার আড়ংঘাটা থানাধিন তেলিগাতী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ক্যাম্পাসে রাখা হয়েছে। দুই দফায় ২১ জন নারীসহ মোট ৫০জনের মধ্যে ২৬জন টিচার্স ট্রেনিং কলেজের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হোষ্টেলে এবং ২৪জন পার্শবর্তি এইচএসটিটিআই এর হোস্টেলে রাখা হয়েছে। কয়েক দফায় করোনা পরীক্ষা শেষে নিয়ম অনুযায়ী দেশে আসার পর সরকারি ভাবে ১৪দিনের কোয়ারেন্টাইন পালন করতে এই প্রতিষ্ঠানে থাকতে হবে তাদেরকে। এদিকে ভারত থেকে আসা কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের থাকা-খাওয়া সহ তদারকির দায়িত্বে থাকা দুই প্রতিষ্ঠানের ১৬জন কর্মচারীর পুর্ব প্রস্তুতি না থাকায় এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ছাড়াই চরম মানুষিক চাপের মধ্যে আছে বলছে সংশ্লিষ্টরা।
দেশের যশোর বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশের পরই আইন শৃংখলা বাহিনীর কঠোর নজরদারীর মধ্যে পুলিশ হেফাজতে প্রথম দফায় রবিবার সন্ধ্যায় ২৬জনকে টিচার্স ট্রেনিং কলেজে এবং দ্বিতীয় দফায় গতকাল সোমবার দুপুরে ২৪জনকে পার্শবর্তি এইচএসটিটিআই এর হোস্টেলে নিয়ে আসা হয়েছে। খুলনা টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রতিষ্ঠানের করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য মোঃ সাহেদুল আলম জানিয়েছেন, খুলনা জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে রবিবার সন্ধ্যায় পুলিশ প্রহরায় ১১জন নারীসহ ২৬জনকে প্রতিষ্ঠানের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হোস্টেলের বিভিন্ন কক্ষে রাখা হয়েছে। সংখ্যা আরো বাড়ার সম্ভাবনা থাকায় প্রতিষ্ঠানের আরো একটি হোস্টেল প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। পূর্ব প্রস্তুতি চাড়াই হঠাৎ করে কোয়ারেন্টাইনের ব্যক্তিদের পরিচর্চার দায়িত্ব দেওয়ায় কর্মচারীরা কিছু মানুষিক চাপে স্বীকার করে তিনি বলেন বিষয়টি বুঝিয়ে তাদেরকে স্বাভাবিক করা হয়েছে।
হোস্টেলের কেয়ারটেকার মোস্তফিজুর রহমান জানায় ভারতে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে আসা চট্টগ্রাম, নোয়াখালি, পিরোজপুর, গোপালগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি জেলা ২৬জন ব্যক্তিকে এখানে রাখা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের দেখাশোনা দায়িত্বে রয়েছে হলের বাবুচী, হেলপার, ঝাড়–দার, নিরাপত্তা প্রহরীসহ মোট ১২জন কর্মচারী । স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বা উপকরণ ছাড়াই হঠাৎ করে এমন পরিস্থিতির জন্য কেহ প্রস্তুত না থাকায় মানুষিক চাপের মধ্যে আছে। কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের থাকা-খাওয়ার দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের সরকারি ভাবে কোন স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী না দেওযা হলেও প্রতিষ্টানের পক্ষ থেকে মাক্রা ও হ্যান্ড স্যানিটেজার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষনিকভাবে নিরাপত্তা গার্ড এবং দুইজন করে পুলিশ ডিউটি করছে। তিনি বলেন কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের গতকাল সোমবার থেকে ডাইনিং এ খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। থাকা ফ্রি হলেও শুধুমাত্র খাওয়া নিজেদের খরচে করতে হচ্ছে।
এদিকে গতকাল সোমবার দুপুরে পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যে দ্বিতীয় দফায় আরো ২৪জনকে ক্যাম্পাসের মধ্যে পাশ^বর্তি এইচএসটিটিআই’র হোস্টেলে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানে পরিচালক ড. আতিকুল ইসলাম পাঠান জানিয়েছেন, সোমবার দুপুরে ১০জন নারীসহ ২৪জনকে হোস্টেলে নিয়ে আসা হয়েছে। এদেরকে ১৬টি কক্ষে রাখা হয়েছে এবং দেখা শোনার জন্য প্রতিষ্টানের ৪জন কর্মচারী কাজ করছে। হোস্টেলের প্রধান ফটকে দুজন পুলিশ সার্বক্ষিনিক দায়িত্ব পালন করছে। প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী হিসাবে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মাক্রা ও হ্যান্ড স্যানিটেজার দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ভারতীয় করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের টিচার্স ট্রেনিং কলেজে আনা হয়েছে বলে এমন একটি গুঞ্জন বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। প্রধান ফটকে কোন ধরণের নির্দেশনা না থাকায় সাধারণ মানুষের মাঝে একটি মহল এ গুজব ছড়ায় বলে জানাগেছে। পরে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ বিষয়টি পরিষ্কার করে জানায় বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার যে সকল নাগরীক ভারতে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে এসেছে তাদেরকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন পালনের জন্য এই প্রতিষ্ঠানে কঠোর নজরদারীর মধ্যেন রাখা হয়েছে।