নাজমুল হোসেন, রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধিঃ রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের নদীর তীরবর্তী মুন্সির বাজার এলাকার কাওয়াল জানি চর এলাকায় আশংকা জনক ভাবে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
একদিনে ৬০ বর্গফুট কৃষি জমি পদ্মার বুকে বিলীন হয়ে গিয়েছে। এই আতঙ্কে এলাকার হাজারো মানুষ
রবিবার ৬ অক্টোবর দুপুরে সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আতঙ্কে শত শত পরিবার নদীর পাড়ে এসে ভিড় জমিয়েছে। এখানে যারা বসবাস করে তাদের অধিকাংশ কয়েক ভাঙ্গা দিয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছিল। অনেকেই ছিল বড় গৃহস্থ মাঠে শত শত বিঘা জমি গোয়ালে গরু আর গোলা ভরা ধান। তাদের কাজ সেগুলো শুধুই স্মৃতি ৪/৫ ভাঙ্গনে এখন অন্যের জমি চাষ করে খায় ।
সেখানে কথা হয় ৬০ উর্দ্ধ বৃদ্ধা ছোনেকা বেগমের সাথে তিনি বলেন, আমরা এ পর্যন্ত ছয় ভাঙ্গনের শিকার হয়েছি এখন কোথায় যাব যাওনের জায়গা নাই। এই বয়সে অনেক কিছু দেখলাম। কতবার ভাঙলাম আর এইসব ভালো লাগে না। বাবারে বুড়া হয়ে গেছি সব কিছু হারিয়ে এখন অসহায় হয়ে পড়েছি আগে সব কিছু ছিল। বড় বড় গৃহস্থলী ছিল এখন আর কিছুই নাই। চোখের সামনে এগুলো আর সহ্য হয় না।
এ সময় দেখা যায় বৃদ্ধা আজিজ সর্দার কয়েকজন মানুষ নিয়ে তার ঘরবাড়ি ভাঙছে। তিনি বলেন আর ২ কাঠা ভাঙলেই আমার ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। সারারাত দু চোখে ঘুম নেই। প্রায় সময় জেগে থাকি এই বুঝি নদীতে ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়ে যায়। গত চার দিন ধরে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে গতকাল রাতে সব থেকে বেশি ভেঙেছে
ভাঙতে ভাঙতে এখন আর যাওয়ার জায়গা নাই।
এক আত্মীয়র একটু জায়গা আছে কলেজের কাছে সেখানে যাচ্ছি। এক রাতেই খালেক ব্যাপারীর ১০ কাঠা অর্থাৎ ষাট ফুট ফসলি জমি পদ্মার বুকে হারিয়ে গেছে। তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। হয়তো রাতেই তার পুরো জমি নদীর বুকে হারিয়ে যাবে। কখনো থেকে থেকে ভাঙছে তার জমি তিনি বলেন সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে মিনতি তারা যেন ব্যবস্থা নেয়। তা না হলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যাব আরো অসংখ্য চোখ তাকিয়ে আছে একটু সাহায্যের জন্য।
দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে উপজেলা থেকে একটি প্রতিবেদন চেয়েছে এ ব্যাপারে। আগামীকাল সকালে সেটা জমা দিব। দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙ্গন চলছে দীর্ঘ মেয়াদী প্রকল্প গ্রহণ না করলে মানচিত্র থেকে এই এলাকা হারিয়ে যাবে। গোয়ালন্দ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, নদী ভাঙ্গনের সংবাদ পেয়ে আমি সেখানে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম ৪টি বাড়ি
ও কিছু ফসলি জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙ্গন প্রতিরোধে ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার চেয়ারম্যানের কাছে প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।