নিজস্ব প্রতিবেদক
নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক ধর্ষণ-নিপীড়নের বিচার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে বের করা ছাত্র ইউনিয়নের কালোপতাকা মিছিলে পুলিশি বাধায় পণ্ড হয়েছে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে সাতজন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
ছাত্র ইউনিয়নের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ‘ধর্ষণের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ ব্যানারে মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী, লেখক, কবি, শিল্পী, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও নারী অধিকারকর্মীরাও তাতে যোগ দেন।
বিক্ষোভ শেষে কালোপতাকা মিছিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের দিকে যাত্রা করলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও ধস্তাধস্তি হয়। এতে সংগঠনটির সাত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ। তার ভাষ্যমতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের শিক্ষা ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আসমানি আশা, লালবাগ থানা শাখার দপ্তর সম্পাদক মাহমুদা দিপা, মোহাম্মদপুর থানার সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসাইন শুভসহ তাদের সাত নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহত আশা ও মাহমুদা দিপাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশি বাধার প্রতিবাদে আজ সন্ধ্যায় মশাল মিছিল করার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটির সভাপতি মেহেদি হাসান নোবেল।
পুলিশি বাধার পেয়ে তাৎক্ষণিক বক্তব্যে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় বলেন, পুলিশ সাধারণ মানুষ, ছাত্রদের সঙ্গে পারলেও যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতাদের গ্রেপ্তার করতে পারে না। তখন তাদের লাঠির জোর কমে যায়। কারণ অধিকাংশই চাকরি পেয়েছে আওয়ামী লীগের বদৌলতে।
মিছিলে ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি লিটন নন্দী, বর্তমান সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল, ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি সাধারণ সম্পাদক রাগিব নাইম, ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক জওহরলাল রায় উপস্থিত ছিলেন।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের খালপাড় এলাকায় ওই গৃহবধূর বসতঘরে ঢুকে তার স্বামীকে পাশের কক্ষে বেঁধে রাখেন স্থানীয় বাদল ও তার সহযোগীরা। এরপর গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তারা। গৃহবধূ বাধা দিলে তাকে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে মোবাইলে ভিডিওচিত্র ধারণ করা হয়।
ওই ভিডিওচিত্র ফেসবুকে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ওই গৃহবধূকে কুপ্রস্তাব দেয়া হয়। এতে রাজি না হওয়ায় পরে সেটি ফেসবুকে ছড়িয়ে দিলে তা ভাইরাল হয়ে যায়। এ ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। সোমবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ওই ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবিতে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন ছাত্র-জনতা। ঢাকার শাহবাগ ও উত্তরায় দিনভর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
এম এ হালিম
সম্পাদক:সাহিদুর রহমান
অফিস:২৭/১১/২, তোপখানা রোড, পল্টন মোড়,ঢাকা -১০০০।
ফোন: ০১৯১১- ৭৩৫৫৩৩ ই- মেইল : [email protected], [email protected]