সুনান বিন মাহাবুব, পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি :বাংলাদেশের আনাচে কানাচে অযত্নে অবহেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে মোঘল আমলের মুসলিম ঐতিহ্যের বিভিন্ন প্রাচীন নিদর্শন। মুন্সি আমিরুল্লাহ জামে মসজিদ নামে পটুয়াখালী জেলার দশমিনা উপজেলায় এরকম একটি পুরাকীর্তি অবস্থিত। এই স্থাপত্বটি আনুমানিক ৫০০ বছরের পুরনো মোঘল আমলের নির্মিত। তবে বর্তমানে সংস্কারের অভাবে মসজিদটির সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য হারাতে বসেছে।
স্থানীয় সুত্রে থেকে জানা যায়, পটুয়াখালী জেলায় দশমিনা উপজেলার বহরমপুর ইউনিয়নের দক্ষিন আদমপুর গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মুন্সি বাড়িতে মুন্সি আমিরুল্লাহ এই মসজিদটি তৈরী করেন, যা প্রত্বতত্ত্ব স্থাপত্য শিল্পের এক অপরূপ সৌন্দর্যের দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। মুন্সি আমিরুল্লাহর সপ্তম বংশধরদের আর্থিক অভাব অনটনের কারনে রক্ষনাবেক্ষন না হওয়ায় মসজিদের সৌন্দর্য দিন দিন কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে। চুন-সুরকী দিয়ে নির্মিত মসজিদটির মুল ভবন চারপাশে ২০০ বর্গফুট বিশিষ্ট। উচ্চতা প্রায় ৪০ ফুট। এটি এক গম্বুজ বিশিষ্ট একতলা মসজিদ। মসজিদের ভেতরে ২০ থেকে ৩০ জন মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। পরিচর্যার অভাবে মসজিদের বাহিরের আস্তর নষ্ট হয়ে অধিকাংশ জায়গা থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। বৃষ্টির পানিতে মসজিদের দেয়ালে শেওলা জমে বিবর্ন হয়ে গেছে মসজিদের সৌন্দর্য। মসজিদের ভেতরের দিকে রয়েছে বিভিন্ন কারুকার্যখচিত মুসলিম স্থাপত্যের প্রাচীনতম নিদর্শন। মসজিদ-সংলগ্ন একটি বড় দিঘি রয়েছে। মুসল্লিরা এখানে ওজু ও গোসল করেন।
আমিরউল্লাহ মুন্সির সপ্তম বংশধর শাহ আলম মুন্সি জানিয়েছেন, “অনেকবার খুলনা থেকে প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর সহ বিভিন্ন সংস্থার মানুষ মসজিদটি পরিদর্শন করেছেন, মাপামাপি করছেন, ছবি তুলেছেন চলে গেছেন আর কোন খবর বার্তা পাই নাই। কেউই এটি সংস্কার বা রক্ষনা বেক্ষনের দ্বায়িত্ব নেয়নি, নিজেদের উদ্যোগে আমরা রক্ষনা বেক্ষন করি। স্থানীয় এলাকাবাসীরা মনে করেন প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তর উদ্যোগ নিলে এটি হতে পারে একটি দর্শনীয় স্থান”
দশমিনা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন বলেন, মসজিদটি দ্রুত সংস্কার করলে মসজিদটি আরো দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। বাংলাদেশে মুসলিম শাসনের ইতিহাস-ঐতিহ্য, ইসলামি স্থাপত্যশিল্প হিসেবে টিকে থাকবে বহুদিন।