নওগাঁ জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ভুট্টা চাষে অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় অল্প খরচে যথাসময়ে কৃষকরা এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ৬ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। উপজেলা ভিত্তিক ভুট্টা চাষের পরিমাণ হলো ,সদর উপজেলায় ১৯০ হেক্টর, মান্দায় ৭০০ হেক্টর, রানীনগরে ৭৩০ হেক্টর, আত্রাইয়ে ৩ হাজার ৮০০ হেক্টর, বদলগাছীতে ১৩০ হেক্টর, মহাদেবপুরে ২৯০ হেক্টর, পত্নীতলায় ৬০ হেক্টর, ধামইরহাটে ৩২০ হেক্টর, সাপাহারে ৫০ হেক্টর, পোরশায় ১০ হেক্টর ও নিয়ামতপুরে ৩০ হেক্টর।
জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, বীজ, সেচ, সার ও কীটনাশক এবং পরিচর্যা বাবদ খরচ হয় ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা। প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৩৫ থেকে ৪০ মণ। প্রতি মণের বর্তমান বাজার মূল্য ৮শ থেকে ১১শ টাকা। এতে অল্প পুঁজিতে প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ২৩ হাজার টাকা লাভ হয়।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গিয়েছে, কৃষকের বিস্তির্ণ ফসলের মাঠে এখন ভুট্টা ক্ষেতগুলোর পরিচর্যা ও নিড়ানী এবং সেচ কাজসহ নানা কাজে ব্যস্ত চাষীরা। গাছগুলো হাঁটু সমান আর অঞ্চলভেদে কিছু এলাকায় আগাম ভুট্টা রোপণ করায় গাছ মানুষের উচ্চতাকে ছাড়িয়ে গেছে এবং কোথাও কোথাও গাছে মোচা এসেছে। এসব ভূট্টা আগাম ঘরে তোলা যাবে।
জেলার বদলগাছী উপজেলার আধাইপুর ইউপির বিষ্ণুপুর গ্রামের হাছান আলী বলেন, বোরো চাষে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি অথচ যখন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয় তখন ধানের বাজারে ধস নামে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচই উঠে না। কিন্তু ভুট্টার উৎপাদন খরচ যেমন কম, দামও বেশি থাকে বলেই আমি ভুট্টা চাষ করেছি ।
উপাজেলার কাষ্টগাড়ী গ্রামের চাষী শাহ্ আলম জানায়, আমি ৬০ শতাংশ জমিতে ভূট্টা চাষ করেছি। ভূট্টার পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে আলু চাষ করেছি। কয়েক দিনের মধ্যে আলু তোলা শুরু করবো। আশা করছি ভূট্টার ফলনও সন্তোষজনক হবে।
সাগরপুর গ্রামের আব্দুল হাকিম বলেন, চার বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষে খরচ ও পরিশ্রম কম। দামও ভালো পাওয়া যায়। একটু দেরীতে বিক্রি করলে মণে ২-৩শ টাকা বেশি পাওয়া যায়।
নওগাঁর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, জেলায় এবার ৬ হাজার ৭৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮০ হাজার মেট্টিকটন। ইতিমধ্যে ৬ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। মঠের কিছু জমিতে এখনো আলু রয়েছে। আলু তোলা হয়ে গেলে সেই জমিগুলোতেও ভুট্টা রোপন করা হবে। ফলে আমরা আশা করছি আমাদের লক্ষ্য মাত্রার থেকে বেশি জমিতে ভট্টার চাষ হবে। ভালো ফলন পেতে মাঠ পর্যায়ে আমাদের উপ সহকারী কৃষি আফিসার সর্বক্ষণিক কৃষিকদের পাশে থেকে তাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।