রাশেদুজ্জামান,নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃনওগাঁর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক লুমার বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলা ও সাংবাদিক লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে গেলে সাংবাকিদের কটুক্তি করেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধূরী। এর পরপরই সাংবাদিকরা ডা. জাহিদ নজরুলের অপসারণ দাবি করেন।শুক্রবার বিকেলে ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাবে সাংবাদিক লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটে। পরদিন শনিবার বেলা ১২টার দিকে তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল সঙ্গে তার অফিসে জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন সাংগঠনিকভাবে দেখা করে। এসময় সাংবাদিকদের নিয়ে কটুক্তি করেন তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল।লাঞ্ছিতের শিকার হওয়া ওই সাংবাদিকের নাম মেহেদী হাসান অন্তর। তিনি মুভি বাংলা টিভি ও দৈনিক চিত্র পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি।সাংবাদিকরা বলছেন, দৈনিক আজকের প্রভাত ও দেশ আজকাল প্রত্রিকা নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি সুজন রানা। হঠাৎ করে তিনি শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বুকে ব্যথা অনুভব করেন। একই সঙ্গে বমিও করছিলেন তিনি। তাকে উদ্ধার করে নওগাঁর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেন সাংবাদিক অন্তর। ওই সময় জরুরি বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন ডা. লুমা। সুজনকে হাসপাতালে নেয়ার পরেও চিকিৎসক লুমা তাকে দেখছিলেন না। এমনকি আরও চার থেকে পাঁচজন রোগী গুরুতর অসুস্থ ছিলেন। তারাও লুমার অপেক্ষার ছিলেন। অথচ চিকিৎসক লুমা নিজ রুমে গল্পে মশগুল হয়ে ছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন ওষুধ কোম্পানি কিছু লোকজন। ওই সময় অন্তর চিকিৎসক লুমাকে ডাকতে যান। তাকে অনুরোধ করেন রোগী দেখার জন্য। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন লুমা। লুমার সঙ্গে শুরু হয় অন্তরের বাকবিতণ্ডা। এরই এক পর্যায়ে লুমার হুকুমে ওষুধ কোম্পানির লোকজন অন্তরকে মারধর করেন।সাংবাদিক মেহেদী হাসান অন্তর বলেন, ‘এসব ঘটনার পরও আমার সহকর্মী সুজন রানাকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ডা. লুমাকে অনুরোধ করি। কিন্তু তিনি চিকিৎসা দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে হাসপাতাল থেকে চলে আসি। পরে জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আজাদ হোসেন মুরাদকে অবগত করা হলে তিনি হাসপাতালে যেতে বলেন। ওইদিন রাত ১০ টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে আমি ও সহকর্মী সুজন রানা ভর্তি হলে সঠিক চিকিৎসা পাওয়া যায়নি। নিরাপত্তাহীনতার কারণে শনিবার দুপুরে হাসপাতাল থেকে দু’জনেই বাসায় চলে আসি।’এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে ডা. লুমার সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।এদিকে, শনিবার দুপুরে সাংবাদিক অন্তর ও চিকিৎসক লুমার বিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধূরীর সঙ্গে জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন সাংগঠনিকভাবে দেখা করে। তবে ওই সময় সাংবাদিকদের কটুক্তি করেন ডা. জাহিদ। শুধু তাই নয়, সাংবাদিকদের হুমকিও দেন এই জাহিদ।ওই সময় সাংকাদিকদের উদ্দেশ্য করে ডা. জাহিদ বলেন, ‘আমি আমার মতো এগোবো। আপনারা আপনার মতো এগোবেন। আপনারা যা পারেন করেন।’জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন নওগাঁর সাধারণ সম্পাদক এসএম আজাদ হোসেন মুরাদ বলেন, ‘সাংগঠনিক ভাবে আমরা তত্ত্বাবধায়কের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে সারাদেশের সাংবাদিকদের নিয়ে কটুক্তি করেন। ঘটনার পর তার (তত্ত্বাবধায়ক) অপসারণ, হাসপাতাল চত্বর দালালমুক্ত করে সুচিকিৎসার ব্যবস্থাসহ সাংবাদিক লাঞ্ছিতের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শান্তির দাবিতে রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) মানববন্ধন ও প্রতিবাদের আহ্বান করা হয়েছে।’নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, একটি অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।